23 September 2019

যারা ধরা পড়েছে তারা যুবলীগ নয়, তাদের সবাই এক সময় বিএনপি-জামায়াত করতোঃ এইচ টি ইমাম



স্টাফ রিপোর্টার।। চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ধরা পড়া সবাই এক সময় বিএনপি-জামায়াত করতো বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও দলের প্রচার উপকমিটির চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, আমাদের দলে দীর্ঘদিন থেকে একটি দাবি উঠছিল যে এই অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের ভয়ানক ক্ষতি করছে। তাদেরকে এখন আমরা চিহ্নিত করেছি। ইতোমধ্যে যাদের ধরা হয়েছে তারা সবাই অনুপ্রবেশকারী। চিহ্নিত করে দেখা যাচ্ছে সবই এক সময় হয় যুবদল করতো না হলে বিএনপি করতো। না হলে জামায়াত-শিবিরের সদস্য ছিল। কাজেই এদেরকে খুঁজে খুঁজে যেহেতু আমরা বের করে ফেলেছি এ জন্য তাদের পক্ষ হয়ে এতদিন যারা কাজ করছিল সে লোকগুলোও চিহ্নিত হয়ে গেছে।

রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির প্রচার ও প্রকাশনা উপ কমিটির সভার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এসব ঘটনায় যারা মদত দিয়েছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে এইচটি ইমাম বলেন, এখন তো ইনভেস্টিগেশন (তদন্ত) হচ্ছে, এদেরকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ড শেষে তথ্য পাওয়া যাবে। সেই সমস্ত তথ্য নিয়ে বিচার করা হবে যে কার কার কোথায় সম্পৃক্ততা আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও বলেছেন এবং আমাদের সাধারণ সম্পাদক বার বার বলেছেন যে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। সে যেই পর্যায়েরই হোক না কেন। আমাদের নীতি এখানে খুব পরিষ্কার। আমরা পরিচ্ছন্ন রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা দলকে পরিচ্ছন্ন করতে চাই।

চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান সম্পর্কে এসময় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, এটি দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলে আসছে, এটি হঠাৎ করে হয়নি। এগুলোকে সমূলে উৎপাটনের জন্য প্রধানমন্ত্রী অভিযান শুরু করেছেন। সেখানে কে কোন মতের, কে কোন পথের সেটি দেখা হচ্ছে না। আমি বরং মনে করি বিএনপি মহাসচিবের সরকারকে সাধুবাদ জানানো দরকার।

তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, কেঁচো খুড়তে গিয়ে নাকি সাপ বেরিয়ে আসছে। ওনাদের যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উনি তো বড় অজগর সাপ। যে সব গিলে খেয়ে ফেলে। কারণ, তার নেতৃত্বেই তো হাওয়া ভবন করা হয়েছিল। হাওয়া ভবন খুলে সেখানে দশ পারসেন্ট কমিশন বাণিজ্য করা হতো। খোয়াব ভবন খুলে সেখানে আমোদ-ফুর্তি করা হতো। সুতরাং বিএনপির তো এ নিয়ে কথা বলার কোনও নৈতিক অধিকারই নেই।

সরকারকে জুয়াড়ি সরকারবলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখার পরামর্শ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি ওনাকে বলবো যে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখার জন্য। বাংলাদেশের ক্যাসিনো কালচার শুরু করেছিল কে? বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মদ, জুয়া, হাউজি বন্ধ করেছিলেন। সেগুলো আবার চালু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। মদ, জুয়া, হাউজিসহ এবং উদ্দাম নৃত্য এইগুলো আবার জিয়াউর রহমানই চালু করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় যখন খালেদা জিয়া ৯১ সালে সরকার গঠন করেন, তখন কিন্তু এই ক্যাসিনো কালচার আবার ষোলকলায় পূর্ণ করেন। মির্জা আব্বাস, সাদেক হোসেন খোকা এবং মোসাদ্দেক হোসেন ফালু ওনারা বিভিন্ন ক্লাবের ক্যাসিনোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তারাই এগুলো আবার শুরু করেছিলেন।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে দেখেছি এবং অনেকেই বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে যে আয়কর রিটার্ন দিয়েছেন সেখানে নাকি তিনি তার আয়ের একটি উৎস দেখিয়েছেন  ক্যাসিনো থেকে আয়। অনেকেই এই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নিশ্চয়ই আপনারাও সেটি লক্ষ্য করেছেন।

সরকারের পদত্যাগ দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এই দাবি গত দশ বছর সময় ধরে শুনে আসছি। আসলে তো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের ব্যর্থতার দায় নিয়ে বহু আগেই মহাসচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করার দরকার ছিল।

হাছান মাহমুদ বলেন, আরাফাত রহমান কোকোর টাকা ধরা পড়েছে সিঙ্গাপুরে এবং তার পাচারকৃত ২০ কোটি টাকা বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বিএনপির অর্থমন্ত্রী কালো টাকা সাদা করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজে কালো টাকা সাদা করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন আজকে সাজা ভোগ করছেন কেন? এতিমের টাকা এসেছে এতিম খানার জন্য। সেই টাকা এতিমখানার জন্য ব্যয় না করে তিনি তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেছেন। সেই কারণে তিনি সাজা ভোগ করছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলবো আয়নায় নিজের চেহারা দেখার জন্য।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ কমিটির সদস্য ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন, সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেসসচিব আশরাফ সিদ্দিকী বিটু, আনিস আহম্মেদ প্রমুখ।


শেয়ার করুন

0 facebook: