29 November 2018

ড. কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগনামা খতিয়ে দেখছে বিভিন্ন সংস্থা

ফাইল ছবি
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছেঅভিযোগ খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থাআরও অভিযোগড. কামালের স্ত্রী হামিদা হোসেনের নামে সরকারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া প্লটের ওপর নির্মিত বাড়ি শর্ত ভেঙে ভাড়া দিয়েছেন তার দুই মেয়েবিষয়টি তদন্ত করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে এসব তথ্য জানা গেছে

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কর ফাঁকির অভিযোগটি অস্বীকার করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, তার নামে এমন কোনো ব্যাংক হিসাব নেই যেটি তিনি কর বিবরণীতে প্রদর্শন করেননিযে অ্যাকাউন্টের কথা বলা হচ্ছে সে সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না

লিজ নেওয়া সরকারি জমির প্লট ভাড়া দেওয়া প্রসঙ্গে ড. কামাল বলেন, ‘প্লটটি বহুদিন ধরেই ভাড়া দেওয়া রয়েছেএটি বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই...নতুন কোনো বিষয় নয়রাজনৈতিক কারণে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনারা ভালো জানেনআমার কোনো মন্তব্য নেই’  সূত্র জানায়, ড. কামাল হোসেন সার্কেল ১৬৪, ঢাকা কর অঞ্চল ৮-এর একজন করদাতাবিভিন্ন করবর্ষে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় দুটি, সিটি সেন্টারে দুটি (যার একটি ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট) এবং আইএফআইসি ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্টসহ মোট পাঁচটি অ্যাকাউন্টে জমা টাকার ওপর কর পরিশোধ করেছেনতবে কর গোয়েন্দারা এই আইনজীবীর নামে এমন একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পান যেটিতে জমাকৃত টাকার ওপর তিনি কোনো কর পরিশোধ করেননিএমন কি ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে এনবিআরে কোনো তথ্যও দেননিঅনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসনামে করা, যার নং-০১-১৮২৫৪৪৫-০৩এখানে তার পেশাগত ফি জমা হলেও আয়কর রিটার্নে এই আয় দেখানো হয়নি২০১২ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ওই অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা জমা হয়শুধুমাত্র গত অর্থবছরে সেখানে প্রায় ১১ কোটি ১২ লাখ টাকা জমা হয়েছে এবং বছর শেষে নগদ স্থিতি ছিল ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা প্রায়অভিযোগ উঠেছে এই বিপুল পরিমাণ আয় তার পেশাগত ফি, যা আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করেননি এবং সেই ব্যাংক হিসাবটিও তিনি গোপন করেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদেরসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অপ্রদর্শিত ব্যাংক হিসাব থেকে প্রাপ্ত ব্যাংক স্থিতি ড. কামাল হোসেনের সম্পদ ও দায় বিবরণী হিসেবে বিবেচিত হবে; কিন্তু তিনি সেটি তার কর বিবরণীতে প্রদর্শন করেননিওই সম্পদ গোপন করে কর ফাঁকির দায়ে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।  জানা গেছে, ড. কামালের কর ফাঁকির অভিযোগটির বিষয়ে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে দুদকগত ১৯ নভেম্বর এই আইনজীবীর আয়কর রিটার্নের বিষয়ে জানতে এনবিআর-এ চিঠি পাঠিয়েছে ওই কমিশন


শর্ত ভেঙে বাড়ি ভাড়া : জানা গেছে, গুলশানের ৮০ নম্বর রোডে এনই (আই) ৯১ ব্লকে ১ বিঘা ১২ কাঠা আয়তনের ৫ নং প্লটটি ৭৭ হাজার ৭শ টাকায় ১৯৭০ সালে লিজ হস্তান্তর করা হয় ড. কামালের স্ত্রী হামিদা হোসেনের নামে১৯৯৮ সালে ইমারতসহ ওই প্লটটি দুই মেয়ে সারা হোসেন ও দীনা হোসেনের নামে দানসূত্রে নামজারি করা হয় বলে জানা যায়লিজ গ্রহীতা হিসেবে সারা হোসেন ও দীনা হোসেন ওই প্লটটি একটি দূতাবাসের কাছে ভাড়া দিয়েছেনরাজউক সূত্রগুলো জানায়, শর্ত ভঙ্গ করে আবাসিক প্লট ব্যবহারের পরিবর্তে বাণিজ্যিক স্বার্থে দূতাবাসকে ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি লিজ দলিলের ৮ ও ১৫ নং শর্তের পরিপন্থীএ বিষয়ে তাদের (ড. কামালের দুই মেয়েকে) নোটিসও দেওয়া হয়েছেগত ২৩ অক্টোবর রাজউক-এর সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) স্বাক্ষরিত নোটিসটি লিজ গ্রহীতাদের কাছে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে


শেয়ার করুন

0 facebook: