আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা কেসিএনএ বলেছে, দুই কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক, সফর বিনিময় ও সহযোগিতা এতটা
বাড়াতে হবে যাতে দু’দেশকে আবার একত্রীকরণ করা যায়। দুই কোরিয়াকে আবার এক দেশে পরিণত করার জন্য চেষ্টা চালাতে সব কোরিয়াবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। কেসিএনএ গতকাল বৃহস্পতিবার
সকালে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই অভূতপূর্ব আহ্বান জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোরীয় উপদ্বীপের
পুনরেকত্রীকরণের পথে বিরাজমান সব বাধা ‘ধ্বংস’
করে ফেলবে উত্তর কোরিয়া। বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দেশটির সুসম্পর্কের
পথে সামরিক উত্তেজনাকে ‘প্রধান বাধা’ বলে অভিহিত করা হয়। ‘বহিঃশক্তির’ সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়াও দুই কোরিয়ার সম্পর্কের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা হয়ে
দাঁড়িয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। এসব বাধা দূর করতে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সব
কোরিয়াবাসীকে আহ্বান জানিয়েছে কেসিএনএ।
এই বার্তা সংস্থার
মন্তব্যধর্মী প্রতিবেদন ও বিবৃতিকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় অবস্থান বলে মনে করা
হয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় আসন্ন শীতকালীন অলিম্পিকে দুই
কোরিয়া একক পতাকাতলে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে এ
আহ্বান জানানো হলো। সম্প্রতি দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী পানমুনজম গ্রামে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দু’দেশের কর্মকর্তারা ওই
সিদ্ধান্ত নেন।
দুই কোরিয়ার ‘একক পতাকা’ হচ্ছে একটি অনানুষ্ঠানিক
পতাকা যা দুই দেশের মধ্যে কোনো ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সময় তাদের সমর্থকরা প্রদর্শন
করে থাকেন। ১৯৯১ সালে জাপানে অনুষ্ঠিত
বিশ্ব টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় দুই কোরিয়া মিলে একটি একক টিম পাঠানোর সিদ্ধান্ত
নিলে প্রথমবারের মতো গ্যালারিতে এই পতাকা প্রদর্শিত হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাং শহরে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি শীতকালীন অলিম্পিক শুরু
হবে এবং তা চলবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এক পতাকার নিচে দুই কোরিয়া আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায়ের জন্য ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ বৈরিতা ভুলে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া আগামী মাস থেকে শুরু হতে যাওয়া
শীতকালীন অলিম্পিকে একসঙ্গে এক পতাকার নিচে শামিল হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
অলিম্পিকে অংশ নিতে কয়েকশ
লোকের একটি প্রতিনিধিদল উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে যাবে। দলে থাকবেন ২৩০ জন
চিয়ারলিডার, ১৪০ জন অর্কেস্ট্রা বাদক ও ৩০ জন তায়কোয়ান্দো অ্যাথলেট। দলের সদস্যরা কোরীয়
সীমান্ত অতিক্রমের অনুমতি পেয়েছেন। গত দুই বছরের বেশি সময় পর এই প্রথম আন্তসীমান্ত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়েছে।
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া
যৌথভাবে তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইভেন্ট আইস হকি বা বরফের ওপরে হকি খেলার ইভেন্টে
অংশ নেবে। আগামী ৯ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি
পর্যন্ত অলিম্পিকের এই আসর দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত হবে। তবে এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর
জন্য কালক্ষেপণ করছে কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ। যদিও উত্তর ও দক্ষিণের সহযোগিতামূলক এই অভিনব সম্পর্ককে স্বাগত জানিয়েছেন
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাঙ কিইয়ুঙ-ওয়াহ। তিনি বলেছেন, ‘সব মিলিয়ে এটি একটি ইতিবাচক প্রতিযোগিতা। আমি মনে করি, এই আয়োজনের প্রতিটি বিষয়ই
অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে আমাদের সম্পন্ন করতে হবে।’
ক্যাঙ কিইয়ুঙ-ওয়াহ আরো
বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, সবকিছু আমরা চমৎকারভাবে সামলে নেব। এটি খেলার জন্য ইতিবাচক হবে,
দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য ইতিবাচক হবে এবং আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায়ের জন্যও এটি ইতিবাচক বার্তা দেবে।’
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: