![]() |
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দলিত
সংগঠনগুলোর ডাকা ভারত বন্ধ (হরতাল) ঘিরে পুরো দেশটি উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে।। সহিংসতা থামাতে পুলিশের গুলিতে
মৃত্যু হয়েছে ৯ জন বিক্ষোভকারীর। মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র, ভিন্দ ও মোরেনাতে এক ছাত্রনেতাসহ মৃত্যু হয়েছে ছ’জনের। রাজস্থানের অলওয়ারে থানায় আগুন ধরিয়ে দিতে গিয়ে
পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন আরো এক জন। উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরে ও মেরঠে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে
মারা গেছেন দুই বিক্ষোভকারী। সংঘর্ষ ছড়িয়েছে পাঞ্জাব, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায়। বিপর্যস্ত অন্তত সাত-আটটি
রাজ্যের জনজীবন।
পরিস্থিতি
ঘোরালো হয়ে উঠতে পারে, সে কথা বুঝেই তফসিলি জাতি ও জনজাতি নিপীড়ন প্রতিরোধ আইন
লঘু না করার আর্জি নিয়ে সোমবার তড়িঘড়ি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছয় কেন্দ্র। তবু সকাল থেকেই মধ্যপ্রদেশের
গ্বালিয়র, ভিন্দ, মোরেনা জেলায় বিক্ষোভ শুরু হয়। চম্বল এলাকার পরিস্থিতি সামলাতে প্রশাসনকে নাকানিচোবানি খেতে হয়। গ্বালিয়রে হাজার দুয়েক দলিত
লাঠি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। ভিড়ের মধ্যে পাথর ছোড়া শুরু হয়। আর তখনই দোকান, পেট্রল পাম্পে ভাঙচুর শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। স্কুলবাস-সহ আধ ডজন গাড়িতে
আগুন লাগানো হয়। লাঠি, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেও পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি পুলিশ। সংঘর্য ছড়ায় ভিন্দ, মোরেনাতেও। গ্বালিয়রের আশেপাশের তিনটি
থানা এলাকায় কার্ফু জারি করা হয়। সেনা নামে ভিন্দে। সকাল থেকেই রাজস্থানের জয়পুর, বাড়মের, অলওয়ার থেকে হিংসার খবর আসতে শুরু করে। অলওয়ারে মারা গেছেন এক জন। পবন জাটভ নামে ২৮ বছর বয়সি ওই বিক্ষোভকারী এক
প্রাক্তন সরপঞ্চের ছেলে। অলওয়ারে আহত নয় পুলিশকর্মীও। গোটা রাজস্থানে সংঘর্ষে আহত অন্তত ২৮ জন।
পাঞ্জাব, রাজস্থান, বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যেও
বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে সরকারি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। আহত হয়েছেন কয়েক জন যাত্রী। মেরঠে সংঘর্ষ ব্যাপক আকার নেয়। মৃত্যু হয়েছে এক জনের। আহত ৪০ পুলিশকর্মী-সহ ৭৫ জন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে
পাশের এলাকা হাপুরেও। সেখানে রেল অবরোধ করেন হাজার দুয়েক বিক্ষোভকারী। পাঞ্জাবে স্কুল কলেজ, যানবাহন বন্ধ ছিল আগে থেকেই। বন্ধ ছিল ইন্টারনেটও। তবে সকাল থেকেই জালন্ধর, ভাটিন্ডা, অমৃতসরে তলোয়ার, লাঠি হাতে রাস্তায় নামেন
বিক্ষোভকারীরা। পাঞ্জাবের সেনা ও আধাসামরিক
বাহিনীকে মজুত রাখা হয়েছে। হরিয়ানার অম্বালা, রোহতকেও বিক্ষোভ ছড়ায়। দিল্লির মান্ডি হাউস এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন দলিত
বিক্ষোভকারীরা। গুজরাতে সকাল থেকেই সড়ক ও রেল
অবরোধ হয়। আহমদাবাদে বিক্ষোভকারীদের উপর
লাঠি চালায় পুলিশ। সুরেন্দ্রনগর, জামনগরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দলিত বিক্ষোভে।
বিক্ষোভের আঁচ
পড়েছে বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওডিশাতেও। বিহারের রোহতাস জেলায়
জেলাশাসককে দফতরে যেতে বাধা দেয় বিক্ষোভকারীরা। হাজিপুরে অ্যাম্বুল্যান্স পড়ায় আটকে মৃত্যু হয়েছে এক
নবজাতকের। বন্ধ-সমর্থকদের অনুরোধ করা
সত্ত্বেও অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া হয়নি। নওয়াদায় বন্ধ-সমর্থকেরা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। বিহারে সাড়ে তিন হাজার বনধ-সমর্থককে
গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডেও রেল ও সড়ক অবরোধ হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়ে রাজধানী, শতাব্দী-সহ ১০০টি ট্রেন। আগুন যাতে আর ছড়াতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ
দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, পাঞ্জাবে ১৭০০ র্যাফ পাঠানো হয়েছে।
সূত্রঃ আনন্দবাজার
পত্রিকা
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: