মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ওমপ্রকাশ রাওয়াত গতকাল শনিবার কলকাতার মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির একটি আলোচনা সভায় যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন। অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর বিকেলে কলকাতার একটি অভিজাত হোটেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের প্রায় এক হাজার রাজনৈতিক দলের ওপর নজরদারি শুরু হয়েছে। এই দলগুলোর কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। এমনকি অফিসেরও কোনো সঠিক ঠিকানা নেই। চিঠি দিলে উত্তর আসে না। তাই এদের নির্বাচনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে দলগুলোর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা যাবে না।
ভারতে রয়েছে সাতটি জাতীয় রাজনৈতিক দল। এগুলো হল বিজেপি, জাতীয় কংগ্রেস, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), তৃণমূল কংগ্রেস, বহুজন সমাজ পার্টি এবং জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপি। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে স্বীকৃত ৪৯টি এবং ৪৬টি অস্বীকৃত রাজনৈতিক দল। ২০১৪ সালের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতে জাতীয় দল, স্বীকৃত এবং অস্বীকৃত এবং রেজিস্ট্রিকৃত দলের মোট সংখ্যা ছিল এক হাজার ৬২৭টি। গত লোকসভা নির্বাচনে গোটা দেশে লড়েছিল ৪৬৪টি রাজনৈতিক দল।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে একটি অ্যাপ আনার প্রসঙ্গে টেনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, আসন্ন ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে গন্ডগোল রুখতে একটি অ্যাপ আনছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের সময় কোনো গন্ডগোল বা বিধিভঙ্গের ঘটনা ঘটলে সাধারণ মানুষ সেই ছবি তুলে নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার আরও বলেছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দায়িত্ব তার নয়। মূলত পঞ্চায়েতসহ রাজ্যের পৌরসভার নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে থাকে স্ব স্ব রাজ্যের প্রধান নির্বাচন অধিকর্তা। আর লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন করে থাকেন ভারতের নির্বাচন কমিশন।
ওমপ্রকাশ রাওয়াত বলেছেন, লোকসভার নির্বাচন হবে ভোটযন্ত্র বা ইভিএম এবং ভিভি প্যাটের মাধ্যমে। এই ইভিএম বা ভিভিপ্যাটের স্বচ্ছতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ভোটের আগে সব রাজনৈতিক দলকেই এগুলো দেখানো হয়। যাঁরা এ নিয়ে অভিযোগ তুলছেন তাঁরা রাজনৈতিক দিক থেকে হতাশ।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এ কথাও বলেছেন, ’আমাদের দেশের ভোট প্রক্রিয়ার ভূয়সী প্রশংসা করেছে অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন কমিশন। তাঁরা প্রশ্ন করেছেন, এত ভোটার , এত ভোটকেন্দ্র কীভাবে পরিচালনা হয়? তাদের আমরা সবিস্তারে আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞাত করি। তাতে তারা সন্তুষ্ট
সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, আগামীর লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন কি একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে? এই প্রশ্নের জবাবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাওয়াত বলেন, নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী চলে। এ ধরনের প্রস্তাব আমাদের কাছে এখনো আসেনি। ’ তিনি আরও বলেছেন, ‘নির্বাচনে টাকার খেলার ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। তামিলনাড়ুতে আমরা ৭০০ কোটি রুপি এবং কর্ণাটকে ১৮০ কোটি রুপি উদ্ধার করেছি। আমাদের ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট টিম এ ব্যাপারে নজরদারি চালায়।’
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: