আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মিয়ানমারের
রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ও নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের
নিয়ে খবরের জের ধরে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিচার শুরু করেছেন
আদালত।
আজ সোমবার
ইয়াঙ্গুনের একটি আদালত দুজনের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক গোপনীয়তা বিষয়ক আইনে অভিযোগ গঠন
করেন।
জেলা জজ ইয়ে
লুইন সাংবাদিক ওয়াই লোন (৩২) ও কিউ সোই ওর (২৮) বিরুদ্ধে গোপনীয়তা ফাঁসের অভিযোগ
আনেন। এর ফলে দুজনের সর্বোচ্চ ১৪ বছরের
কারাদণ্ড হতে পারে। যদিও অভিযুক্তরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
জানা যায়,
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানের ওপর সহিংসতা ও সরকারি নিপীড়ন নিয়ে প্রতিবেদন করায় গত
বছর ওয়াই লোন ও কিউ সোইকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নিজ সংস্থার
দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতের অভিযোগ গঠন ও বিচার কাজ শুরুর করার ব্যাপারে
রয়টার্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সম্পাদক জে অ্যাডলার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ওয়াই লোন ও কিউ সোইর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বাতিল না করে
উল্টো এই ভিত্তিহীন বিচার শুরু করায় আমরা গভীরভাবে হতাশা প্রকাশ করছি।’
অ্যাডলার আরো
বলেন, রয়টার্সের সাংবাদিকরা স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে তাঁদের
কাজ করছিলেন। কোনো আইন অমান্য বা ভুল কিছু
করেছেন এমন কোনো প্রমাণ তাঁদের বিরুদ্ধে নেই।
আটক
সাংবাদিকদের মুক্তি দিয়ে নিজ নিজ পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও
সহকর্মীদের সঙ্গে মিলিত হতে দেওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন অ্যাডলার। মিয়ানমারের আজকের এই সিদ্ধান্ত
দেশটিতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে দাবি করেন
অ্যাডলার।
জানা যায়,
চলতি বছরেই কিছুদিন আগে ওয়াই লোন ও কিউ সোইর নামে রয়টার্সে
একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনটিতে
বৌদ্ধ গ্রামবাসী ও মিয়ানমার সেনার যোগসাজশে ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যার ঘটনা
বিস্তারিতভাবে উঠে আসে।
প্রতিবেদনটিতে
নিহতদের জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোর ঘটনার বর্ণনা তুলে আনতে ওয়াই লোন ও কিউ সোই
মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষের সাক্ষাৎকার নেন। সঙ্গে জুড়ে দেন প্রয়োজনীয় ছবি। নিহত রোহিঙ্গাদের মধ্যে জেলে, দোকানদার ও কিশোর বয়সী ছাত্র ছিল বলে জানা যায়।
পরে মিয়ানমারের
সামরিক বাহিনী এই হত্যায় সৈন্যদের ভূমিকা আছে বলে স্বীকার করে সাত সৈন্যকে
কারাগারে দেয়। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ সদস্য
ও সাধারণ নাগরিকদের বিচারকাজ চলছে।
এদিকে, ওয়াই লোন ও কিউ সোইকে আটক করার মিয়ানমার সরকার ও দেশটির
নেত্রী অং সান সু চি আন্তর্জাতিকভাবে অনেক সমালোচনার শিকার হয়েছেন।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: