স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ পুত্রসন্তানের
আশায় দ্বিতীয় বিয়ে করবেন বাবা। দুই মেয়ে বাবার দ্বিতীয় বিয়েতে রাজি না। তাদের মতে,
বাবার
আর বিয়ের দরকার নেই। বাবাকে তারা একটি পুত্রসন্তান জোগাড় করে দেবেন।
এই ভাবনা থেকে
অভিনব চেষ্টা চালাতে গিয়ে দুই বোন রীতিমতো হাসপাতাল থেকে সদ্যজাত পুত্রসন্তান চুরি
করে বসেছিল, যা জানতে পেরে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে কারাগারে
পাঠিয়েছে। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার জন্ম দিয়েছেন
ভারতের রাজস্থান রাজ্যের দুই বোন শিবানী দেবী ও প্রিয়ঙ্কা দেবী।
এর মধ্যে শিবানী
একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। আর প্রিয়ঙ্কা স্নাতক শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। দুই
বোনই বিবাহিত। রাজ্যের ভরতপুরের
এক সরকারি হাসপাতাল থেকে এক নবজাতককে চুরির অভিযোগে মথুরা থেকে তাদের গ্রেফতার
করে পুলিশ।
জানা গেছে,
তাদের
১২ বছরের ভাই দুই বছর আগে মারা যায়। পুত্রসন্তানের আশায় বাবা ফের বিয়ের সিদ্ধান্ত
নেন।
ছেলে হারানোর
শোক, তার ওপর স্বামীর আবার বিয়ের প্ল্যান সব মিলিয়ে তাদের মা অবসাদে ভুগছিলেন। মায়ের
মুখে হাসি ফোটাতে চুরি করা বাচ্চাটিকে তার হাতে উপহার হিসাবে তুলে দেয়ার কথা
ভেবেছিল দুই বোন। পুলিশি জেরায় তারা এ কথা জানিয়েছেন। গত ১০ জানুয়ারি
হাসপাতাল থেকে বাচ্চাটিকে চুরি করে তারা। কিন্তু পুলিশ নবজাতক চোরকে খুঁজছে বলে
সংবাদপত্র থেকে জানতে পারা দুই বোন। এতে
ভয় পেয়ে তিন দিন পর বাচ্চাটিকে রারাহ গ্রামের কাছে দুধের বোতলসহ রাস্তার পাশে
রেখে যায় তারা। নবজাতকের সঙ্গে তারা একটি চিরকুট রেখে যায়। এতে লেখা ছিল- বাচ্চাটিকে
দেখামাত্র পুলিশকে খবর দিয়ে জানান এটিই ১০ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ নবজাতক।
ভরতপুরের পুলিশ
সুপার অনিল কুমার তঙ্ক জানান, তদন্তকারীরা হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুই
বোনকে চিহ্নিত করেন। ফুটেজে ওদের স্কুটারে উঠতে দেখা যায়। তবে হাসপাতালের স্কুটার, সাইকেল পার্কিংয়ের এক লোকের সেই স্কুটারটির
রেজিস্ট্রেশন নম্বর মনে ছিল। পরে ওই নম্বরের সূত্রে দুই বোনের খোঁজ পেয়ে যায় পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৩ (অপহরণ) ধারায় দুজনকে মথুরার
স্বরূপা নওগাঁও থেকে গ্রেফতার করা হয়। বাচ্চা চুরির দায়ে অভিযুক্ত হন তারা।
পুলিশ জানায়,
দুই
বোন ভরতপুরে রেকি করে গিয়েছিল। নিকটবর্তী পাহাড়ী টাউনের কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে ১০
জানুয়ারি ভোরে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন জনৈক মনীশের স্ত্রী। প্রসূতি মা ও বাচ্চাকে ভালো পরিচর্যার জন্য ওই
সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুরে মা ঘুমাচ্ছিল, এ সুযোগে
বাচ্চাটিকে তুলে নিয়ে যায় দুই বোন। তবে হাসপাতালের ভিডিওর চোখ এড়াতে পারেননি তারা।
পুলিশ সুপার
জানান, দুই বোন পুলিশকে জানিয়েছে- প্রথমে তারা বাবা লক্ষ্মণ সিংহকে পুত্রসন্তানের
বাসনা মেটাতে আবার বিয়ে করা থেকে নিরস্ত করতে একটি ছেলে দত্তক নেয়ার চেষ্টা করে। নার্সদের কাছে খবর নেয়, কোনো গরিব
পরিবার আছে কি পয়সার বিনিময়ে যারা ছেলে বিক্রি করতে চায়। তবে আইনি রাস্তায় দত্তক
নেওয়ার অনেক ঝামেলা। তা ছাড়া অভাবের দায়ে পড়ে সন্তান কেনাবেচায় শাস্তিও পেতে হয়। এটি
জানার পরই সেই চেষ্টা ছেড়ে বাচ্চা চুরির পরিকল্পনা করে তারা।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: