নিরাপদ
সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত শনিবার ও রবিবার জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের
বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার ফেসবুক লাইভে আসেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। রবিবার রাতে
ধানমন্ডির বাসা থেকে শহিদুলকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি।
নিরাপদ
সড়কের দাবিতে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে
সাক্ষাৎকারও দেন তিনি। শহিদুলের বিরুদ্ধে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি
আইনে মামলাও করা হয়।
তার ব্যাপারে
নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে একটি
স্ট্যাটাস দেন। নিচে সেটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
'১৯৯৪ সালে জুন মাসে খালেদা জিয়ার সরকার আমার
বিরুদ্ধে 'মানুষের
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছি'
এই অভিযোগ করে বাংলাদেশ ফৌজদারি আইনের ২৯৫/এ ধারায় মামলা করেছিল, গ্রেফতারি
পরোয়ানাও জারি করেছিল।'
'তখন আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা উপদেশ দিয়েছিলেন, আমি যেন
আত্মগোপন করি, কারণ
ধর্মান্ধ পুলিশ অথবা জেলের ভেতর ধর্মান্ধ কয়েদিরা আমাকে খুন করতে পারে, ধর্মীয়
অনুভূতি বলে কথা!'
'আমার ওই চরম দুঃসময়ে আমাকে আশ্রয় দেওয়ার
সাহস ঢাকা শহরে প্রায় কারোরই ছিল না। রাস্তায় তখন প্রতিদিন আমার ফাঁসির দাবিতে মিছিল
করছিল লক্ষ লক্ষ মৌলবাদি। সেই সময় হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে
তাঁদের বাড়িতে আমাকে লুকিয়ে রেখে আমাকে প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন, তাঁদের
মধ্যে একজন শহিদুল আলম।'
'নিচের ছবিগুলো ওঁরই তোলা। আমি আজ তাঁর দুঃসময়ে
তাঁকে চরম অসম্মান আর হেনস্থা থেকে বাঁচিয়ে আনতে পারছি না, সে ক্ষমতা
আমার নেই। আমি শুধু এইটুকু বলতে পারি, শহিদুল আলমের মতো সভ্য, শিক্ষিত, নির্ভীক
মুক্তচিন্তককে ভিন্ন মত প্রকাশের জন্য আজ যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, এ তাঁর
নয়, এ
গোটা দেশের লজ্জা।' 'আজ
শহিদুল আলমের দুঃসময় নয়,
আজ বাংলাদেশের দুঃসময়।'
লেখকঃ-
মুক্তমনা ইসলাম বিদ্বেষী লেখিকা, তাসলিমা নাসরিন।
(এই বিভাগে প্রকাশিত লেখা ও মন্তব্যের দায়
একান্তই সংশ্লিষ্ট লেখক বা মন্তব্যকারীর, কালের কণ্ঠ কর্তৃপক্ষ এজন্য কোনোভাবেই দায়ী
নয়)
খবর বিভাগঃ
মতামত
0 facebook: