![]() |
ছবিঃ চক্রান্তের স্বীকার আব্দুস সবুর মণ্ডল ও মটরবাইক এক্সিডেন্টে মৃত তিতাস |
চীফ রিপোর্টার।। আব্দুস সবুর মণ্ডল নামক এক অতিরিক্ত সচিব ফেরীকে দেরী করতে বলায় নাকি তিতাষ ঘোষ নামক রোড এক্সিডেন্টে আহত এক হিন্দু কিশোর মারা গেছে।
ব্যক্তিগতভাবে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভালোমন্দ বিচার করার পক্ষপাতি আমি নই। বিশেষ করে বর্তমানে ‘গুজব ছড়ানোর মিডিয়া’ হঠাৎ করে কাউকে ভালো বানায়, আবার হঠাৎ করে কাউকে খারাপ বানায়, সেখানে তাদের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য কি তা না জেনে আবেগে তাদের প্রোপাগান্ডায় গা ভাসাতে আমি রাজি নই। কারণ অনেক ক্ষেত্রে গুজব রটিয়েও গণপিটুনির মত সাধারণ পাবলিককে তারা তাদের শত্রুর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। তাই মিডিয়ার কথা শুনে নাচার আগে পুরো বিষয়টি যাচাই করা জরুরী।
আজকে গোড়া আওয়ামীলীগের কিছু ফেসবুক আইডি থেকে আব্দুস সবুর মণ্ডলের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেয়া হয়েছে। এমনকি তার ফেসবুক আইডি দিয়ে তাকে ব্যক্তিগত আক্রমন করতে বলা হয়। তখন আমার কাছে সন্দেহ হয়। কারণ প্রশাসনে এমন কিছু সৎ লোক থাকে, যার কারণে অনেকে দুর্নীতি করতে পারে না, এমনকি সরকার দলীয় লোকেরাও না। এদেরকে আওয়ামীলীগের লোকজনও চায় সরিয়ে দিতে। সামান্য হলেও প্রশাসনে এমন লোক আছে।
আবার ডেমোক্র্যাটপন্থী মিডিয়া এই আব্দুস সবুর মণ্ডলকে দিয়ে হয়ত কোন সময় কোন কাজ করাতে চেয়ে সফল হয়নি, তাই একটা ঘটনাকে পূজি করে তাকে হেনস্তা বা চাকুরী চ্যূত করতে চাইছে। এই ঘটনার পুরোটাই গুজব, আড়ালে তৃতীয় পক্ষের স্বার্থ, আর গণপিটুনী দেয়ার ভূমিকায় আছে হুজুগে মাতাল সাধারণ জনগণ।
অতঃপর আমি আব্দুস সবুর মণ্ডল নামের কর্মকর্তার নামে ফেসবুক খুজে যেটা বুঝলাম, এই লোক এক সময় চাদঁপুরের ডিসি ছিলেন। উনি ছিলেন জেলা ব্রান্ডিং এর প্রথম রুপকার। উনার হাত ধরেই অনেক বড় সাফল্য আসে চাদঁপুরে। উনি ছিলেন তখনকার দেশসেরা ডিসি। খোজ নিয়ে দেখি যে কয়েকটা যায়গায় উনি ছিলেন, সেখানে সৎ, বিবেকবান লোক হিসেবেই ছিলেন, তাছাড়াও চাঁদপুরবাসি আজিবন ঋনি থাকবে ওনার কাছে কারণ জেলা ব্যান্ডিং একটা বিগ ইস্যু যা উনার দ্বারাই সম্ভব হয়েছিলো। ইলিশ এর বাড়ি চাঁদপুর নামের প্রবক্তা ছিলেন উনি যা চাঁদপুরবাসির জন্য অত্যন্ত গর্বের। এছাড়াও ফুটপাত দখল মুক্ত করনে উনার ভুমিকা ছিল প্রশংসনীয়। উনার সময় উনাকে চাঁদপুরের হিরের টুকরো বলা হতো। চাঁদপুরের অধিকাংশ মানুষের সাথে কথা বলে যানা গেছে যে, জেলা প্রসাশক হিসেবে তার মত দ্বিতীয় আর কেউ হয়নি। তিনি চাদঁপুরটা অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছেন। উনি সেরা জেলা প্রশাসকের পুরস্কারও জিতেছেন সেসময়।
একজনের ২০১৭ সালের ফেসবুক স্ট্যাটাস পেলাম যেখানে বলা হয়েছেঃ-
“ইসলামের দৃষ্টিতে সততা বলতে যা বুঝায় জনাব আব্দুর সবুর মন্ডল সাহেবের মধ্যে তার পুরোটুকুই দেখেছি। জেলা প্রশাসকের চেয়ারে বসে ১০০% সততা ধরে রেখে কাজ করা সত্যিই কঠিন - তবে অসম্ভব নয়। সেটা ওনি প্রমান করলেন। ওনার সাথে একাধিক কাজ করার সুযোগ হয়েছে এবং তখনই তার প্রমান পেয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ! বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যে জাতীয় সৎ অফিসার দিয়ে দেশ চালাতে চাচ্ছেন-ওনি তেমনি একজন। ইনশাল্লাহ! ওনি একদিন মূখ্য সচিব হবেন! দোয়া রইল!
এবার আসি খোলা আলোচনায়ঃ- দেশে প্রতিদিন কতো মুসলিম শিশু মারা যাচ্ছে কতো পুলিশ, র্যাব, ডাক্তার, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কারনে অথচ কারো কোন মাথাব্যথা নাই, অথচ এক্সিডেন্টের কারনে এক হিন্দু ছেলের মৃত্যু যেনো দেশের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি যুব সমাজ আজ পেট্রো ডলারে পরিচালিত মিডিয়াকে পাগল করে তুলেছে।
আমি দুইটা প্রশ্ন করবো সাথে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরবো অস্তিত্বসচেতন বাংলাদেশী মুসলমানদের কাছেঃ
প্রথমটা ডাক্তার ভাইদের কাছেঃ- “তিতাস ঘোষ (১৩) বুধবার মটর সাইকেল অ্যাক্সিডেন্টে মাথায় আঘাত পেয়ে খুলনার এক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলো। সেখারকার ডাক্তাররা বলেন, তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে মাথায় অপরেশন করতে হবে। প্রথমে এয়ার আম্বুলেন্সে নেয়ার কথা থাকলেও পরে বৃহস্পতিবার তাকে লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স করে ঢাকায় যাচ্ছিলো তার আত্মীয় স্বজন। লাইফ সাপোর্ট এম্বুলেন্সের ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। সেই অ্যাম্বুলেন্সটি মাদারিপুর ঘাটে ফেরীর জন্য ৩ ঘণ্টা বিলম্ব করে। ফেরী ছাড়ার আধা ঘন্টা পর ছেলেটি মারা যায়। সর্বমোট সাড়ে ৩ ঘন্টা। ধরে নিলাম লাইফ সাপোর্ট এম্বুলেন্সটি ঢাকা মেডিকেলে এসে পৌছালো ৩ ঘন্টার মধ্যে। কথা হলো আধা ঘণ্টার মধ্যে তিতাস ঘোষকে লাইফ সাপোর্টেড থেকে বের করে ব্রেনে অস্ত্রপচার করা যেতো কি না? আর করলেও তার বেচে থাকার সম্ভবনা কত পার্সেন্ট? একদম ডাক্তারি ভাষায় বিষয়টি ব্যখা করে বলবেন।
দ্বিতীয় প্রশ্নটা আম জনতার কাছেঃ- “তবে উত্তরটা অবশ্যই ডাক্তারদের থেকে উত্তর জেনে নিয়ে তারপর দিবেন। ডাক্তারদের বক্তব্য শুনার পর আজকে প্রথম আলোর সহ সম্পাদক মিজানুর রহমান (যিনি মার্কিন দূতাবাসের সাথে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন) এর লেখা কলাম, যার শিরোনাম – “তিতাস একটি হত্যাকাণ্ডের নাম” পড়বেন (https://bit.ly/2GCwAEa)।
এরপর ৩টি জিনিস মেলাবেন-
১. তিতাস ঘোষ = বিশেষ ধর্মের(হিন্দু) অনুসারি।
২. অভিযুক্ত বিবাদী = একজন সরকারী (রেয়ার সৎ) কর্মকর্তা বা সরকারের অংশ (যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল) এবং
৩. মিজানুর রহমান = মার্কিন দূতাবাসের অতি ঘনিষ্ট জন, যে বিষয়টিকে হত্যাকাণ্ড বলে প্রচার করতেছেন।
এখন কথা হলোঃ- “তিতাসের ঘটনা কি প্রিয়া সাহার নালিশ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে কি না, সে সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানার অপেক্ষায় রইলাম।
পরিশেষে একটি কথা বলেই শেষ করছি, তিতাস ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। এই বয়সেই মোটরসাইকেল আরোহী। আর এই বয়সেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পথে মাদারীপুর ফেরীতে সাড়ে-তিন ঘন্টা আটকা পড়ে মারা যায়।
এই মৃত্যু নাকি একজন যুগ্ন-সচিবের জন্য অপেক্ষায় থাকা ফেরীর জন্যই হয়েছে। যুগ্ন-সচিব কি জেলা প্রশাসককে সাড়ে-তিনঘন্টা ফেরী আটকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন?
পরিশেষে একটি কথা বলেই শেষ করছি, তিতাস ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। এই বয়সেই মোটরসাইকেল আরোহী। আর এই বয়সেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পথে মাদারীপুর ফেরীতে সাড়ে-তিন ঘন্টা আটকা পড়ে মারা যায়।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
হিন্দু সমাচার
0 facebook: