ছবিঃ পুলিশ কর্ওমী সিরাজুল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় |
আন্তর্জাতিক ডেস্ক॥ তৎকালীন যুব কংগ্রেসনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাকরণ অভিযানের ডাক দেন, ব্রেবন রোড দিয়ে মিছিল এগোতেই পথ আটকে দাঁড়ায় পুলিশ, কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হয়৷ লাঠিচার্জের নির্দেশ দেয় পুলিশ৷ পুলিশের লাঠির বাড়িতে মাথা ফাটে মমতার৷ বিনা প্ররোচনায় লাঠিচার্জের প্রতিবাদ করেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের এসআই নির্মল বিশ্বাস, সার্জেন্ট প্রদীপ সরকার ও কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম৷ মমতাকে বাঁচাতে সেদিন বিদ্রোহী সিরাজুল পুলিশ কর্তাদের দিকেই বন্দুক উঁচিয়ে প্রতিবাদ করেন৷ মুহূর্তেই মমতাকে আড়াল করেন সিরাজুল৷ ২৬ বছর আগে যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৯৩ সালে বিক্ষোভ সমাবেশ।
তৎকালীন কংগ্রেসনেত্রী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনা পুলিশকর্মী সিরাজুল৷ পুলিশের বন্দুকের মুখ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঁচানোর মাশুলও গুনতে হয়েছে তাঁকে, পুলিশ লাইন থেকে বরখাস্ত করা হয় সিরাজুল ইসলামকে।
উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার ইছাপুর ভদ্রডাঙ্গা গ্রাম৷ চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর কোনওক্রমে মা-বাবা-ভাই ও বোনকে নিয়ে সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন সিরাজুল৷ পুলিশের চাকরি হারিয়ে সাইকেলে মুদিখানার জিনিস ফেরি করে সংসার চালান৷ দিনে ১০০-১৫০ টাকার উপার্জনেই চলে নুন আনতে পানতা ফোরানো সংসার৷ ফেরি করে সংসার চালালেও নিজের অধিকার রক্ষার লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন ঘাম-রক্ত দিয়ে৷
১৮ বছর আইনি লড়াই করার পর চাকরি ফিরে পান নির্মল বিশ্বাস৷ সার্জেন্ট প্রদীপ সরকারকে অবসর নিতে বাধ্য করা হয়৷ আর সিরাজুল ইসলাম হাইকোর্টে মামলা করেও বেশিদিন লড়তে পারেননি৷ পরে কলকাতার একটি সংবাদমাধ্যমের সহযোগিতায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সিরাজুল ইসলামকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে নিয়ে যান৷ সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে সিরাজুল ইসলামের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো চাকরি পাননি সিরাজুল।
সেদিনের লড়াকু নেত্রী আজকের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। মাঝখানে কেটে গেছে অনেকটা সময় ১৯৯৩-২০১৯ এতদিন কেটে গেলেও সিরাজুল ফিরে পাননি তার চাকরি। বাবা মায়ের আশা মমতা বন্দোপাধ্যায় যদি একবার যদি ছেলের চাকরিটা ফিরিয়ে দেন তবে পরিবারটি বেঁচে যায়। যে মমতা বন্দোপাধ্যায় কে বাঁচাতে গিয়ে চাকরি গিয়েছে তার ছেলের সেই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলো গোটা পরিবার। কিন্তু দিন বদলালেও বদলাইনি সিরাজুলের ভাগ্য সিরাজুলের পরিবারের ভাগ্য। আগামি দিনে কি ভালো হবে সিরাজুলের ভাগ্য ? সে দিকেই তাকিয়ে গোটা পরিবার।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
ধর্মীয় বিদ্বেষ
ভারত
0 facebook: