ঘুষখোর হিন্দুত্ববাদী সাবরেজিস্ট্রার সুব্রত |
স্টাফ রিপোর্টার।। সিরাজগঞ্জের শাহ’জাদপুর উপজে’লা সাবরেজিস্ট্রার সুব্রত কুমা’র দাসের বি’রুদ্ধে ঘুষ ছাড়া কোনো দলিল স্বাক্ষর না করার অ’ভিযোগ উঠেছে। এখানে যোগদানের পর থেকেই দলিল প্রতি সে এক হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে থাকে। তার কাছে জি’ম্মি সাধারণ জনগণ ও দলিল লেখকরা।
এ নিয়ে তার বি’রুদ্ধে আ’ন্দোলনও হয়েছে কয়েক দফা। কিন্তু সে অদৃশ্য ক্ষমতা বলে পরিস্থিতি নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে নির্বিঘ্নে ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রেজিস্ট্রি অফিসে সুব্রত কুমা’র দাসের ঘুষ নেয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় নতুন করে সে আলোচনায় এসেছে।
গত ১৫ আগস্ট রাতে উপজে’লা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি মুহম্মদ সোহেল রানা তার ফেসবুক আইডি থেকে ঘুষ নেয়ার একটি ভিডিও পোস্ট করেন। তারপর থেকে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ এবং ব্যক্তিগত আইডিতে শেয়ারের মাধ্যমে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে সমালোচনার ঝড় উঠতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সুব্রত কুমা’র দাস শাহ’জাদপুরে যোগদানের পর থেকেই দু’র্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে শাহ’জাদপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিস। যেখানে হেবার ঘোষণাপত্র দলিলের জন্য সরকারি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৪০ টাকা ও এনফি ২৪০ টাকা। সেখানে সরকারি ফি ব্যতীত প্রতিটি দলিলের জন্য সর্বনিম্ন ঘুষ হিসেবে নেয়া হচ্ছে ১৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
গত ২৭ আগস্ট শাহ’জাদপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দলিল লেখকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, দলিল প্রতি কমপক্ষে ১৫০০ টাকা দিতে হয়। না দিলে নানা সমস্যা সৃষ্টি করে। আর এই টাকাগু’লি সাবরেজিস্ট্রারের পক্ষে গ্রহণ করে সুমন নামে একজন নকল নবিশ। এ ব্যাপারে সুমনকে জিজ্ঞেস করা হলে সে কোনো সদুত্তর দিতে না পেরে বলে এ বিষয়ে স্যারের সঙ্গে আপনারা কথা বলেন।
ভুক্তভোগী কায়েমপুর ইউনিয়নের ব্রজবালা গ্রামের মুহম্মদ মানিক বলেন, আমি একটি হেবার ঘোষণাপত্র দলিল রেজিস্ট্রি করতে এলে প্রথম দিন আমাকে নানা অজুহাতে দলিল রেজিস্ট্রি না করে পরে আবার আসতে বলে। আমি পরবর্তীতে অ’তিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা উৎকোচ দিতে রাজি হলে আমা’র দলিলটি রেজিস্ট্রি করে দেয়।
তথ্য অনুসন্ধানে শাহ’জাদপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সাবরেজিস্ট্রার সুব্রত কুমা’র দাস ও সুমনের অ’বৈধ উৎকোচ বিনিময়ের ভিডিও পাওয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়- সাবরেজিস্ট্রার সুব্রত কুমা’র দাস নিজেই একজন দলিল লেখকের কাছ থেকে উৎকোচ হিসেবে ১৫০০ টাকা নিচ্ছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি দলিলের উৎকোচ বাবদ আনিসকে প্রথমে তিন হাজার টাকা দিলে আনিস ওই দলিল লেখককে বলেন- স্যার তিন হাজার ৫০০ টাকা দিতে বলেছেন। পরে দলিল লেখক টাকা না দিয়ে সাবরেজিস্ট্রারকে ফোন দিতে বললে আনিস সঙ্গে সঙ্গে সাবরেজিস্ট্রার সুব্রত কুমা’র দাসকে ফোন দিয়ে কথা বলে তিন হাজার টাকা ফেরত দিয়ে বলেন তিন হাজার ৫০০ টাকার কমে হবে না। বাধ্য হয়ে উক্ত দলিল লেখক তিন হাজার ৫০০ টাকা দেন।
এ বিষয়ে শাহ’জাদপুর উপজে’লা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি মুহম্মদ সোহেল রানা বলেন, আমি নিজে তাকে দলিল সম্পাদনের জন্য কয়েক দফা উৎকোচ দিয়েছি। আমি বিষয়টি প্রকাশ করায় আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমি জীবনের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবরেজিস্ট্রার সুব্রত কুমা’র দাস বলে, আমা’র অফিসে কোনো প্রকার ঘুষ নেয়া হয় না। যে ভিডিওগু’লি ভাইরাল হয়েছে সেগুলো আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁ’সানোর জন্য করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জে’লা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মুহম্মদ মঞ্জুরুল ইস’লাম বলেন, শাহ’জাদপুরের সাবরেজিস্ট্রার সুব্রত কুমা’র দাসের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি আমা’র নজরে আসে। আমি গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে ত’দন্ত শুরু করেছি। ত’দন্ত রিপোর্টটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ
জাতীয়
হিন্দু সমাচার
0 facebook: