ফাইল ছবি |
রোববার (২১ জুলাই) দুপুরে দেওয়া প্রথম স্ট্যাটাসে তসলিমা লিখেছেন- ‘ট্রাম্পকে প্রিয়া সাহা যা বলেছেন, কমই বলেছেন। খুব মাপা সময়। ভয়াবহতা বর্ণনা করার সময় তাই পাননি। মিলিয়নকে লক্ষ ভেবেছেন নাকি মিসিংকে ডিস্যেপিয়ার্ড বলেছেন, সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো হিন্দুদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বাংলাদেশে চলছে, নির্যাতন চলছেই। সে কারণে নিরাপত্তার অভাবে হিন্দুরা দেশ ছাড়ছে। এটা মানুষ জানুক। হাসিনা এসেও যে সংখ্যালঘুকে নিরাপত্তা দেননি, এটাও জানুক মানুষ।'
মানুষ যে দেশ ছাড়ছে, তার প্রমাণ দেশেই। প্রিয়া সাহা যদি নির্ভুল পরিসংখান দিতেন --১৯৫১ সালে যে আদমশুমারি ছিল তাতে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ২২ শতাংশ। ১৯৭৪ সালের আদমশুমারিতে এটা নেমে আসলো ১৪ শতাংশে। আর সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারিতে এটা নেমে এসেছে ৮ দশমিক ৪ শতাংশে। তাহলে কি খুব চমৎকার শোনাতো? মোটেও না।
দ্বিতীয় স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন- ‘হিন্দুর কথা হিন্দু ভাবে, মুসলমানের কথা মুসলমানরা ভাবে, খ্রিস্টানদের কথা খ্রিস্টানরা ভাবে, ইহুদিদের কথা ইহুদিরা ভাবে -- এটা ভুল কথা। সেই হিন্দুরাই দেশের এবং দেশের বাইরের হিন্দুরা ভালো আছে না কি মন্দ আছে, এ নিয়ে ভাবে, যারা হিন্দু নিয়ে রাজনীতি করে, বা সরাসরি রাজনীতি না করলেও সেই রাজনীতি দ্বারা যাদের মগজধোলাই হয়েছে । একই রকম মুসলমানরাও, কোনও মুসলমানই মুসলমানের জন্য ভাবে না, যদি মুসলমান নিয়ে রাজনীতি না করে বা সেই রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত না হয়। একই রকম খ্রিস্টান ইহুদি বৌদ্ধ বাহাই রাও।
মানুষ নিজেকে নিয়ে ভাবে, নিজের স্বার্থ নিয়ে। ভালো থাকতে হলে, আরামে আহলাদে স্বছন্দে বা প্রাচুর্যে থাকতে হলে, যাদের সংগে সম্পর্কটা ভালো রাখতে হয়, তাদের সংগে রাখে, যাদেরকে খাতির করতে হয়, তাদের করে, তারা অন্য ধর্মের হলেও, অন্য জাতের হলেও, অন্য বর্ণের হলেও, অন্য বিশ্বাসের হলেও।
আমি হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, ইহুদি অনেককেই জিজ্ঞেস করে দেখেছি, তাদের সম্প্রদায় দেশে বা দেশের বাইরে দুঃখে কষ্টে আছে এ নিয়ে তাদের কোনও দুর্ভাবনা নেই। খুব অল্প সংখ্যক মানুষই সব মানুষকে নিয়ে ভাবে, সব মানুষের দুর্দশা ঘোচাতে চায়। সেই অল্প সংখ্যক মানুষের আসলে কোনও ধর্ম, বর্ণ, জাত থাকে না, তারা এসবের উর্ধে উঠে যায় বলেই উদার হতে পারে, নিঃস্বার্থ হতে পারে।’
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
ভারত
0 facebook: