![]() |
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ডাকসু) ও হল নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থীর বয়স
সর্বোচ্চ ৩০ করার প্রস্তাব করেছে গঠনতন্ত্র সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটি। এছাড়া ভোটার ও প্রার্থীদের অবশ্যই
অনার্স, মাস্টার্স
অথবা এমফিলের অধ্যয়নরত হতে হবে। তবে
যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়নি অথবা অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে এসে
মাস্টার্স বা এমফিল করছেন তারা ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন না। অতীতের ন্যায় ভোট কেন্দ্র হবে হলগুলোতেই। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের জন্য
গঠনতন্ত্র ‘যুগোপযোগী’ করতে
প্রয়োজনীয় সংশোধনী ও পরিমার্জন কমিটি এসব প্রস্তাব দিয়েছে।
কমিটির একাধিক সদস্য এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ নিয়ে পর্যালোচনা
শেষে গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত হবে। সিনেটের
এ বৈঠকে প্রথমবারের মতো ডাকসু ও হল নির্বাচনের আচরণবিধিও চূড়ান্ত হবে। এ বিষয়ে মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরতে ইতিমধ্যেই
সিন্ডিকেট সস্যদের কাছে পত্র পৌঁছে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির
সদস্য ও রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, গঠনতন্ত্র
প্রণয়ন কমিটি বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে,
বিশেষভাবে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে কিছু প্রস্তাব
তুলে ধরেছে। যারা
ভোটার তারাই প্রার্থী হতে পারবে। আমরা
ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা অনার্স,
মাস্টার্স ও এমফিলে অধ্যয়নরতদের কথা বলেছি। বয়সসীমা ৩০ করার প্রস্তাব করেছি। ভোটার ও প্রার্থীদের অনার্স প্রথম বর্ষে
ঢাবিতে ভর্তি হতে হবে। যদি
কেউ একাধিক মাস্টার্স করে,
তারাও প্রার্থী ও ভোটার হতে পারবে।
পড়াশোনা হতে হবে
ধারাবাহিক। গ্যাপ
থাকবে না। পিএইচডিতে
অধ্যয়নরতরা ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন না। সান্ধ্যকালীনে অধ্যয়নরতদের বিষয়ে তিনি
বলেন, এ
নিয়ে আমরা কথা বলিনি। সিন্ডিকেট
চূড়ান্ত করবে। গঠনতন্ত্র
নিয়ে তিনি বলেন, গঠনতন্ত্রে
মৌলিক পরিবর্তনের এখতিয়ার আমাদের নেই। শুধু
সুপারিশ করেছি। চূড়ান্ত
সিদ্ধান্ত নেবে সিন্ডিকেট।
কমিটির আহ্বায়ক ও
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ বলেন, ৪টি
বৈঠকের পর আচরণবিধির খসড়া করা হয়েছে। ছাত্র
সংগঠনগুলো যে প্রস্তাব দিয়েছে আমরা সেগুলোও দেখেছি। সিন্ডিকেট বৈঠকে আচরণবিধি চূড়ান্ত হবে। একই বৈঠকে ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র
চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন ৫ সদস্যের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর
রহমান।
এমফিল শিক্ষার্থীদের
প্রার্থী হওয়ার সুযোগ এবং বয়সসীমা ৩০ নির্ধারণ করায় শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ব্যাহত
হতে পারে বলে আশঙ্কা সাধারণ শিক্ষার্থীদের। তারা
বলছেন, কয়েকটি
ছাত্র সংগঠনের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত। প্রশাসন
ছাত্র সংগঠনগুলোর যে ৫২ শীর্ষ নেতাকে চিঠি দিয়েছে তাদের মাত্র ৬ জন অনার্স ও
মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। ফলে
ছাত্রলীগ, ছাত্রদল
ও কয়েকটি বাম সংগঠনও অনার্স ও মাস্টার্সের বাইরেও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ চায়।
এছাড়া ছাত্রলীগ ২৯ বা ৩০
বছরের একটি বয়সসীমা করার দাবি জানিয়েছিল। সেজন্যই
এমন প্রস্তাব এসেছে। ডাকসুর
দাবিতে আন্দোলনতর শিক্ষার্থীদের আহ্বায়ক এবং গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের
শিক্ষার্থী মো. মাসুদ আল মাহদী বলেন, প্রশাসন যদি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে
শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে না।
বর্তমান বাস্তবতায় একজন
ছাত্র নিয়মিত অধ্যয়ন করলে ২২-২৩ বছরের মধ্যে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন হয়। আর এ নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই ছাত্রদের
স্বার্থ ভালো বুঝবে। এর
ফলে হলগুলো বহিরাগত ও অছাত্রমুক্ত করার প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে
করেন তারা। কিন্তু
৩০ বছরের বয়সসীমা হলে মাস্টার্স শেষ করেও অবৈধভাবে হলে থাকার সুযোগ পাবেন অনেকেই।
একাডেমিক ভবনে ভোট
কেন্দ্র চায় সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠন : ছাত্র ফেডারেশন ভোট কেন্দ্র হলের ভেতরে না
রেখে অনুষদে রাখার দাবি জানিয়েছে। একই
সঙ্গে গঠনতন্ত্র ও আচরণবিধি সংশোধনীর বিষয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রস্তাব বাস্তবায়নের
দাবি তাদের। সোমবার
দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষে এ দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের
সভাপতি জাহিদ সুজন বলেন,
‘ডাকসু নির্বাচনে হলে নয়, অনুষদে ভোট কেন্দ্র চাই’, এ
আহ্বানে ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু
করেছি। ৩ দিন
পরীক্ষামূলকভাবে একটি হল,
কলা,
ব্যবসায় শিক্ষা ও চারুকলা অনুষদের কয়েকটি বিভাগের কয়েকশ’ শিক্ষার্থীর
স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছি। হলে
একচেটিয়া দখলদারিত্ব ও ভীতিজনক পরিস্থিতির কারণে ডাকসু নির্বাচনে অনুষদে ভোট
কেন্দ্র করার পক্ষে জোরালো সমর্থন দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে হলের বাইরে ভোট
কেন্দ্র স্থাপন, গেস্টরুমের
নামে শিক্ষার্থী নির্যাতন বন্ধ ও ২৮ বছরের ছাত্রবিমুখ সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের
দাবি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: