28 December 2018

নির্বাচনের বাকি মাত্র এক দিন ‘নির্বাচনে যা জানতে হবে’


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ নির্বাচনের বাকি মাত্র একদিনরবিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টিতে একযোগে ভোটগ্রহণ হবেএকটি আসনে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় ওই আসনের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছেভোট দেওয়ার জন্য একজন ভোটারকে যা যা করতে হবে

প্রথম ধাপঃ ইভিএমের জন্য নির্ধারিত ছয়টি আসন ছাড়া অন্য আসনগুলোতে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হবেভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগে স্লিপ সংগ্রহ করতে হবেযাতে ভোটারের নাম, কেন্দ্র ও সিরিয়াল নম্বর লিখা থাকবেবিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীরা নিজ উদ্যোগে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ভোট স্লিপ সরবরাহ করে থাকেনইউনিয়ন পরিষদ বা চেয়ারম্যানের কার্যালয় থেকে ভোট স্লিপটি সংগ্রহ করতে হবেজাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড ছাড়া শুধু এই স্লিপটি নিয়ে নির্বাচনে ভোট দেওয়া যাবে

দ্বিতীয় ধাপঃ স্লিপ নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রথমেই প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে দেখাতে হবেতিনি কেন্দ্রে থাকা ভোটার তালিকা থেকে ভোটারকে শনাক্ত করবেনভোটারের ব্যাপারে পোলিং এজেন্টদের কোনও আপত্তি না থাকলে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা একটি ব্যালট পেপার ইস্যু করবেনকোনও নারী নেকাব পরে এলে পোলিং এজেন্টদের অনুরোধে একবারের জন্য মুখ খুলে দেখাতে হবেভোটারকে শনাক্ত করার পর পোলিং কর্মকর্তা সেই ব্যালট পেপারে সই বা আঙুলের ছাপ নেবেনএরপর তিনি ভোটারের আঙুলে অমোচনীয় কালির ছাপ দেবেনএকটি সিলমোহর দেওয়া হবে

তৃতীয় ধাপঃ সিল ও ব্যালট পেপার নিয়ে ভোটারকে গোপন কক্ষে যেতে হবেসেখানে পছন্দমতো প্রার্থীর প্রতীকে সিল দিয়ে ভোট নিশ্চিত করবেন ভোটারএমনভাবে কাগজটি ভাজ করতে হবে যাতে সিলের রং অন্য কোনও প্রতীকে না লাগেভাজ করা ব্যালট পেপারটি কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সামনে থাকা ব্যালট বাক্সে ফেলতে হবেসিলমোহরটি কর্মকর্তাদের কাছে ফেরত দিয়ে ভোটার ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করবেন

অসুস্থ বা প্রতিবন্ধীর সঙ্গে থাকতে পারবেন একজনবৃদ্ধ, অসুস্থ বা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে যাতায়াতে সহায়তার জন্য একজন সহায়তাকারী সঙ্গে থাকতে পারবেনসেক্ষেত্রে সহায়তাকারীর সঙ্গে ভোটার আইডি কার্ড থাকতে হবে

টেন্ডার ভোটঃ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে যদি দেখেন আপনার ভোট আগেই দিয়ে দেওয়া হয়ে গেছে, তাহলে হতাশ না হয়ে ভোটার স্লিপ, জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা আঙুলের ছাপ দিয়ে নিজের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারলেই নিজের ভোটটা দিতে পারবেনপ্রিজাইডিং অফিসার তার সই করা ব্যালটে আপনার সিল গ্রহণ করবেন এবং সেটি তার কাছে রেখে দেবেন এবং গণনার সময় এটি যুক্ত করবেনযা টেন্ডার ভোট হিসেবে পরিচিত

ভোটকেন্দ্র যা মানাঃ ভোটকেন্দ্রে ভোট স্লিপ ছাড়া আর কিছুই নেওয়া যাবে নাকোনও ধরনের দাহ্য পদার্থ, ম্যাচ, লাইটার, ধারালো বস্তু এমন সব কিছুই নিষিদ্ধব্যাগ বহনেও নিষেধাজ্ঞা আছেএমনকি মোবাইল ফোনও নিতে পারবেন নাতবে ফোন যদি সঙ্গে নিতে হয় তাহলে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের আগে তা বন্ধ করে প্রবেশ করতে হবেকেন্দ্র থেকে বের হয়ে আবার ফোন ব্যবহার করা যাবেভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে কোনও ভোটার সেলফি বা কেন্দ্রের ভেতরের কোনও ছবি তুলতে পারবে না

ইভিএম এ ভোট দেবেন যেভাবে

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে এবার ভোটগ্রহণ হবেঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, রংপুর-৩, খুলনা-২ ও সাতক্ষীরা-২ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে

বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল নিয়ে গঠিত বিরোধী রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিরোধিতার মধ্যেই গত ২৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দেয় যে এবার ছয়টি আসনের ৯০০ ভোটকেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবেএসব কেন্দ্রে সনাতন ব্যালট পেপার পদ্ধতিতে ভোট দেওয়া যাবে নাভোটগ্রহণ শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইভিএমে ভোট গণনা ও ফলাফল পাওয়া যাবে

ইভিএম ব্যবহারের পদ্ধতিঃ স্মার্ট কার্ড, ভোটার আইডি, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বা আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে ভোটারকে শনাক্ত করবেন প্রিজাইডিং অফিসারভোটকেন্দ্রে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার তথ্য যাচাই করে কনফার্ম বাটনে চাপ দেবেনএর মাধ্যমে গোপন ভোটদান কক্ষে থাকা ডিজিটাল ব্যালট ইউনিটস্বয়ংক্রিয়ভাবে সচল হবে

ভোটদান পদ্ধতিঃ ভোটার গোপন কক্ষে প্রবেশ করার পর ডিজিটাল ব্যালট ইউনিটে ভোট প্রদান করবেনডিজিটাল ব্যালট ইউনিটে বামপাশে প্রার্থীদের প্রতীক ও ডানপাশে নাম থাকবেভোট প্রদানের জন্য পছন্দের প্রতীকের বামপাশে কালো বোতামে চাপ দিতে হবেএতে পছন্দের প্রতীকের পাশের সাংকেতিক বাতি জ্বলে উঠবেভোট নিশ্চিত করতে এর পর ডানপাশের সবুজ বোতামে চাপ দিতে হবে

ভোট দিতে ভুল হলে যা করণীয়ঃ কোনও কারণে ভুল প্রতীকের পাশের বোতামে চাপ দিয়ে দিলে সবুজ বোতামে চাপ দেওয়ার আগ পর্যন্ত সংশোধনের সুযোগ থাকবেভুল সংশোধনের জন্য ডানপাশের লাল বোতামে চাপ দিতে হবেএতে পূর্বের কমান্ড বাতিল হয়ে যাবেভোটার আবারও প্রতীক পছন্দ করার সুযোগ পাবেনসংশোধন শেষে সবুজ বোতাম চেপে ভোট নিশ্চিত করা যাবে


শেয়ার করুন

0 facebook: