![]() |
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসরে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর এমন ছবি হয়তো কোনও ক্যামেরায় ধরা পড়েনি, কিন্তু আহত এবং মৃতদের পরিজনদের বর্ণনায় অন্তত তেমন ছবিই ভেসে উঠেছে মানসপটে। বিপর্যয়ের মধ্যেও এমনই এক ছিনতাইয়ের চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছিল বলে অভিযোগ। একাধিক মৃত ও আহতদের পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেছেন, দুর্ঘটনার সময় তাদের নিকটজনদের মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করে নেয়া হয়েছে। টাকা-পয়সা তো বটেই খোয়া গেছে সোনাদানা, মোবাইলও।
সতের বছরের ছেলেকে হারিয়ে দিশাহারা জ্যোতি কুমারী। তার অভিযোগ, ছেলে সময় গলায় সোনার চেন পরে থাকত। কিন্তু যখন মৃতদেহ সরকারি হাসপাতাল থেকে হস্তান্তর করা হয়, তখন সেই চেন উধাও।
জ্যোতি কুমারীর প্রশ্ন, ‘২০ হাজার টাকা দামের মোবাইল না হয় ছিটকে যেতে পারে, কিন্তু পকেটের মানিব্যাগ, সোনার চেন কোথায় গেল?’
কমল কুমারের বছর ১৯ বছরের ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে রেল লাইনের ধারে ওই দশেরার অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন। ফিরেছেন সেই বন্ধুদেরই কাঁধে চড়ে, লাশ হয়ে। কিন্তু তার দামি মোবাইলের কোনও হদিস নেই, দাবি কমল কুমারের।
আনন্দবাজার জানায়, এদের না হয় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু আহতরাও ছাড় পাননি এই দুষ্টচক্রের হাত থেকে। ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে রাবণ পোড়ানো দেখতে গিয়েছিলেন দীপক নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। মেয়ে ফেরেনি। বাবা-ছেলে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন হাসপাতালে। তার মধ্যেও হাসপাতালেই দীপক জানালেন, ‘ট্রেনের ধাক্কায় নড়াচড়া তো দূর, সাহায্যের জন্য চিৎকারও করতে পারছিলাম না। তার মধ্যেই একজন এসে পকেট হাতড়ে মোবাইল, টাকা-পয়সা যা ছিল, সব নিয়ে চলে গেল।’
চারদিকে কার্যত লাশের স্তূপ। বাঁচার জন্য আর্তনাদ, গোঙানি, চিৎকার। তার মধ্যেও যে কেউ এত নিষ্ঠুর হতে পারে, তা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না মৃতদের আত্মীয় এবং আহতরা। আবার দুর্ঘটনার পরও সেলফি, ভিডিও তোলা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এমনকী রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরাও এ নিয়ে মুখ খুলেছেন।
কাশ্মিরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ টুইটারে লিখেছেন, কি ভয়ানক অমানবিক দৃশ্য! দুর্ঘটনার পরও লোকজন দাঁড়িয়ে ছবি, ভিডিও, সেলফি তুলছেন! প্রায় একই রকম টুইট করেছেন আম আদমি পার্টির নেত্রী প্রীতি শর্মা মেনন-ও।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: