13 August 2018

ধৈর্য ধরতে অসুবিধা কী, কোটা আন্দোলনকারীদের কাদের


স্বদেশবার্তা  ডেস্কঃ সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেন, একটি ‘ব্যালেন্সড সিস্টেম হচ্ছে। আজ এগিয়ে গেছে অনেকটা।’

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, কোটা নিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে, তাদের কাজ এগিয়ে গেছে অনেকটাই। শিক্ষার্থীদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

রবিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে এক আলোচনায় সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কথা বলেন কাদের। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে এর আয়োজন করে সরকারপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ‘স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ’।

সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ৫৬ শতাংশ কোটা আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোটা সংরক্ষিত আছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য। তাদের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড়া জেলা ও নারী কোটা ১০ শতাংশ করে আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা আছে পাঁচ শতাংশ। আর প্রতিবন্ধী কোটা আছে এক শতাংশ।

৯০ দশকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা কোটার আওতায় তাদের সন্তানদের আনা হলে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের চেষ্টা করে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন শিবিরপন্থীরা।

এরপর নানা সময় সে আন্দোলন ব্যর্থ হলে এবার বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয় কোটা সংস্কারের নামে। তারা সব মিলিয়ে কোটা ১০ শতাংশ করতে চায়।

গত এপ্রিলে তুমুল আন্দোলনের মধ্যে ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী সংসদে ঘোষণা দেন কোনো কোটা থাকবে না। কিন্তু পরে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণে উচ্চ আদালতের রায় আছে। ফলে প্রধানমন্ত্রীকে সেই অবস্থান থেকে সরতে হয়। ২৭ জুন সেই কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, এই কোটা বাতিল করে তিনি আদালত অবমাননায় পড়বেন।

এরপরও জুলাইয়ের শুরুতে কোটা সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি কমিটি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাদের ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার কথা ছিল। তবে এই কমিটি দেশ-বিদেশের তথ্য সংগ্রহ করছে আর কমিটি তিন মাসের সময় নিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তবে আমি এটুকু বলতে পারি কোটা আন্দোলন যারা করেন, তাদেরকে আমি সুখবর দিতে চাই। কিছু দিন ধৈর্য ধরতে অসুবিধা কী।’

‘একটা ব্যালেন্সড সিস্টেম চালু করার জন্য কিছুটা সময় লাগছে। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের জন্য কিছুটা সময় লাগছে। এটা এখন অনেকদূর এগিয়েছে। আমরাও সমাধানের পথ খুঁজছি। ছাত্রছাত্রীদের হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা এর মধ্যে নানা সময় সময় বেঁধে দিয়ে নানা কর্মসূচি পালনের ডাক দিচ্ছে।

এর মধ্যে রবিবার কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে সরকারকে নতুন করে আলটিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনকারী সংগঠন।

এর জবাবে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। ধমক দিয়ে, আল্টিমেটাম দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার কাছ থেকে সুবিধা আদায় করা যাবে না।

‘আমি তাদেরকে অনুরোধ করব, আস্থা রাখুন শেখ হাসিনার উপর। আমি অনুরোধ করব, কিশোর-কিশোর ছাত্রছাত্রী তাদের ৯ দফা দাবি আমরা মেনে নিয়েছি অক্ষরে অক্ষরে। প্রতিশ্রুতি আমরা পূরণ করব।’

‘আজও একটা আন্ডারপাসের উদ্বোধন হয়েছে। দ্রুত নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনীকে দেয়া হয়েছে। সড়ক পরিবহনের আইন পাসের পথে। কাজেই আমি বলব, অধৈর্য হবেন না, অপেক্ষা করুন সমাধান হবে। সেই অর্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছে।’

স্বাচিপের সভাপতি ইকবাল আর্সনালের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, স্বাস্থ্য সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া, স্বাচিবের মহাসচিব আবদুল আজিজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।


শেয়ার করুন

0 facebook: