07 January 2018

DIG মিজানুরের স্ত্রী ইকোর দাবী, আমি কি বিচার পাবো? সম্পূর্ণ ঘটনার রোমহর্ষক কাহিনী! (ভিডিও সহ)


স্টাফ রিপোর্টারঃ বিগত সংবাদে আমরা পাঠকদের জানিয়েছিলাম যে, মরিয়ম আক্তার ইকো ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তাকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করাসহ পুরো ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি এক সাংবাদিককে প্রায় দেড় ঘণ্টার ভিডিও রেকর্ড সাক্ষাৎকার দিয়েছেনযা ওই সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকের কাছে মওজুদ আছে

তিনি বলেন, ‘৩০(০৮)১৭নং মামলায় আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয় মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না১৪ জুলাই পান্থপথের বাসা থেকে আমাকে তুলে নিয়ে প্রথমে আমাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আমার স্বতিত্ব নষ্ট করেন পরে ১৭ জুলাই আমার মাকে এবং আমাকে অস্ত্রের মুখে রেখে বিয়ে করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমানতবে বিয়েটা হয়েছিল খুব নোংরাভাবে৫০ লাখ টাকার কাবিনে বিয়ের উকিল হিসেবে ছিলেন তার ড্রাইভার গিয়াস উদ্দিন এবং সাক্ষী রাখা হয় জাহাঙ্গীর নামে এক কনস্টেবলকেজাহাঙ্গীর সম্ভবত তার বডিগার্ড বা গৃহকর্মীবিয়ের আগে বিভিন্ন সময় আমার স্বামী (অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজান) বলতেন, তার প্রথম স্ত্রী খুব অসুস্থসে দেশে থাকে না, কানাডায় থাকেতার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছেএসব বলে আমাকে দুর্বল করার চেষ্টা করতেন


নিজের পরিচয় জানতে চাইলে ইকো বলেন, ‘আমি একটি ব্যাংকে চাকরি করতামনিজের সমস্যার কারণে চাকরিটা ছেড়ে দিইকিছুদিন একটি বেসরকারি চ্যানেলেও ট্রাই করেছিপাশাপাশি আবারও প্রাইভেট কোনো ব্যাংকে যোগদান করতে পারি কিনা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলামঅতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমানের সঙ্গে কিভাবে পরিচয় হয়েছে জানতে চাইলে ইকো বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় থাকা আমার এক বান্ধবীর মাধ্যমে জব প্রসেসকারী একটি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চাইওই মেয়েবন্ধু বলেছিল, গুলশান নিকুঞ্জে একজন আপা আছে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমার একটা চাকরির ব্যবস্থা হতে পারেএরপর একদিন নিকুঞ্জের ওই আপাকে ফোন করে তার সঙ্গে দেখা করিচাকরির বিষয়ে কথাবার্তা বলার একপর্যায়ে ওই আপা বলেন, আমি আপনাকে একজনের সঙ্গে পরিচয় করে দিচ্ছি, তার চ্যানেল অনেক হাই লেবেলেও আছে কথা বলেই ওই আপা ডিআইজি মিজানের নাম্বারে কথা বলে আমাকেও কথা বলার জন্য আমার হাতে উনার ফোন ধরিয়ে দেনতখন তিনি (মিজান) বলেন, আপনি এখান (নিকুঞ্জ) থেকে চলে যানআমিই আপনাকে ফোন করবএরপর তেজগাঁও চ্যানেল আই অফিসের কাছাকাছি যাওয়া মাত্র ডিআইজি মিজান আমাকে ভাইবারে ভিডিও কল করেনপ্রথম কথার পর তার ভিডিও কলে আমি বিব্রত হই

বিষয়ে মরিয়ম বলেন, ‘এই কথা বলার ২০-২৫ দিন পর তিনি (ডিআইজি মিজান) হয়তো সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেনসেখান থেকে আমাকে ফোন করে তার ব্যক্তিগত কিছু বিষয় বলার আগ্রহ প্রকাশ করেনব্যক্তিগত বলতে কোন ধরনের কথা বলার আগ্রহ দেখান জানতে চাইলে ইকো বলেন, ‘বলতেন তিনি তার লাইফ নিয়ে খুব ঝামেলায় আছেনতার এখানে কেউ থাকে নাসহধর্মিণী বাইরে থাকেএসব আর কি...। তো আমি তাকে বললাম, তাহলে পরিবারের সঙ্গে স্যাটেল্ড হয়ে যানওই সময় আমি তো জানতামই না যে তিনি পুলিশে কোন পর্যায়ে আছেনআমার জানার বিষয়ও নাতিনি হয়তো সেকেন্ড ম্যারেজের চিন্তা করছিলেনআর এসব বিষয় নিয়ে আমার তেমন আগ্রহও ছিল নাকারণ আমার তো তখন বিয়েও হয়নিএসব কারণে আমি উনাকে এড়িয়ে চলেছি

এরপর অনেকদিন কথাবার্তাও হয়নিএর মধ্যে কানাডা প্রবাসী এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ের কথাবার্তা চলছিলজুলাই মাসের - তারিখে ছেলের পরিবারের সদস্যরা আমাকে দেখেও যায়ছেলে যেহেতু দেশে ছিল না তাই দুই পরিবারের সদস্যরা বললেন, ছেলেমেয়ে দুজনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলুকতারপর দেখা যাক কী হয় অবস্থার মধ্যে পারিবারিকভাবে দেখা সেই ছেলে আমাকে ফোন করতইকো বলেন, ‘বাই দিস টাইম আমার নম্বর তিনি (ডিআইজি মিজান) যে ট্র্যাক করছেন তা তো আমার জানা ছিল নাএকটা পর্যায়ে এসে আমার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগও নাইঅথচ মোবাইল ট্র্যাক তিনি কনটিনিউ করছেনআমি যার সঙ্গে কথা বলতাম তার নম্বরই ট্র্যাক করেছেন তিনিফোন ট্র্যাক করে আমার বাসা, আত্মীয় স্বজন কে কোথায় আছেন সব বের করে ফেলেনআমি কোন বাড়িতে থাকি, ফ্ল্যাট নম্বর কত, গার্ডের নাম কি- সব বলে দিচ্ছেন

প্রসঙ্গে ইকো বলেন, ‘আমাকে নিয়ে তার কোনো উদ্দেশ্য ছিল কিনা ওই সময় পর্যন্ত আমি জানতাম নাকিন্তু আমি তার ফোন রেসপনস না করায় এক ধরনের ক্ষোভ তৈরি হয়পরে বুঝতে পারি যে ডিআইজি মিজানকে কেন ইগনোর করা হলো, ইত্যাদিমরিয়ম বলেন, ‘আমি তখনও জানতাম না তিনি ডিআইজি (অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার)। আমি ডিআইজি মিনিংটাও বুঝতাম না বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে মরিয়ম বলেন, ‘ অবস্থা চলাকালীন মিজানের এক বন্ধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন গাজী শামিম হাসান আমাকে একদিন ফোন করে বলেন, মিজান আপনাকে পছন্দ করে

কিভাবে ডিআইজি মিজান আপনাকে তুলে নিয়ে যায় জানতে চাইলে ইকো বলেন, ‘ওইদিন ১৪ জুলাই, সম্ভবত শুক্রবার ছিলপান্থপথে আমার বাসার সামনে এসে ডিআইজি মিজান ফোন করে বলেন, আমি আপনার বাসার সামনেআমি অনেক বেয়াদবি করে ফেলেছিনিচে নামেন, আমি আপনার কাছে সরি বলতে চাইআমি বললাম, না না সরি বলার কী আছেআপনি চলে যানআমার বাসায় কেউ নেই, আমি বাহির হতে পারব না

ডিআইজি মিজানুর রহমান বেয়াদবি বললেন কেন জানতে চাইলে ইকো বলেন, ‘তিনি আমাকে অনেক ডিস্টার্ব করেছেনএকপর্যায়ে আমি তার একটি নম্বর ব্লক করে দিইতার অনেকগুলো নম্বরএরপর আরেকটি নম্বর দিয়ে বাসার নিচ থেকে কথা বলেনএই কথা বলার একপর্যায়ে মিজান বলেন, আমি শুনেছি আপনার বিয়ের কথাবার্তা চলছে কথা শুনে আমি অবাকএসব কথা আপনি কিভাবে জানেন- প্রশ্ন করতেই মিজান বলেন, আরে ম্যাডাম আমি সব জানিআপনি কী দিয়ে বাসায় ভাত খাচ্ছেন, কী করছেন, কে কোথায় থাকেন সব জানিইকো বলেন, ‘ওইদিন আম্মু ছিলেন বগুড়ায়বাসায় কাজের মেয়ে, ছোট ভাই ড্রাইভার ছাড়া কেউ নেইআমার আব্বু নেইআম্মু বগুড়ায় ছিলেন মিজান তাও জানতেনআমার বড় বোনের নামটাও তিনি জানতেনএকপর্যায়ে আমি তাকে বললাম, ঠিক আছে নিয়ে কথা বলব নাআমি আপনাকে মাফ করে দিছি, আপনি চলে যান

এরপর মিজান বলেন, না আপনি নিচে নেমে আসেন, আমি সামনা সামনি মাফ চাইবএরপর আমি বললাম, এটা আপনার বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না? তারপর তিনি বললেন, আপনি যদি না আসেন আমি কিন্তু আপনার বাসায় উঠে যাবএরপর আমি রাগ করেই বলি, আপনি একজন গভর্নমেন্ট অফিসারআপনার কোনো কাজ নেই? সরকার কি আপনাকে ওএসডি করে রেখেছে? শুধু শুধু মানুষের নম্বর ট্র্যাক করে ডিস্টার্ব করে বেড়ান? আপনার কোনো ব্যক্তিত্ব নাই? আমি বকাও দিছিএকপর্যায়ে আমি স্কয়ার ক্যাফেটেরিয়ায় তাকে বসতে বলিতখন তিনি বলেন, আমি তো একজন পুলিশ পাবলিক ফিগার তাই ক্যাফেটেরিয়ায় বসতে পারি নাএরপর বলেন, আপনি আমাকে বিশ্বাস করেন, ভরসা রাখেনআপনি এসে গাড়িতে বসে দুটি কথা শোনেন, তারপর চলে যাবেনএরপর আমি বোকামি করে বাসার নিচে নেমে এসে গাড়িতে উঠিদু-একটি কথা বলেই গাড়ির দরজা লক করে ফুল মিউজিক দিয়ে গাড়ি চালিয়ে সোজা বসুন্ধরার ৩০০ ফুট সড়কের পাশে পূর্বাচলে নিয়ে আসেনগাড়িটি তিনি নিজেই চালাচ্ছিলেনরাস্তায় যেখানে জ্যাম দেখেছেন সেখানেই রোড ক্লিয়ার রাখার জন্য ওয়াকিটকি দিয়ে ট্রাফিকদের বলছিলেন

ইকো বলেন, ‘গাড়িতে বসে অনেক চিল্লাচিল্লি করিএরপর পূর্বাচলে যাওয়ার পর আমি রাগ হয়ে তাকে কিছু গালিগালাজ করেছিকারণ সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে উইদাউট পারমিশন এভাবে ফিল্মি স্টাইলে আমাকে তুলে আনতে পারেন কিনা, আপনিই বলেন?’ এরপর ইকো বলেন, ‘এসব কথা বলেছিবারবার বলি আমাকে বাসায় নিয়ে চলেনএকপর্যায়ে তার ব্যক্তিত্বে আঘাত দিয়ে কিছু কথা বলা হলে তিনি দিশেহারা হয়ে আমাকে মারতে থাকেন

একপর্যায়ে এতটাই ক্রেজি হয়েছিলেন যে আর্মস মাথায় ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দিয়ে বলেন, গুলি করে মেরে ফেলবতখন আমিও বলি, ওকে শুট মি পর্যায়ে ইকো গণমাধ্যমকর্মীকে বলেন, ‘লোকটা আমার বাসা থেকে আমাকে তুলে নিয়ে আসছে, এটা কোন ধরনের তামাশা? এটা তো প্রতারণার শামিলগাড়িতে বসে কৌশলে আমার ফোনটাও নিজের কব্জায় নিয়ে নেন তিনিএকপর্যায়ে আমাকে সান্তনা দেয়ারও চেষ্টা করেনঅভিনয়ও করেনএকই সময় একটি বেসরকারি টিভির সংবাদ পাঠিকা তার নাম দেখেছি... ডিআইজি মিজানকে ফোন করেনওই সময় মোবাইলটি এনে ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলে সাহায্য চাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলামএরপরই তিনি আমার ওপর শারীরিক নির্যাতন আরও বাড়িয়ে দেনএকপর্যায়ে ডিআইজি মিজানের হাতের আঘাতে আমার চোখ-মুখ ফুলে যায়নাকফুল ভেঙে রক্ত পড়তে থাকেমার খেয়ে আমি শক্তিহীন হয়ে যাইতিনি নিজেও কন্ট্রোলের বাইরে চলে যানভয়ে আমিও আর কোনো কথা বলতে সাহস করিনি অবস্থায় তিনি দুজন লোককে ফোন করেনতার মধ্যে একজন হচ্ছেন আমার বিয়ের উকিল বাপ ডিআইজি মিজানের গাড়িচালক গিয়াস উদ্দিন এবং অপরজন হচ্ছেন তার বাসার গৃহকর্মী কনস্টেবল জাহাঙ্গীরতাদের দুজনকে বারিধারার একটি স্থানে আসতে বলেন সময় গিয়াস চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেনগিয়াস বলছিলেন স্যার আমার জরএরপর মিজান বলেন, তোমার জর থাক আর যাই থাক তোমাকে আসতেই হবে

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তোমাকে আসতেই হবেজাহাঙ্গীরকে নিয়ে আসওই অবস্থায়ই একজন একটি মোটরসাইকেলে গিয়াসকে নামিয়ে দিয়ে যায়ডিআইজি মিজান বারিধারায় গিয়ে গিয়াসকে গাড়ি চালাতে দিয়ে পেছনের সিটে আসেনএকই সময় জাহাঙ্গীরও সেখানে উপস্থিত হয়ওদের দুজনকে দেখে আমার একটু সাহস হলতাদের সামনেই বললাম, আমাকে ছেড়ে দেনএরপর উত্তেজিত হয়ে ওড়না দিয়ে আমার মুখ বেঁধে ফেলেন ডিআইজি মিজানতাদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা না পেয়ে আমার মনে হয়েছে পুরোটাই একটা নেটওয়ার্ক ছিলসেখান থেকে সরাসরি বেইলি রোডের বেইলি রিজের অ্যাপার্টমেন্টের (লিফটের - এম-) বাসায় আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়তখন সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টাআমি নিজেই ওড়নার বাঁধন খুলে জিজ্ঞেস করলাম আমাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? ডিআইজি মিজান বললেন, কোনো সমস্যা নাই এটা আমার বাসাখালাম্মা (ইকোর মা) এলে তুমি চলে যাবেভয়ে আমি আর মাথা গরম করিনিবাসায় গিয়ে বুঝলাম এটা পূর্বপরিকল্পিততখন আমার মধ্যে এক ধরনের ভয় এলোআর বারবার মনে হচ্ছিল ডিআইজি মিজান নিজে সেফ হওয়ার জন্য উল্টাপাল্টা কিছু একটা করে ফেলতে পারেতখন চিৎকার শুরু করলামকিন্তু আমাকে কেউ সাহায্য করতে আসেনিআমি প্রচণ্ড সিনক্রিয়েট করলামযাতে বিরক্ত হয়ে আমাকে বের করে দেয়তখন গিয়াস আমার ডান হাত ধরে আছে, জাহাঙ্গীর আমার বাম হাত ধরে রাখে অবস্থায় উনি (ডিআইজি মিজান) উড়ে এসে আমাকে মারতেছেনআমি বাস্টার্ড বলে গালি দেয়ায় তিনি আমাকে এভাবে মারেনশারীরিক নির্যাতনে আমি অনেকটা অজ্ঞানের মতো হয়ে যাইতাদেরকে আমি বললাম, একটা মেয়েকে আপনারা তিনজনে মিলে মারতেছেন, লজ্জা করে না আপনাদের? মাইর খেয়ে মনে হয়েছে অনেক ক্ষোভ ছিল আমার ওপরবিয়ের পরও অনেক মার খেয়েছিএখনও জানতে ইচ্ছে করে, কেন এত ক্ষোভ ছিল আমার ওপররাত ১২টার দিকে ডিআইজি মিজানের বন্ধু বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ডা. গাজী শামিম হাসান ওই বাসায় হাজির হন

তিনি আমাকে বোঝাতে শুরু করেনবলেন, আমার দোস্ত অনেক রাগীআপনার সঙ্গে মিসবিহেভ করেছেসে আসলে আপনাকে অনেক লাভ করেআমি বললাম, ঠিক আছে মানুষ মানুষকে লাভ করতেই পারেতার মানে এই নয় যে জোর করে ভালোবাসা আদায় করতে হবেভালোবাসার দরজা থাকবে আলাদাএটা কি করা হচ্ছেআপনার ক্ষমতা আছে বলেই আপনি তুলে নিয়ে আসবেন? বাই দিস টাইম তিনি (অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজান) স্ট্রোক করার মতো একটা নাটক করলেনতিনি পড়ে গেলেন

এরপর গাজী শামিম হাসান কে বললাম, ঠিক আছে উনি আমাকে লাভ করেনউনাকে আম্মার সঙ্গে কথা বলতে বলেনআমাকে বাসায় দিয়ে আসেনআমার সঙ্গে যা করা হয়েছে তার কিছুই বলব নাএর মধ্যে আমি অসুস্থ হয়ে পড়িতখন আমাকে সুস্থ করার কথা বলে ওষুধ খাওয়ানো হয়এরপর আর আমার সেন্স ছিল নাপরদিন ১২টা বা ১টার দিকে সেন্স আসার পর দেখতে পাই আমি তার (ডিআইজি মিজানের) বেডরুমেআমার যে সালোয়ার-কামিজ পরা ছিল সেটা নেইতার আনা স্লিপিং ড্রেস পরাএটা দেখার পর আবারও আমার মাথা গরম হয়ে যায়তখন বাসায় গিয়াস জাহাঙ্গীরকে ডেকে বললাম, এই তোমাদের স্যার কোথায়? আমার ড্রেস কে চেঞ্জ করেছে? ওরা ফোন দিয়ে তাকে জানায়তিনি হয়তো ডিএমপিতেই ছিলেন১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই চলে এসে আমাকে বলতেছেন, বি কুলআমিই ড্রেস চেঞ্জ করেছিবিকজ তোমার অবস্থা ভালো ছিল নারেস্ট নেয়ার জন্য আমি চেঞ্জ করেছি

এবার গণমাধ্যমকর্মীর কাছে প্রশ্ন রেখে জানতে চান- এখন আপনি চিন্তা করেন, এটা তিনি করতে পারেন কি না? এরপর তো একটা মানুষ আর স্বাভাবিক থাকবে নাআই ওয়েন্ট টু গো ফর সুইসাইডআমি আর বাঁচতে চাই নাবাসায় যাওয়ারও দরকার নাইমারা গেলেই বেটারআমি সুইসাইড করার জন্য গ্যাসের চুলায় নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম সময় ওড়না জ্বলে যায়প্রচণ্ড চিল্লাচিল্লি করলামকারণ আমার কাছে মনে হয়েছে যে, ‘সামথিং হ্যাপেনড দেট নাইট...। বাসায় আসার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমার কাছে মাফও চানবলেন আমি ভুল করে ফেলেছিআমি তোমার আম্মার সঙ্গে কথা বলবতো আমি বললাম আমার কতটুকু ক্ষমতা আছে আমি আপনাকে মাফ করবক্ষমতাটাও তো আমার লিমিটের মধ্যে থাকতে হবেআম্মুকে ট্যাক্টফুলি তিনি ডাকেনক্ষমা চানআবার আম্মুকে হুমকি দিয়ে বলেন যে, আপনি যদি এটা বাইরে বলাবলি করেন তাহলে অনেক খারাপ হবেআপনার নেত্রিত্বও চুকিয়ে দেবঢাকা শহরে একটা এসপি চাইলেই অনেক কিছু করতে পারেআর আমি তো ডিআইজি মিজান, আমি অনেক কিছু করতে পারি

হুমকির ভয়ে আম্মা কোনো কিছু বলতেও পারছিলেন না১৫ ১৬ জুলাইও আমি সেখানে১৬ জুলাই আমি কৌশলে আম্মুর সঙ্গে কথা বলার কথা বলে খালুকে (কৃষক লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা) ফোন করিতখন একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে ওর কাছে ফোন আসেখালামণিও (একজন সংসদ সদস্যকে) ফোন করেনএরপর তিনি একটু ভয় পানএরপর তাৎক্ষণিক তিনি আম্মুকে ফোন করে বলেন ঠিক আছে, খালাম্মা আমি ওকে নিয়ে আসছিআধা ঘণ্টা পর আবার মত পরিবর্তন করে বলেন- আসলে খালাম্মা ওখানে (ইকোর বাসা) বসে কথাবার্তা বলাটা ঠিক হবে নাআমার অনেক দোষ আছে আপনি আমার ফ্ল্যাটে আসেন, আমি গাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছিতখন আম্মু বলেন, না আমার গাড়ি আছে তোমার গাড়ি পাঠাতে হবে নাপান্থপথের বাসা থেকে তার গাড়ি ফেরত আসেতার আরেক ড্রাইভার জিহাদ ওই গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলপরে আমাদের গাড়ি নিয়েই আম্মু আসেনএর আগে তিনি গেটে বলে রাখেন, সরকারি কর্মকর্তার বাসায় কেউ যেতে হলে মোবাইল নিয়ে যাওয়া যায় নাসেভাবেই গেটের সিকিউরিটি আম্মুকে বলে ফোন রেখে যাওয়ার জন্য

তিনিও ফোন রেখে বাসায় ঢোকেনওইখানে তিনি শাড়ি, নাকফুল, চুড়ি, গয়না রেডি করে রাখেন বিষয়টি আমিও জানি নাআম্মু আসার পর তাৎক্ষণিক তার ব্যবহার পরিবর্তন করে বলেন- নো আপনার মেয়ে এখান থেকে যেতে পারবে নাবিয়ে হবে

আপনার মেয়েকে হয় সেটেল্ড করে যেতে হবে, না হয় আপনার মেয়ের লাশ বের হবে কথা শুনে আম্মু হতবাকআম্মু বললেন, এটা কি? এখানে বিয়ে শাদির প্রশ্ন আসতেছে কেন? আমার জানা মতে তোমার যে বয়স স্ত্রী-সন্তান থাকার কথাতারা কোথায়? তখন ডিআইজি মিজান বলেন, না তারা কেউ নাইতখন আম্মু আবার বলেন, তোমার স্ত্রী-সন্তান নাই ভালো কথা, কিন্তু এভাবে কি তুমি একটা মেয়েকে তুলে আনতে পার? কথার জবাবে ডিআইজি মিজান বলেন, হ্যাঁ আমি পারিআপনারা বিষয়টাকে না প্যাঁচিয়ে সমস্যাটা সমাধান করেন

কথা বলে তার আর্মসটা দম করে টেবিলের ওপর রাখেনতখন আমার মধ্যে ভয় লাগেভাবছিলাম, এখন মা-মেয়ে দুজনই তো তার কৌশলে ফ্ল্যাটে বন্দি হয়ে গেছিএখন তাকে সান্তনা দেয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই বা বেরও হতে পারব নাতখন আমি বললাম, ওকে হোয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট? তিনি বললেন, চল বিয়ে করে ফেলিএবার যাতে তিনি বিয়েতে রাজি না হন সে জন্য আমিই বললাম, বিয়ে করতে চান তো? কাবিন দেবেন এক কোটি টাকাআমার ধারণা ছিল সরকারি কর্মকর্তা এক কোটি টাকা দিয়ে বিয়ে করতে চাইবেন না

তিনি বললেন, না এক কোটি টাকা নয় ৫০ লাখ টাকা কাবিনএর বাইরে একটা কথা বললে দুজনের লাশ ফেলে দেব কথা বলে আবার দাঁড়িয়ে যানএবার আমি ভয় পাই কারণে যে, হয়তো এখন আম্মুসহ আমাকে হেনস্তা করবেওইদিন আমাদের লাইফটাই দরকষাকষির মধ্যে চলে যায়দরজা বন্ধ, নিচে সব জায়গায় মেকানিজম করাসমস্ত ফোন কন্টাক্ট বন্ধ অবস্থায় ডিআইজি মিজানের খাচায় বন্দি হয়ে আম্মুকে আমি সেভ করতে চেয়েছি, আম্মু আমাকে সেভ করতে চেয়েছেনমগবাজার কাজী অফিসের কাজী ডেকে বিয়ে পড়ানো হয়বিয়ে পড়িয়েছেন কে জানতে চাইলে ইকো বলেন, ‘দুজন কাজী ছিলএকজনের নাম নূর হোসেন বলে শুনেছিবিয়ের কাবিনের কপি ওই সময় আমাদের দেয়া হয়নিকাবিনের একটা রসিদ আমাদের হাতে দেয়া হয়এইভাবেই বিয়ে সম্পন্ন হয়

ভুয়া কাবিনের অভিযোগে কাজী একটি মামলা করেছে, জেনেছেন কিনা জানতে চাইলে ইকো বলেন, ‘সেটা আদালতেই ফয়সালা হবেআমরা আইজিআরের (ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রার) কাছে আবেদন করেছিএখন বলেন, কাজী অফিসে যদি ভুয়া রসিদ রাখা হয় সেটা কি আমার দোষ? ডকুমেন্ট যাই হোকবিয়ে কিন্তু অরিজিনালবিয়ে কিন্তু ফেক নাএখন আসেন ফেক বিয়েও যদি হয় তাহলে মিজান কেন আমার সঙ্গে মাস সংসার করল? লালমাটিয়ায় ৫০ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে আলাদা ফ্ল্যাটে রাখল?’ চার মাস সংসারের পর আপনাদের মধ্যে অবস্থা কেন জানতে চাইলে ইকো একটি নিউজ চ্যানেল চ্যানেলটির একজন উপস্থাপকের নাম ধরে বলেন, ‘মূলত ওর সঙ্গে ডিআইজি মিজানের পরকীয়া গড়ে ওঠেসি ইজ স্টুপিড লেডিতার বাচ্চাও আছে, হাজবেন্ডও আছেসে যখন আমাদের ইন্টারনাল লাইফে ঝামেলা করার চেষ্টা করল তখনই আমি বিষয়টিতে রিঅ্যাক্ট করি

আমার বিয়ের উকিল বাপ ড্রাইভার গিয়াস আমাকে বলেছে, আমার স্বামী নাকি তার বাসায়ও খরচ পাঠায়গিয়াস তার বাসায়ও ডিউটি করেএগুলো যখন শুনলাম তখন আমার স্বামীকে জিজ্ঞাসা করলাম, আমার কানে এসব কেন আসছেএসব কথা জিজ্ঞাসা করলেই আমাকে মারা হতোএকবার লোয়ার এবডোমিনে (তলপেট) লাথি মারেএতে আমি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়িতার নিয়ন্ত্রিত একটি হাসপাতালে ট্রিটমেন্ট করানএই নির্যাতনের পর ওই স্টুপিড লেডি আমাকে মেসেজ পাঠাতো- তোকে এত মারে তাহলে চলে জাস না কেন?’ নির্যাতনের কথা বলার সময় ইকোর চোখ থেকে অঝোর ধারায় পানি পড়তে দেখা যায়

নির্যাতনের মুখে কয়েকবার ডিআইজি মিজানকে ইকো বলেন, ‘তুমি স্বাভাবিকভাবে আমার সঙ্গে থাক, না হয় আমাকে ছেড়ে দাওকিন্তু তিনি ছাড়তে রাজি ননতিনি আমার কাছ থেকে লিখিত চান আমি যাতে তার বিরুদ্ধে কখনও কোনো অভিযোগ না করিচার মাস ধরে একটা লেডি আমার হাজবেন্ডকে দিয়ে আমাকে টর্চার করিয়েছেতিনি বলেন, ‘ওই স্টুপিড লেডির সঙ্গে আমার সমস্ত কনভারসেশন স্ক্রিন শর্ট দিয়ে ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করে প্রতিবাদ করেছিকিন্তু তাদের পরকীয়া বন্ধ করা যায়নি কিছু সূত্র: যুগান্তর


শেয়ার করুন

0 facebook: