সিলেট প্রতিনিধিঃ
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার মূল কাজটা করে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)। বিশেষায়িত
এই বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সিলেটে প্রধানমন্ত্রীর সফরে নিরাপত্তার কাজ করবেন। দু-একদিনের
মধ্যে এসএসএফ’র ‘অ্যাডভান্স পার্টি’ সিলেটে
আসবে বলে জানা গেছে।
ইনার কর্ডন,
আউটার
কর্ডন, রোড ব্যবস্থাপনা, রুফটপ, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ও সাদা
পোশাকধারী-এই ছয় বিষয়কে ঘিরেই আঁটা হচ্ছে নিরাপত্তা পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা
সিলেটে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সফর ঘিরে। এসএসএফ,
এবিপিএন,
র্যাব,
পুলিশ,
গোয়েন্দা
সংস্থা সবাই থাকছে নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজে।
এসএসএফ’র
বাইরে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব তথা সকল
নিরাপত্তা বাহিনীগুলো কাজ করে থাকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে, আগামী ৩০ জানুয়ারি সিলেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
সফরে থাকছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। চলতি মাসের শুরুর দিকে সিলেটে
প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিষয়টি জানার পর থেকেই নিরাপত্তা বিষয়ে তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ,
র্যাব,
গোয়েন্দা
সংস্থাগুলো।
সূত্র জানায়,
গেল
কয়দিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে নিরাপত্তারক্ষী
বাহিনীগুলো। ঘষেমেজে তৈরী করা হচ্ছে নিখুঁত পরিকল্পনা। দু-একদিনের মধ্যে সিলেটে র্যাব,
পুলিশ,
এবিপিএন,
ডিজিএফআই,
এনএসআই,
এসবি,
ডিবিসহ
নিরাপত্তায় নিয়োজিত সকল বাহিনী ও সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে বিশেষ সভা
অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় নিরাপত্তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে।
সিলেট মহানগর
পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর
সিলেট সফর উপলক্ষে পুলিশ, র্যাব, এবিপিএনসহ অন্যান্য বাহিনী ও
সংস্থাগুলো নিয়ে নিরাপত্তা বিষয়ক সভা হবে। দু-একদিনের মধ্যে এসএসএফের অ্যাডভান্স
পার্টি সিলেটে আসবে।’
তিনি আরো বলেন,
‘সিলেটে
প্রধানমন্ত্রীকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা তথা চার স্তরের নিরাপত্তা দেয়া হবে।’
সূত্র জানিয়েছে,
প্রধানমন্ত্রী
বিমান বা হেলিকপ্টারযোগে ওসমানী বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবেন। সেখান থেকে বুলেটপ্রুফ
গাড়িযোগে নগরীর ভেতরে আসবেন তিনি। বিমানবন্দর থেকে নগরীর মধ্যে আসার পথে থাকবে
বিশেষ নিরাপত্তা। নগরীর চৌহাট্টা থেকে আম্বরখানা পর্যন্ত সড়কে সাধারণ জনতা ও
যানবাহনের চলাচল ওই সময় বন্ধ করে দেয়া হতে পারে। সিলেট পৌঁছার পর হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি
আলাইহি ও হযরত শাহপরান রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মাজার শরীফ জিয়ারত করবেন
প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া হযরত বোরহান উদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মাজারেও যেতে
পারেন তিনি। এসব মাজার ও যাতায়াত পথে নেয়া
হবে কঠোর নিরাপত্তা।
পরবর্তীতে
সার্কিট হাউসে বিশ্রাম ও দুপুরের খাবার খেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে ওই
এলাকায়ও থাকবে কঠোর নিরাপত্তা। নগরীর চৌহাট্টাস্থ আলিয়া মাদরাসা মাঠে আওয়ামী লীগ
আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন শেখ হাসিনা। ওই জনসভাস্থল এবং আশপাশের সকল সড়ক,
বাসাবাড়ি
সবখানে নেয়া হবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। উঁচু ভবনের ছাদে শক্তিশালী
বাইনোকুলার ও স্নাইপার রাইফেল নিয়ে অবস্থান করবেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। জনসভাস্থল
ও আশপাশ এলাকায় বন্ধ করে দেয়া হতে পারে মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগের নেটওয়ার্ক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে, নিরাপত্তার জন্য আলিয়া মাদরাসা মাঠে আশপাশের ভবনগুলো
আগেরদিনই খালি করে দেয়া হবে। এসব ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া
প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে সাদাপোশাকে নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার বিপুল
সংখ্যক সদস্য কাজ করবেন।
সূত্র জানিয়েছে,
নিরাপত্তার
কাজে সিলেট মহানগর পুলিশের প্রায় তিন হাজার সদস্যকে কাজে লাগানো হবে। এছাড়া
পুলিশের বিভিন্ন রেঞ্জ থেকে আরো কয়েক হাজার চৌকস সদস্যকে সিলেটে নিয়ে আসা হবে।
সিলেট জেলার
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল ইসলাম তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর
সিলেট সফরে মহানগর পুলিশের চাহিদা অনুযায়ী আমরা কাজ করবো। জেলা পুলিশের আওতাধীন
ফোর্স নিরাপত্তায় অংশ নেবে। এছাড়া বিভিন্ন রেঞ্জ থেকেও পুলিশ সদস্যদের আনা হবে।’
র্যাব-৯ এর
সিনিয়র সহকারি পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘নিরাপত্তার
প্রধান দায়িত্ব এসএসএফের। তারা ইনার কর্ডনে দায়িত্ব পালন করবে। র্যাব, পুলিশসহ
অন্যান্য বাহিনী থাকবে আউটার কর্ডনে।’
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
রাজনীতি
সিলেট বিভাগ
0 facebook: