07 January 2018

শিমু হত্যা মামলায় যা বললেন মামলার আসামী সিলেটের জাকি

সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটের মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত শিমু হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার আসামি সিলেট মদন মোহন কলেজ ছাত্রদল নেতা দেওয়ান জাকি চৌধুরী। শিমুর মামা তারেক আহমদ লস্কর ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৬/৭ জনকে আসামি করে গত বুধবার রাতে কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলাটি দায়ের হওয়ার পর সেই মামলায় নিজেকে আসামি দেখে শুক্রবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শিমু হত্যাকাণ্ড ও নিজের অবস্থান নিয়ে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন ছাত্রদল নেতা দেওয়ান জাকি চৌধুরী।

পাঠকদের জন্য দেওয়ান জাকি চৌধুরীর স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হচ্ছে-

শিমুর মামা তারেক মামা, পুলিশ বাহীনির সকল বিভাগের ভাইদের এবং সাংবাদিক ভাইদের কাছে আমার আকুল আবেদন।

আবুল হাসনাত শিমু আমার নিজের ভাই এর মত ছিল। আজ সে নেই ভাবতে মনটা কাঁদে আর আমার মরতে ইচ্ছা করে। যখন শুনেছি আমাকেও নাকি শিমু হত্যা মামলায় জড়ানোনুর চেষ্টা করা হচ্ছে রাজনীতির ফায়দা নেওয়ার জন্য। আসলে আমার ও শিমুর সম্পর্ক কি ছিল তারা কি জানে। সেই স্কুল জীবন থেকে আমার নিজের ছোট ভাইর ঘনিষ্ট বন্ধু হিসাবে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক করে উঠে। শিমুকে আমি রাজনীতিক ভাই নয়, নিজের ছোট ভাইর মত দেখতাম আর ষড়যন্ত্রকারীরা এই কি করতেছে ভাবলেই মরতে ইচ্ছা করে?

আমি ছাত্রদলের রাজনীতি বাদ দিয়েছি অনেক আগে যুবদল নিয়ে আছি। ঈদগাহের জুয়েল ভাই মারা যাবার পর শিমু ও তার পুরাতন সকল বন্ধু রাজনীতি বাদ দিয়ে সবাই পারিবার নিয়ে আছে। তখন শিমু রাজনীতি না করায় কিছু দুষ্ট লোক তার উপর একের পর এক মিথ্যা মামলা দিতে থাকে। আমি যখন মিথ্যা মামলায় জেলে ছিলাম তখন শিমু আমার সাথে রাজনীতি, মিথ্যা মামলা, পারিবারিক সব কিছু কথা বলতে বলতে সময় কেটে যেত। আমি তখন তাকে বলেছিলাম আমি জেল থেকে বেড় হয়ে তর মামলা দেখার চেষ্টা করব। তুই যেভাবে ব্যবসা কররে ভালো, রাজনীতিতে আর আসবি না, রাজনীতি খুব খারাপ। সেই দিন থেকে তাকে আর রাজনীতিতে দেখিনাই আর এই কাজটা করতে পেরেছে তার জীবন সঙ্গী (স্ত্রী ) ছোট বোনটা অনেক কষ্ট করে তাকে রাজনীতি থেকে ফিরিয়ে পরিবারিক জীবনে এনেছে।

আমি তার একটা মামলা শেষ করে ছিলাম বাকি গুলো তার স্ত্রী অনেক কষ্ট করে শেষ করেছিল। শিমুর এই দিনে এখন যারা মায়া কান্না করছেন তারা কই ছিলেন? সেদিন শিমু প্রোগ্রামে এসেই আমাকে বলে ভাই ভালানি, আমি তাকে বলি ভাল। তুই এত দিন পর প্রোগ্রামে? না ভাই এমনে আইছি। তারপর রেজিষ্ট্রারী মাঠে সিনিয়রদের বক্তব্য শেষে র্যা লি শুরু হয়। আমিসহ সিনিয়র (সাফেক ভাই, হিরু ভাই, শুয়েব ভাই, লিটন ভাই আর কয়জন) সবাই ব্যান্যারে অনেক আগে এগিয়ে যাই হঠাৎ কোর্ট পয়েন্টর সামনে জুনিয়রদের কিছু হাতাহাতি তেমন বড় মারামারি নয়। তখন শিমু পিছন থেকে এসে হাতাহাতি বন্ধ করার চেষ্টা করছে তখন হঠাৎ কে তাকে ছুড়ি মেরে যাচ্ছে তখন বোবা জেহিন আঙ্গুল দিয়ে সবাইকে ঔ ছেলেকে দেখাচ্ছে কিন্তু সে জেহিন বোবা থাকায় এবং শিমুকে নিয়ে ব্যাস্ত থাকায় কেউ আর বুঝতে পারেন নি।

ভিডিও ফুটেজে দেখার জন্য অনুরোধ করছি সাথে আমার অবস্থান ও মারামারির অবস্থান কোথায়। তারপর সাথে সাথে আমি সিনিয়র কয়জনকে নিয়ে ওসমানী হাসপাতালে চলে যাই। আজ যদি শিমু জীবিত থাকত তাহলে আমার এই লেখা বা রাজনীতি ষড়যন্ত্র বা রাজনীতি ফায়দা হাসিলের মামলায় ঢুকানোর চেষ্টা হত না। আমি কিছু বুঝিনা আমাদের বিএনপির ও আমাদের গ্রুপের সকল সিনিয় ভাইরা জানেন যাদের উপর মামলা হয়েছে তারা শিমুর খুনি না তবুও তারা কেন চুপ? আমার পরিচিত ও পারিবারিক সাংবাদিক, রাজনীতিক, পুলিশ, ডি বি, RAB, সবাই এই ভিডিও ফুটেজ এবং আমার অবস্থান দেখে আপনারা সবাই সহযোগিতা করুন আমাকে।

আমি আপনাদের (কসম করা ঠিক না কিন্তু শিমুর খুনির জন্য কসম করতে হচ্ছে) আল্লাহর কোরান শরিফের কসম খেয়ে বলতে পারি আমি শিমুর হত্যার কিছুই জানি না বা জড়িত না। আপনারা সবাই আমাকে সহায্য করুন। মনে রাখবেন শিমুর মত আমারও একটি মেয়ে আছে। আমি আমার ছোট শোনামনির কসম খেয়ে বলছি শিমু হত্যা কিছু আমি জানি না না না। (সবাই আমাকে ক্ষমা করবেন কসম করার জন্য তবুও শিমুর আসল খুনি বেড়িয়ে আসুক এবং তার ফাঁসি হউক)। আল্লাহ ছোট ভাই শিমুকে বেহেস্ত দান করুন আমিন।

বি:দ্র: তারেক মামা ও পুলিশ ভাই আমার লেখাটা পড়ে চিন্তা করুন ও আমাকে ফাসানোর হাত থেকে রক্ষা করুন। ধন্যবাদ।


শেয়ার করুন

0 facebook: