আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের সঙ্গে রাশিয়ার সম্ভাব্য আঁতাতের বিষয়ের তদন্ত এখন তাকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সম্ভাব্য আঁতাতের ঘটনা খতিয়ে দেখতে নিযুক্ত বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলারের তদন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদ একটি সম্ভাব্য ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা অনেকের। তাই বলা হচ্ছে, কঠিন চাপের মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের অন্যতম ঘনিষ্ঠ এবং তার প্রশাসনের অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্সকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মুলারের তদন্ত দল। সম্ভাব্য আঁতাতের বিষয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত করা মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালক জেমস কমিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কেবল তা-ই নয়, স্বয়ং আঁতাতের বিষয়ে এবার ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান মুলার। মার্কিন আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জেফ সেশন্স ও জেমস কমিকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ প্রমাণ করে রবার্ট মুলারের স্পষ্ট ধারণা আছে তিনি কী করতে যাচ্ছেন।
ট্রাম্প ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বাধা দিয়েছিলেন, মুলারের তদন্তের মাধ্যমে হয়তো সেই বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা অনেকের। মুলার এককালে এফবিআইয়ের পরিচালক ছিলেন। তার সাবেক সহকারী মাইকেল জেলডিন বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের বাধা কোন পর্যায়ের অপরাধ, মুলার সম্ভবত সেই বিষয়টি নির্ধারণের চেষ্টা করছেন। এটা কি অভিশংসনযোগ্য অপরাধ, নাকি এর দ্বারা কোনো অপরাধই সংঘটিত হয়নি, তাই নির্ধারণের চেষ্টা করছেন বিশেষ কৌঁসুলি।
গত মে মাসে কমিকে বরখাস্তের পর ক্রিস্টোফার রেকে এফবিআই পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাম্প। সম্প্রতি খবর হচ্ছে, ক্রিস্টোফারও পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। কারণ, ট্রাম্পের অনুগত অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্স তাকে চাপ দিচ্ছেন এফবিআইতে জেমস কমির নিয়োগ করা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সরিয়ে দিতে। কারণ, ট্রাম্প মনে করেন ওই কর্মকর্তারা তার প্রতি বিরাগভাজন।
রুশ আঁতাত নিয়ে তদন্তে এ পর্যন্ত ট্রাম্পের চার শীর্ষ সহযোগী অভিযুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন, তার নির্বাচনী প্রচারণা শিবিরের সাবেক প্রধান পল মানাফোর্ট এবং তার প্রচারণা শিবিরের সাবেক পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা জর্জ পাপাডোপুলাস। তবে এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেআইনি কাজের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আর মুলারের তদন্ত যতই শেষ পর্যায়ে উপনীত হচ্ছে, এই তদন্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ট্রাম্প, তার সহযোগী এবং রিপাবলিকানদের প্রচেষ্টা ততই বাড়ছে। নিউইয়র্কের কর্নেল ল’ স্কুলের অধ্যাপক জেন্স ডেভিড অহলিন বলেন, মনে হচ্ছে তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে (ইলেভেনথ আওয়ার) পৌঁছেছে। তদন্তের সর্বশেষ অগ্রগতি ইঙ্গিত করে, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদ হয়তো ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: