![]() |
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ কুলাউড়ায় কাকে চায় জনগণ? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ না হলেও অসম্ভব নয়। ঐক্যফ্রন্ট গঠনে জনগন আশার আলো দেখতে শুরু করেছে। বিএনপি ছাড়া অন্যান্য দলের নেতৃবৃন্দের ভোটব্যাংক না থাকলেও জাতীয়ভাবে তারা খুবই সম্মানিত ব্যাক্তি। তারা বিএনপির সাথে ঐক্য করায় আমরা সাধারণ জনগন যা ভাবছি তা হলো ঐক্যফ্রন্ট যদি ক্ষমতায় যায় তবে বিএনপি আপন মনে দেশ শাষন করতে পারবে না, ঐক্যফ্রন্টের নেতারা তাদের লাগাম টেনে ধরবেন। বাংলাদেশের জনগন কোন একক দলের আধিপত্য আর চায় না।
জনগন পরিবর্তন চায় তবে আওয়ামীলীগ আর বিএনপির বিকল্প কোন শক্তি না থাকায় পরিবর্তন হচ্ছেনা রাজনৈতিক অচলাবস্থায় আমরা সাধারণ জনগন নির্বাচনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। তবে বর্তমানে আওয়ামীলীগ সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকারে পরিনত হয়েছে। তাই ঐক্যফ্রন্টকেই জনগন রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনে সহায়ক মনে করে।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টে যেসব গুনি নেতৃবৃন্দ যোগ দিয়েছেন তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাই এবং আশা করি তারা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন।
সুলতান মুহম্মদ মনসুরঃ জনাব সুলতান মুহম্মদ মনসুর বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। অনেক জাতীয় নেতার রাজনৈতিক জীবনও তেমন বর্নাঢ্য নয়। তিনি ডাকসুর সাবেক ভিপি, আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক এম পি এবং জাতির জনকের সাহসী সৈনিক। দুর্ভাগ্যক্রমে তার দল আওয়ামীলীগের সাথে অভ্যন্তরীন কারণে দূরত্বের সৃষ্টি হওয়ায় তিনি রাজনীতিতে নিষ্কৃয় হয়ে আছেন প্রায় একযুগ সময় ধরে। এতদিনে কুলাউড়ার তৃনমূল কোন আওয়ামীলীগ কর্মীর সাথে তাঁর রাজনৈতিক সম্পর্ক আর বেঁচে নেই, এমনকি যেসব কর্মীর সাথে তার আত্মার যে সম্পর্ক ছিল তাও অবশিষ্ট নেই। বর্তমানে বিএনপির কর্মীরা যেমন তাঁর প্রতিপক্ষ তেমনি আওয়ামীলীগের কর্মীরাও তার প্রতিপক্ষ।অর্থাৎ কুলাউড়ায় তার ভোটব্যাংক শুন্যের ঘরে। একজন জাতীয় নেতা হিসেবে দেশের যে কোন আসনে বরং তাঁর জনপ্রিয়তা কুলাউড়ার চেয়ে বেশী।
এম এম শাহীনঃ এম এম শাহীন কুলাউড়া ও প্রবাসে এক জনপ্রিয় নাম। তিনি আঞ্চলিক
জনপ্রিয় নেতা। সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম সাইফুর রহমান সাহেবের আহ্ববানে সাড়া দিয়ে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দেন।
প্রবাসে অর্জিত অর্থের প্রায় সবটুকুই ব্যায় করেন এলাকার দুঃখী মানুষের জন্য।কুলাউড়ার জনগনকে নিজ পরিবারের সদস্য করে নেন। অমায়িক আচরণ আর গভীর ভালবাসার বিনিময়ে কুলাউড়ার জনগনও তাকে তাদের পরিবারের সদস্য মনে করেন।তার প্রমান মেলে যখন ২০০১ সালে
বিএনপি তাকে নমিনেশন না দিলে তিনি সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী জনাব সুলতান মুহম্মদ মনসুরের বিরুদ্ধে ৮০০০ ভোটের ব্যাবধানে বিজয়ী হন। কুলাউড়ার জনগন প্রমান করলো ব্যাক্তি শাহীনই তাদের কাছে বড়।
সংগঠনের আইন ভঙ্গের কারণে তাঁর দল বিএনপি জনাব শাহীনকে সাসপেন্ড করে রাখে অনেক বছর। এম এম শাহীন সেই শাস্তি মাথা পেতে নেন। তবে লজ্জিত হওয়ার কোন কারণ ছিলনা। বরং দলই হয়ত ভেতরে ভেতরে লজ্জিত হয়েছে তাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে।
ইতিমধ্যে সুলতান মনসুর বিহীন কুলাউড়ায় প্রায় সকল মানুষই এম এম শাহীনের বন্ধু হয়ে গেছেন।
আমি আশা করবো ঐক্যফ্রন্ট নমিনেশন দান কালে সচেতন থাকবে। শাহীন সহ বিএনপির কোন পরীক্ষিত জনপ্রিয় নেতাকে নমিনেশন বঞ্চিত করবে না।
যেসব আসনে বিএনপির প্রার্থীরা কখনো ভাল করেননি তাদের আসনে ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য দলের নেতাদের নমিনেশন দেয়া উচিত। এসব কঠিন সিদ্ধান্ত ঢাকা থেকে না নিয়ে স্থানীয় কর্মীদের সিদ্ধান্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। জনাব এম এম শাহীনের সাথে দল যেন আবার ভুল না করে। জনাব মনসুর ও জনাব শাহীন চির প্রতিদ্বন্ধী দুই প্রার্থী। মনে রাখতে হবে জনাব শাহীন জীবনের মুল্যবান তিরিশ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন বিএনপিকে সংগঠিত করার কাজে। তাই বিএনপি শাহীন ভাইয়ের সাথে আরেকবার ভুল করলে কুলাউড়াবাসী এমন ভুল মেনে নেবে বলে আমি মনে করিনা।
সরকার যদি ঐক্যজোটের সাত দফা মেনে নিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে রাজি হয় সেক্ষেত্রে শাহীন ভাইকে ঐক্যজোটের যে কোন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে অনুরোধ করেছি।
আমি একজন অরাজনৈতিক ব্যাক্তি, লেখক এবং গীতিকার। জনাব এম এম শাহীন আমার গানের ভক্ত। ভক্ত থেকে বন্ধু। আমিও তার গুনের ভক্ত। আমার বাড়ী কুলাউড়ায় নয়।
লেখকঃ মুহম্মদ সুফের - নিউইয়র্ক, আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশী।
খবর বিভাগঃ
মতামত
মৌলভীবাজার
রাজনীতি
0 facebook: