![]() |
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন ভারতের স্বঘোষিত গুরু আসারাম বাপু। ২০১৩ সালে এক কিশোরীর ধর্ষণ মামলায় তিনি ছাড়াও আরও দুই অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। ২ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে যোধপুরের বিশেষ আদালত। যোধপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ভিতরেই আসারামের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় রায় দেয় বিশেষ আদালত।
উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের এক কিশোরীকে (১৬) আশ্রমে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ছিল আসারামের বিরুদ্ধে। পক্সোর বিভিন্ন আইন, জ্যুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট ও ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল আসারাম ও চারজনের বিরুদ্ধে। এই চারজন হলেন শিব, শিল্পা, শরদ ও প্রকাশ। ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে চার্জশিট পেশ করা হয়। গত কয়েক বছরে এই মামলার বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে হামলার মুখে পড়তে হয়। অনেকে আবার নিখোঁজ হয়ে যান।
ঘটনাক্রম
কীভাবে এগোল ঘটনাক্রম দেখে নিন এক ঝলকে...
১. আসারাম বাপুর বিরুদ্ধে নারী পাচার, ধর্ষণ, শিশুদের উপর যৌন নিগ্রহের অভিযোগ রয়েছে।
২. ধর্ষণের অভিযোগের পর ইন্দোর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল আসারামকে। ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর তাকে নিয়ে আসা হয় যোধপুর সেনট্রাল জেলে। তখন থেকেই তিনি বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।
৩. শুধু ১৬ বছরের কিশোরীর ধর্ষণই নয়, গুজরাটে আরো একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। দুই বোন ধর্ষণ এবং বেআইনিভাবে আটক করে রাখার অভিযোগ দায়ের করেছেন আসারাম এবং তার ছেলে নারায়ণ সাইয়ের বিরুদ্ধে।
৪. গত চার বছরে শুনানি শুরু হওয়ার পর থেকে ৯ জন সাক্ষীর উপর হামলা হয়েছে। সেই হামলায় মারা গেছেন ৩ জন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী।
৫. ৭৭ বছরের এই ‘গডম্যান’ গত চার বছরে ১২ বার জামিনের আবেদন করেছেন। ৬টি আবেদন খারিজ করে দায়রা আদালত, তিনটি খারিজ করে রাজস্থান হাইকোর্ট এবং তিনটি জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায় সুপ্রিম কোর্টে।
৬. আজ বুধবার মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
আসারাম একসময়ে টাঙাওয়ালা ছিলেন!
বুধবার আসারাম ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা হল। ধর্ষণকাণ্ডে বিশেষ আদালত আসারামকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। কিন্তু জানেন কি আসারাম বাপু জীবনের শুরুতে টাঙাওয়ালা ছিলেন? অবাক লাগছে? তাহলে এই স্বঘোষিত ‘গডম্যান’ সম্পর্কে জেনে নিন আরও কিছু তথ্য।
আসারাম বাপুর জীবনের বেশ খানিকটা অংশ ছড়িয়ে রয়েছে আজমিরের পথে। যৌবনে রোজগারের জন্যে আজকের ‘বাপু’ টাঙাওয়ালার কাজ করতেন। নাম ছিল আসুমাল সিন্ধি। আজমের শরিফের দরগায় পুণ্যার্থীদের টাঙা করে পৌঁছে দিতেন আসারাম। দু’বছর এভাবেই কোনো রকমে দিন কাটিয়েছেন। এখনও বহু পুরনো টাঙাওয়ালা আসারামকে মনে রেখেছেন খুবই সাধারণ টাঙা চালক হিসেবে।
আজমের টাঙা ইউনিয়নের সদস্য পান্না উস্তাদ জানিয়েছেন, ‘গডম্যান হিসেবে খ্যাতি পাওয়ার পরেই আমরা ওকে চিনতে পারি।’
আসারামের জন্ম পাকিস্তানের সিন্ধে। মাত্র সাত বছর বয়সে তার পরিবার গুজরাটে চলে আসে। ১৯৬৩ সালে আসুমাল আজমের পাড়ি দেন।
প্রবীণ আইনজীবী চিরঞ্জিত্ সিং ওবেরয় জানিয়েছেন, ‘আসুমালের বাবা পরিবার নিয়ে পরে আজমের চলে আসেন। সেখানে খারি কুইতে তারা বাস করতেন। আসুমাল খুবই পরিশ্রম করতেন। দেশ ভাগের পর পরিবার যে দুর্দশার মধ্যে দিয়ে গেছে সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে রাতদিন খাটতেন তিনি।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: