03 May 2018

সরকারের ভেতরে এক চেহারা, বাইরে আরেকঃ মির্জা ফখরুল

ফাইল ছবি
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সরকার গত ১০ বছরে একটি ভয়ঙ্কর ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরবৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব বলেনতিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবেএরপর নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে জাতীয় নির্বাচন হতে হবেএকইসাথে বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়াকেও অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবেবিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষেবাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন এই সভার আয়োজন করে

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার মুখে বলছে মুক্ত গণমাধ্যমঅথচ ভিন্ন ধরনের সেন্সরশিপ আরোপ করছেপত্রিকায় কোন নিউজ যাবে আর কোন নিউজ যাবে না তা সরকারের লোকজন নির্ধারণ করে দিচ্ছেপ্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে
তিনি বলেন, জাতির সাথে জঘন্য প্রতারণা ও ডাবল স্ট্যান্ডার্ড করা হচ্ছেসরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু বাস্তবে কাজের মধ্যে ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদীভেতরে এক আর চেহারা আরেকমুখে বলে ভালো করছেআসলে গত দশ বছরে ভীতির সমাজ তৈরি করেছেযে সমাজে কথা বলতে ভয়লিখতে ভয়এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আমাদেরকে শেষ করতে হবে

তিনি বলেন, একটা খবরের জন্য আমি এক পত্রিকার লোকদের জিজ্ঞেস করলাম এটা কোথায় কিভাবে পেলে? তারা বললো কিছু করার নেই আমাদের দেয়া হয়েছেআমাদের বাধ্য করা হয়েছেএই হল আমাদের মুক্ত গণমাধ্যমবর্তমান অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে যারা গণতন্ত্রের পক্ষে আছেন তাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবেএকটি বিষয়কে সামনে নিয়ে কাজ করতে হবেসেটা হল গণতন্ত্রকে মুক্ত করাআমাদের স্পষ্ট কথা পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে নির্বাচনের আগে

বিএনপির মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের রক্ষা কবচ হলো মুক্ত গণমাধ্যমএটা মুক্ত না থাকলে গণতন্ত্র থাকে নাপাকিস্তান আমল থেকে সাংবাদিক ভাইদেরকে সংগ্রাম করতে হয়েছেকিন্তু যে বিষয়টা নিয়ে আমাদের স্বাধীনতাসেই অবস্থা আজ নেইআমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছিলাম যে আমরা ভিন্ন চিন্তা করতে পারবকিন্তু এখানে লিখলে গুম হতে হয়দেশ ছাড়তে হয়েছে সাংবাদিকদেরকেআসলে দেশে ফ্যাসিবাদ যখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়তখন সর্বত্র ভয় তৈরি হয়
কাউকে নির্বাচন না করলে তো আর জেলে দেব বলতে পারব না’- গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, এমন একটা মেরুদ- বিহীন নির্বাচন কমিশন তৈরী করেছেযারা কোনো নিয়ম মানেনাখুলনার ক্যান্ডিডেট বাধ্য হয়ে প্রচারণা থেকে সরে এসেছেআমরা প্রতিনিধিকে পাঠিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বলেছিযখন ফোনে বলি তারা বলে সবই ঠিক আছেকিন্তু যেই এসপি হুইপকে মেরেছিলএটা সবার জানাআমরা প্রথমদিনই বলেছি গাজীপুরের এসপিকে সরাতে হবেকারণ সে চিহ্নিত আওয়ামী লীগারসে প্রথম দিনই জামায়াতের ৪৫ জন নেতাকে গ্রেফতার করেছে

এখানে কিসের নির্বাচন? এভাবে তো হবে নাকিন্তু আমরা বলতে চাই জনকে সরাবেন? গুম করবেন করতে পারেনতবে এই ধরনের নির্বাচন এবার মানুষ আর মেনে নেবে না২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বঅচন দেশের মানুষ আর হতে দেবে না বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই আওয়ামী লীগ ১/১১র প্রতিনিধিত্ব করে চলছেতারা আপনাকে জেলে নিলোকতো কিছু করলতাদের তো কিছু করলেন নাবরং তাদের সব কিছুকে ঘোষণা দিয়ে বৈধ্য ঘোষণা করেছেনসম্পূর্ণ মিথ্যা অপরাধে খালেদা জিয়াকে জেলে আটক রাখা হয়েছেলুট করে করে খালি করে ফেলেছে ব্যাংকগুলোসব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছেকিন্তু অর্থমন্ত্রী বলেছেন- ব্যাংকিং খাত নাকি এখনো ততোটা খারাপ হয়নিতাহলে কি বাংলাদেশ ব্যাংক তুলে নিয়ে গেলে খারাপ হয়েছে বলবেন?

বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএফইউজের মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ


শেয়ার করুন

0 facebook: