01 March 2018

সিরীয় নারীরা খাবার পেতেই যৌনতায় বাধ্য হচ্ছে


আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ক্ষুধার্ত নারীরা নিজের জন্য, সন্তানের জন্য, পরিবারের অন্যদের জন্য খাবার পেতে যেকোনো শর্তেনিজেদের সঁপে দিচ্ছেনএই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের যৌনতায়বাধ্য করছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থার নিয়োজিত ত্রাণকর্মীরা

নারীদের ওপর নিপীড়নের বিষয়ে বছর তিনেক আগে সতর্ক করা সত্ত্বেও নতুন প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, সিরিয়ার অসহায় নারীদের ওপর নির্যাতন চলছেইখাবারসহ ত্রাণ সামগ্রীর বিনিময়ে নারীদের যৌন কাজে বাধ্য করা হচ্ছেএমনকি কোনো নারী প্রাণ বাঁচাতে কোনো দিকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ত্রাণদাতা সংস্থাগুলোর গাড়িতে উঠতে চাইলেও যৌনতাআদায় করে নিচ্ছে মানবিক সংস্থাগুলোর’ ‘অমানবিক কর্মীরা

জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এর নতুন প্রতিবেদনে সিরীয় নারীদের প্রতি এ হিংস্রতার তথ্য ‍উঠে আসার পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছেঘৌতা শহরে সিরিয়া ও রাশিয়ার যৌথ বাহিনীর বিমান হামলায় যে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে, সেটিকে বিশ্ব দরবারে আরও জোরদারভাবে তুলে ধরছে এই প্রতিবেদন

ভয়েসেস ফ্রম সিরিয়া-২০১৮শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, খাবার পেতে নারী ও বালিকারা যৌন সেবাদিতে ত্রাণকর্মীদেরসঙ্গে অল্প কিছু সময়ের জন্য বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেনকোথাও বিতরণকারীরা ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার নামে নারী ও কন্যা শিশুদের ফোন নাম্বার নিয়েছেনতাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার বিনিময়ে কিছু না কিছুআদায় করে ছাড়ছেনঅনেক নারীকে ত্রাণ দেওয়ার বিনিময়ে তার সঙ্গে বাড়ি যাওয়া, বিতরণকারীদের সঙ্গে একটা রাত কাটানোর মতো ঘটনাও ঘটছে

যদিও জাতিসংঘ ও দাতব্য সংস্থাগুলো দাবি করছে যৌন নিপীড়নেরবিরুদ্ধে তাদের অবস্থান শূন্য সহনশীলতার পর্যায়েযদি আঞ্চলিক অংশীদার সংগঠনগুলোর কেউ এ ধরনের নিপীড়নে যুক্ত হয়েও যায়, তবে এসব বিষয়ে তারা অবগত নয়

সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো তৃতীয় পক্ষের ভাড়া করা লোকজনের মাধ্যমে বিপর্যয়স্থলে ত্রাণ বিতরণ করে থাকে

ইউএনএফপিএর প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ত্রাণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে নারীদের ওপর নির্যাতন এতোটাই মারাত্মক আকার নিয়েছে যে, অনেক সিরীয় নারী এখন আর বিতরণ কেন্দ্রে যেতে চান নাকারণ স্বজন বা অন্যদের মনে এটা ঢুকে গেছে যে, ত্রাণ বাড়িতে আনার অর্থ হলো শরীর বেচে এসেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিরিয়ার ময়দানে তৎপর একজন ত্রাণ কর্মী দাবি করেন, কিছু মানবিক সহায়তা সংস্থা তাদের তৃতীয় পক্ষ ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের এ ধরনের নিপীড়নের বিষয়ে চোখ বন্ধ করে আছেকারণ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সহায়তা নিয়ে স্থানীয় তৃতীয় পক্ষ ছাড়া আন্তর্জাতিক কর্মীদের প্রবেশাধিকার নেই


শেয়ার করুন

0 facebook: