![]() |
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ জানিয়েছে ইরান ছয়
জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি মেনে চলছে বলে। এ অবস্থায় দেশটির সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র
অনড় অবস্থানে থাকলে দেশটিকে একা হয়ে পড়তে হবে বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দফতরের সাবেক প্রধান অ্যালেন কিসওয়াতকার।
২০১৬ সালের
জানুয়ারি থেকে ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিকে নিয়ে গঠিত ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত
পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। ইরান পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি মেনে চলছে বলে আইএইএ স্বীকার
করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্প তেহরানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা
অব্যাহত রেখেছেন। পরমাণু সমঝোতা বহুপক্ষীয় চুক্তি এবং এর প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদেরও
সমর্থন রয়েছে। কিন্তু আমেরিকা ওই সমঝোতা
বাস্তবায়নের পথে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
ইরানের আণবিক
শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নে ইরানের
অবস্থান সম্পর্কে আইএইএ'র ইতিবাচক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ
করে বলেছেন, এখন ইউরোপের উচিত আমেরিকার ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাতে
ওয়াশিংটন পরমাণু বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চলে। মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট হোয়াইট হাউসের একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছে,
ইরান যদি ছয়টি শর্ত মেনে নেয় তাহলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প
পরমাণু সমঝোতায় অটল থাকবে এবং ইরানকে ওই ছয়টি শর্ত মেনে নিতে রাজি করাতে ইউরোপের
ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে।"
দৈনিকটির
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পরমাণু
সমঝোতার কিছু কিছু ধারায় পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়েছেন। প্রথম দিকে তিনি ইরানের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে পরিদর্শন
এবং ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি সীমিত করে ফেলার কথা বলেছিলেন। এর সঙ্গে আরো যোগ করে এখন
ইরানের মানবাধিকার পরিস্থিতি, সাইবার জগতে ইরানের কথিত হুমকি
এবং দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অর্থনৈতিক তৎপরতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য
করে এ বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের
দেয়া এসব পূর্বশর্তের কারণে পরমাণু সমঝোতা হুমকির মুখে পড়েছে। কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, পরমাণু সমঝোতাকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসন ও ইউরোপীয় সরকারগুলোর মধ্যে
মতবিরোধ ক্রমেই বাড়ছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দফতরের সাবেক প্রধান অ্যালেন
কিসওয়াতকার বলেছেন, "পরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র
একা হয়ে পড়বে।"
পর্যবেক্ষকরা
বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই পরমাণু
সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে তারা ইউরোপ, চীন ও রাশিয়ার
সমর্থন হাতছাড়া করবে। এ কারণে মার্কিন কংগ্রেস পরমাণু সমঝোতা নিয়ে চরম দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। ইরান ইস্যুতে অন্তত ইউরোপের
সমর্থন পাবে কিনা তা নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা সন্দেহের মধ্যে পড়েছেন। ব্রিটেনে নিযুক্ত ইরানের
রাষ্ট্রদূত বাইদি নেজাদ বলেছেন, পরমাণু সমঝোতা ইস্যুতে
আমেরিকার সঙ্গে ব্রিটেনের মতবিরোধ ক্রমেই বাড়ছে। যাই হোক ধারণা করা হচ্ছে ইউরোপ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করছে
যে, তারা আমেরিকার অন্ধ অনুসরণ করতে বাধ্য নয়।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: