29 April 2018

রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান দেবেন পুতিনঃ ক্রিমিয়ার প্রধানমন্ত্রী


আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সের্গেই আকসোনোভ ক্রিমিয়ার নতুন নায়ক২০১৪ সালের প্রশ্নবিদ্ধ গণভোট অনুষ্ঠান, যার আওতায় ইউক্রেন থেকে বেরিয়ে ক্রিমিয়া রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তিনি তার অন্যতম অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছিলেন২৪ এপ্রিলের অপরাহ্ণপ্রধানমন্ত্রীর সদর দপ্তরে বসে তাঁর কাছে প্রথম আলোর প্রশ্ন ছিল, চেচনিয়ার সংসদের উচ্চকক্ষ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের দুর্দশা দেখতে বাংলাদেশে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছেআপনার প্রজাতন্ত্র থেকে এ রকম কোনো দল পাঠানোর পরিকল্পনা আছে কি নাউত্তরে সের্গেই আকসোনোভ চেচনিয়ার প্রতিনিধিদল প্রেরণের প্রসঙ্গটির দিকে একদমই গেলেন নাতবে তিনি বললেন, রোহিঙ্গা মুসলিম উদ্বাস্তুরা যে সংকটে পড়েছেন, সে বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিক নজর রাখছেতারা সময়ে সময়ে মিয়ানমারের বিষয়ে ব্রিফ করছে

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুটি রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয় এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের তা মোকাবিলা করার বিশেষ অধিকার সংরক্ষিত রয়েছেআমি নিশ্চিত যে তিনি (পুতিন) এই সংকটের একটি ন্যায্য সমাধান খুঁজে বের করবেনএ বিষয়ে আকসোনোভের শেষ মন্তব্য ছিল, মানুষ যখন তার ধর্ম ও বর্ণপরিচয়ে নিগৃহীত হয়, তখন সেটা পরিতাপের বিষয়রোহিঙ্গাদের জন্য আমি দুঃখিত ও ব্যথিত

ক্রিমিয়া ইতিহাসখ্যাত একটি নাম১৮৫৩ থেকে ১৮৫৬ সাল পর্যন্ত থেমে থেমে এক ডজনের বেশি পরিচালিত ক্রিমীয় যুদ্ধ বিশ্বকে আলোড়িত করেছিলএকদিকে রুশ সাম্রাজ্য, অন্যদিকে ছিল অটোমান সাম্রাজ্য, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মিত্রশক্তিরাশিয়া হেরে যায়নানা উত্থান-পতনের পর ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে পুনরায় রাশিয়ার পতাকাতলে ফিরিয়ে আনার নায়ক হিসেবে দেখা হয় আকসোনোভকে২০১৪ থেকে তিনি প্রাদেশিক সরকারের সব কটি মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যানতাঁকে বলা হয় হেড অব রিপাবলিক২০০৩ সালে মলদোভার বাসিন্দা হিসেবে রুশ নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন তিনি২০০৮ সালে রাশিয়ান কমিউনিটি অব ক্রিমিয়ার সদস্য ছিলেনসোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর স্বাধীন ইউক্রেনের আওতায় ক্রিমিয়া একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ছিলসুপ্রিম কাউন্সিল অব ক্রিমিয়ার একজন ডেপুটি হওয়ার দুই বছরের মাথায় ২০১০ সালে এক টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন২০১৪ সালের গণভোটে ক্রিমিয়ার রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েকিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব এই একত্রকরণ মেনে নেয়নিতারা এই ইস্যুতে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তা এখনো বহাল আছে


ক্রিমিয়ার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রাশিয়া সরকারিভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রসরকার ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংবিধান দ্বারা পৃথক করা আছেআমাদের একটি আন্তধর্মীয় কাউন্সিল রয়েছেএখানে সব ধর্মের মানুষ আছেনদুটি বৃহৎ ধর্মের অনুসারীরা রয়েছেনপ্রায় ৮০ ভাগ মানুষই হলো অর্থোডক্স খ্রিষ্টানআর মুসলিমরা রয়েছেন শতকরা ১০ ভাগক্রিমিয়ায় বসবাসরত ধর্মীয় অনুসারীরা পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রাখছেনকোনো দ্বন্দ্ব বা সংঘাত ছাড়াই তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করে চলছেনআমি নিশ্চয়তা দিতে পারি যে কোনো ধরনের ধর্মীয় সংঘাত ক্রিমিয়ায় হবে নাকোথাও কোনো ধরনের হেট স্পিচ বা কোনো ধরনের হিংসাশ্রয়ী কিছুর আলামত পাওয়া গেলে আমি অত্যন্ত কঠোরভাবে তা মোকাবিলা করি


শেয়ার করুন

0 facebook: