21 January 2018

অবিস্বাস্য হলেও সত্যি বাংলাদেশের একটি রান্নাঘর ৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর নতুন বাজারের পূর্ব পাশে বেরাইদ এলাকায় ১৫ বিঘা জমির ওপর বেসরকারি উদ্যোগে রান্নাঘরটি প্রতিষ্ঠা করছেন নারী উদ্যোক্তা আফরোজা খানতিনি এর নাম দিয়েছেন খানস কিচেনইতোমধ্যেই নান্দনিক অবকাঠামো ও বিশ্বের আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি স্থাপন করা হয়েছে এখানে

দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই রান্নাঘরটি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশেএখানে রান্না হবে লাখো মানুষের খাবারএ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার মধ্য দিয়ে কর্মসংস্থান হবে তিন হাজার মানুষেরমানুষের হাতের স্পর্শ ছাড়াই এখানে মেশিনে হবে কাজঅত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার করে গড়ে উঠছে লক্ষাধিক মানুষের রান্নাযজ্ঞ খাবার প্রস্তুত প্রতিষ্ঠানটি

আপনি শুনলে আশ্চর্য হবেন যে, মানুষের হাতের স্পর্শ ছাড়াই খানস কিচেনে লাখো মানুষের জন্য খাবার রান্না হবেমেন্যুতে থাকছে ভাত, ডাল, সবজি, মাছ ও মাংসসঙ্গে থাকবে স্যুপবাদ যাবে না ডেজার্ট বা মিষ্টান্নসময়, সুযোগ ও চাহিদার ওপর গুরুত্ব দিয়ে রাখা হবে বিশেষ কিছু খাবারস্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু, পুষ্টিকর, জীবাণুমুক্ত ও সতেজ রুচিসম্মত আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং টাটকা গরম খাবার সরবরাহ করাই এটি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য

খানস কিচেনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল নগরীযেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে সাড়ে ৪৪ হাজার লোক বসবাস করেন, যাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত কর্মজীবীএক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, রাজধানীতে অধিকাংশ মানুষ ভোগেন পেটের পীড়ায়এর অন্যতম কারণ অস্বাস্থ্যকর খাবারবলতে পারেন, তাদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই আমাদের এই উদ্যোগ

কর্মজীবীদের কাছে খানস কিচেন ঘরের গরম খাবারের স্বাদের অভাব ঘোচাবে বলে আমরা আশাবাদী এই উদ্যোক্তাতার ভাষ্য, “বাঁচার জন্য খাওয়া প্রয়োজনকিন্তু ভেজাল, অস্বাস্থ্যকর আর বেশি দামের কারণে খাবারই মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়বিশেষ করে রাজধানীর অফিস, আদালত ও ব্যাংকপাড়ার কর্মজীবী মানুষ মধ্যাহ্নভোজ করতে গিয়ে বেশি সমস্যায় পড়েনতাদের কথা ভেবে কম দামে স্বাস্থ্যকর গরম খাবার পৌঁছে দিতেই আধুনিক প্রযুক্তিতে এশিয়ার সবচেয়ে বড় রান্নাঘরটি তৈরি করা হয়েছেএখানে প্রতিদিন চলবে লক্ষাধিক মানুষের রান্নাযজ্ঞহাতের স্পর্শ ছাড়া মেশিনে হবে কাজ

নতুন এ উদ্যোগ প্রসঙ্গে আফরোজা খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “সবসময় নতুন কিছু করার ইচ্ছে ছিলএরই অংশ হিসেবে খানস কিচেনের ভাবনা এলো মনেতিন বছর এ বিষয়ের ওপর দেশ-বিদেশে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়েছিএরপর আমার স্বামী আলী আহম্মদ খানের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি তৈরির উদ্যোগ নিইআমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্নশিগগিরই খাবার সরবরাহ শুরু করবোআন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শেফ টনি খান প্রতিষ্ঠানটির সরাসরি তত্ত্বাবধানে থাকছেন

খানস কিচেনের নির্বাহী পরিচালক আলিফ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জার্মান প্রযুক্তি ব্যবহার করে এশিয়ার বৃহৎ খাবার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গড়েছি আমরাউৎপাদন পদ্ধতিতে আমরাই প্রথম ব্যবহার করছি বিশ্বে খাবার ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের সর্বাধুনিক পদ্ধতি ফোরজি (ফোর্থ জেনারেশন) হাই এফিসিয়েন্সি ক্লাসিফায়ার প্রযুক্তিএছাড়া আমরা নিশ্চিত করছি স্টিম ইনজেকশন সিস্টেম, অ্যাপেক্সি ফ্লোর এবং ইলেকট্রিক পদ্ধতিতে পরিবেশবান্ধব রান্নাএখানে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু, পুষ্টিকর, জীবাণুমুক্ত ও সতেজ রুচিসম্মত আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং টাটকা গরম খাবার

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেনডাল, ভাত, সবজি, মাছ বা মাংসের সঙ্গে ডেজার্ট বা মিষ্টান্ন খাবারের মূল্য ধরা হয়েছে ৯৫ টাকাখানস কিচেনের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হবে রাজধানীর যে কোনও স্থানে

ভোজনরসিকদের সুবিধার্থে খানস কিচেন ব্যবহার করবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে বানানো বাক্স, যা বাইরের আর্দ্রতা থেকে খাবারকে সুরক্ষিত ও টাটকা রাখতে সহায়ক হবেফলে খাবার গরম থাকবে ছয় ঘণ্টারও বেশি সময়সর্বোচ্চ মানের কাঁচামাল, উৎপাদনের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, কম্পিউটারাইজড ল্যাবরেটরি, নিজস্ব প্যাকেজিং ইউনিটের আধুনিক ব্যবহার নিশ্চিত করে শতভাগ গুণগত মান বজায় রাখতে চান সংশ্লিষ্টরা


শেয়ার করুন

0 facebook: