07 January 2018

অস্ত্রের মুখে যুবতিকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে ৪ মাস মজা লুটে অতঃপর জেলে পাঠালেন DIG মিজান

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ সাংবাদিকদেরকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মরিয়ম আক্তার ইকোর চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য তিনি যা বললেন তা নিম্নরূপঃ ডিআইজি মিজান (ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার) আমাকে বাসার নিচ থেকে জোরপূর্বক তুলে রাজধানীর ৩০০ ফুট এলাকায় নিয়ে যানসেখানে মারধর করে রাতে তার বেইলি রোডের বাসায় নিয়ে আসেনসুস্থ করার নামে একজন ডাক্তারের উপস্থিতিতে ওষুধ খাইয়ে আমাকে অজ্ঞান করা হয়পরদিন দুপুরে ঘুম থেকে জেগে দেখতে পাই আমার পরনে ডিআইজির নিয়ে আসা স্লিপিং ড্রেস সহ পার্সোনাল মুহূর্তে পড়া ড্রেস…’

কেনই বা সে আমাকে জোর করে বিয়ে করল, কেনই বা মাস সংসার করল আর কেনই বা আমাকে জেলে পাঠালো- তা আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি নাআমিতো কোনো প্রতারক নইআমি ডিআইজি মিজানের বৈধ স্ত্রীসে আমার সঙ্গে এতদিন ঘর সংসার করলকিন্তু স্ত্রী পরিচয় দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি আপলোড করায় চরম ক্ষেপে যায়বাসা ভাংচুরের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েদেয়

এখন শুনছি, আমার বিরুদ্ধে ভুয়া কাবিন করার অভিযোগ এনে আরও একটি মামলা করা হয়েছেযে কারণে আমি প্রথম মামলায় জামিন পেলেও দ্বিতীয় মামলায় ফের গ্রেফতার দেখানো হয়েছেআমি রাষ্ট্র সমাজের কাছে এর সুবিচার চাইকেন আমার মতো অবিবাহিত নিরীহ সাধারন মেয়ের জীবন এভাবে একজন ক্ষমতাধর ডিআইজি ছিন্নভিন্ন করে দিল?’ হে দেশের প্রিয় সাংবাদিক, লেখক, ব্লগার, পুলিশ প্রশাসন, নেতা নেত্রী আজকে আমি যদি আপনাদেরই কারো বোন, ভাগ্নি হতাম তবে কি আপনারা আমার উপর এই যুলুম দেখে নিরব থাকতে পারতেন?  কথাগুলো মরিয়ম আক্তার ইকোর

ইকোর বয়স আনুমানিক ২৫, সম্প্রতি প্রতিবেদক তার সাক্ষাৎকার নিতে সক্ষম হনএতে বিয়ের আগে-পরের চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য বেরিয়ে এসেছে৫০ লাখ টাকার আসল কাবিন কে ভুয়া কাবিন বলে চালিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত মামলার তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে অকল্পনীয় নজিরবিহীন ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা শোনা যায়যা সিনেমার কাহিনীকেও হার মানিয়েছেবিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া নিরীহ সুন্দরী তরুণীকে ফাঁদে ফেলে কিভাবে তার কানাডার বিয়ে ভেঙে দেয়াসহ পুরো পরিবারের সুখস্বপ্ন চুরমার করে দেয়া হয়েছে তা জানা যায়অনুসন্ধান করতে গিয়ে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের জনৈক সংবাদ পাঠিকার সংযোগও পাওয়া যায়যার সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ককে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে পড়ে

ঘটনার সারসংক্ষেপঃ চাকরির জন্য বান্ধবীর পরিচয় সূত্রে এক মহিলার মাধ্যমে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমানের সঙ্গে প্রথমে মুঠোফোনে পরিচয় হয় মরিয়ম ইকোরএরপর তিনি তাকে ফোনে কথা বলার সময় অশোভন ইঙ্গিত দিতেন

বোঝাতে চাইতেন তার প্রথম স্ত্রী বিদেশে থাকেনতাকে নিয়ে সংসার করবেন নাইকোকে তার খুব পছন্দ ইত্যাদিকিন্তু এর মধ্যে কানাডা প্রবাসী এক ব্যক্তির সঙ্গে ইকোর বিয়ে প্রায় ঠিকঠাক হয়ে যায়টেলিফোনে আড়ি পেতে যার আদ্যোপান্ত জানতে পারেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানএরপর ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে ১৪ জুলাই ইকোকে তাদের পান্থপথের বাসা থেকে এক রকম কৌশলে তার গাড়িতে তুলে জোরপূর্বক ৩০০ ফুট এলাকায় নিয়ে যান

সেখানে মারধর করে রাতে ইকোকে তার বেইলি রোডের বাসায় নিয়ে আসেনসেখানে তাকে সুস্থ করার কথা বলে অসুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলেন সময় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের ডাক্তার বন্ধু বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন গাজী শামীম হাসান উপস্থিত ছিলেনমরিয়ম ইকো পরদিন দুপুর ১২টার দিকে ঘুম থেকে জেগে দেখতে পান তার পরনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানের কিনে আনা স্লিপিং ড্রেস এবং তিনি তার বেডরুমেবুঝতে পারেন, তার সর্বনাশ হয়ে গেছেএরপর কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েনএকপর্যায়ে আত্মহত্যা করবেন বলে দৌড়ে রান্নাঘর খুঁজতে থাকেন

সময় তাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের দুজন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী গাড়িচালকওদের ঠেলে ফেলে তিনি রাগে-ক্ষোভে-দুঃখে রান্নাঘরে ঢুকে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে ওড়নায় আগুন লাগিয়ে দেন সময় খবর পেয়ে ডিএমপি কার্যালয় থেকে ছুটে আসেন মিজানুর রহমানইকোকে শান্ত করার চেষ্টা করেনআশ্বাস দেন তাকে দ্রুত তার বাসায় রেখে আসবেনইকোর প্রশ্নের মুখে তিনি আগের রাতে ড্রেস খুলে ফেলাসহ খারাপ আচরণের জন্য ক্ষমা চানকিন্তু তাকে শান্ত করতে না পেরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলেনএভাবে ১৪ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত দিন মেয়েটিকে বাসায় আটকে রাখেন তিনিইকোর বাবা বেঁচে নেই

খবর দেয়া হলে বগুড়া থেকে তার মা কুইন তালুকদার ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় ডিআইজির বেইলি রোডের বাসায় এসে উপস্থিত হনমেয়েকে কেন এভাবে আটকে রাখা হয়েছে জানতে চাইলে ডিআইজি মিজান ধমক দিয়ে বসিয়ে রাখেনএরপর বলেন, এখান থেকে মুক্তির একটাই পথ আছেতা হল আপনার মেয়েকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিতে হবেএতে মা-মেয়ে কেউ রাজি না হলে টেবিলে ব্যক্তিগত পিস্তল রেখে মা-মেয়েকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়অনেক বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ৫০ লাখ টাকা কাবিনে মেয়েকে তার কাছে বিয়ে দিতে বাধ্য করা হয়বিয়ে পড়ানোর জন্য মগবাজার কাজী অফিসের কাজীকে ডেকে আনা হয়বিয়ের উকিল বাবা হন তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক গিয়াসউদ্দিনএছাড়া সাক্ষী করা হয় দেহরক্ষী জাহাঙ্গীরকেবিয়ের পর ওই রাতে মা-মেয়েকে ছেড়ে দেয়া হয়

পরে লালমাটিয়ায় ৫০ হাজার টাকার ভাড়া ফ্ল্যাটে নিয়ে গোপনে সংসার শুরু করেন ডিআইজি মিজানওই ফ্ল্যাটের নিচে সাদা পোশাকে সার্বক্ষণিক পুলিশের দুজন সদস্যকে পাহারায় রাখা হয়এর ফলে ইকো এক রকম গৃহবন্দি হয়ে পড়েনতার ব্যক্তিগত জীবন বলতে কিছু ছিল নাঅনেকটা জেলখানার মতোঅনেক চেষ্টা করেও নিজের ভাইকে ফ্ল্যাটে রাখার অনুমতি পাননি

কথায় কথায় তাকে মারধর করতেন ডিআইজি মিজানএভাবেই কেটে যায় মাসএকদিন তিনি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানকে স্বামী হিসেবে পরিচয় দিয়ে অফিসে মুডে থাকা একটি ছবি ফেসবুকে আফলোড করেনএতেই চরমভাবে ক্ষিপ্ত হন মিজানুর রহমান ছবির বিষয়টি পুলিশের উপর মহলে জানাজানি হয়ে যায়ফেসবুক থেকে দ্রুত ছবিটি সরিয়ে ফেলতে তিনি লালমাটিয়ার বাসায় ছুটে আসেনসেখানে বিষয়টি নিয়ে স্ত্রী ইকো, শাশুড়ি কুইন তালুকদারের সঙ্গে তার চরম মাত্রায় বাকবিতণ্ডা হয়



এদিকে সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর তাদের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেইকো সমাজিকভাবে ডিআইজি মিজানের স্ত্রী পরিচয়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অটল থাকেনএর মধ্যে তার বিরুদ্ধে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় গোপন রেখে বাসা ভাংচুর অগ্নিসংযোগের মামলা করা হয় মামলায় ইকোকে ১২ ডিসেম্বর পুলিশ গ্রেফতার করে১৩ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করার পর তার জামিন আবেদন নাকচ হওয়ায় তাকে কারাগারে যেতে হয়

পরে তার বিরুদ্ধে ভুয়া কাবিন করার অভিযোগ এনে আরও একটি মামলা করা হয়আদালত সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদক ভুয়া কাবিননামার মামলাটি অনুসন্ধান করতে গেলে একে একে চাঞ্চল্যকর ঘটনার বিস্তারিত বেরিয়ে আসেসূত্র বলছে, যুগান্তরের তথ্যানুসন্ধানের বিষয়টি আঁচ করতে পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজান প্রভাব খাটিয়ে কৌশলে তার জামিনের ব্যবস্থা করেন২১ দিন কারাভোগের পর তিনি ডিসেম্বর জামিন পানকিন্তু তাকে জামিন দেয়া হয় কথিত ভুয়া কাবিননামার মামলার বাদী কাজী সেলিম রেজার জিম্মায়এর মধ্যে প্রতিবেদক তার দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নিতে সক্ষম হনতবে বর্তমানে ইকো কোথায় আছেন তা জানা সম্ভব হয়নি

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান যা বললেন,

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমানের কাছে উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি ফোন রিসিভ করেননিপরে মরিয়ম আক্তার ইকোর অভিযোগের বিষয়টি উল্লেখ করে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হয় সময় তিনি ফোন রিসিভ না করে ফিরতি মেসেজ দিয়ে জানান, ‘রাইট নাও আই অ্যাম বিজি উইদ পুলিশ উইক প্রোগ্রামইউ ক্যান কাম টু মাই অফিস আফটার পুলিশ উইকএরপর জরুরি ভিত্তিতে কথা বলার জন্য পুনরায় ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননিএদিকে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিতে রাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মুহম্মদ আছাদুজ্জামান মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি

এই ঘটনার সম্পূর্ণ বিস্তারিত ভিডিও সহ আমাদের পরেও খবরে দেখুন এখনেঃ DIGমিজানুরের স্ত্রী ইকোর দাবী, আমিকি বিচার পাবো? সম্পূর্ণ ঘটনার রোমহর্ষক কাহিনী! (ভিডিও সহ)


শেয়ার করুন

0 facebook: