05 November 2018

ক্যান্সারের নতুন ওষুধ আবিষ্কার করলেন ভারতের মুসলিম তরুণী


আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ক্যান্সার চিকিৎসায় কেমোথেরাপির নতুন ওষুধ আবিষ্কার করলেন ভারতের মুসলিম তরুণী ফিনাজ খানতিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার বেলগাছিয়ার হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে২৩ বছর বয়সী এই গবেষকের সাফল্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে

আমেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী রসায়নে স্নাতকোত্তর করার সময়ই ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করেননিজের গবেষণায় কেমোথেরাপির নতুন ওষুধ আবিষ্কার করেন ফিনাজতার গবেষণাকে স্বীকৃতি দিয়েছে লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রিশিগগিরই ফিনাজের তৈরি কেমোথেরাপির নতুন ওষুধ বাজারে পাওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে লন্ডনের এই সংস্থা

হতদরিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারের সন্তানের এই অসামান্য কৃতিত্বে খুশির হাওয়া বইছে বেলগাছিয়া জুড়েবরাবরই মেধাবী ছাত্রী ফিনাজ খানস্কুল জীবন থেকেই আলাদা কিছু করে দেখানোর স্বপ্ন ছিল তারভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত এপিজে আব্দুল কালাম পশ্চিমবঙ্গের এই তরুণী গবেষকের আদর্শসপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলে একবার প্রজেক্টারের মাধ্যমে সাবেক এই রাষ্ট্রপতির বক্তব্য শুনেছিলেন ফিনাজতার কথায়, ‘সেই দিনই মনে হয়েছিল, আমিও চেষ্টা করলে কিছু করতে পারিতখন থেকেই মনে হয়েছিল এমন একটা কিছু করব যেটা মানুষের বা সমাজের কাজে আসবে

তিনি বলেন, ‘কেমোথেরাপিতে দুধরনের ওষুধ দেয়া হয়এক ধরনের ওষুধ তাৎক্ষণিকভাবে কাজ শুরু করলেও, আর এক ধরনের ওষুধ কাজ করতে সময় লাগে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টাতবে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছেক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের কেমোথেরাপি দিলে শরীরের কোষগুলো মারা যায়মাথার চুল উঠে যায়একইসঙ্গে বেশ ব্যয়বহুল চিকিৎসাক্যান্সার নিয়ে প্রজেক্ট পাওয়ার পর এই জায়গাটা আমাকে ভাবিয়েছিলপার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া স্বল্প খরচে কীভাবে রোগীদের কেমোথেরাপির ওষুধ তৈরি করা যায়, তা নিয়ে শুরু করলাম গবেষণা

সেই গবেষণায় আমার ম্যাডাম সাহায্য করেনগবেষণা করতে গিয়ে দেখলাম, সেটা সম্ভবএকটি মাত্র ওষুধের মাধ্যমে শরীরের যে অংশে ক্যান্সার হয়েছে, সেখানে কেমোথেরাপি দেয়া সম্ভব এবং তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করবে এটিএকইসঙ্গে এই ওষুধের কাজ দীর্ঘস্থায়ী হবেতিনি বলেন, ‘এর ফলে খরচ অনেক কম হবেএছাড়াও শরীরের কোষ জীবিত থাকবেএটিই আমার আবিষ্কারলন্ডনের রয়্যাল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রির মতো সংস্থা স্বীকৃতি দেয়ায় আমার পরিশ্রম সফল হয়েছেএখানেই শেষ নয়, বর্তমানে ক্যান্সারের টিকা আবিষ্কার নিয়েও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন ফিনাজ

ফিনাজ খানের বাড়িতে পড়াশোনা করার মতো পরিবেশও নেই; নেই চেয়ার টেবিলবাবা মা ও তিন বোনের সংসারবোনদের মধ্যে তিনিই বড়অভাব-অনটন প্রতি মুহূর্তে কড়া নাড়ছে ঘরেবাবা ঘুরে ঘুরে সাবান বিক্রি করেনমা ভীষণ অসুস্থঠিক ভাবে চলতে পারেন নাঅভাবে মায়ের চিকিৎসাও করাতে পারছেন না তিনি

এমন দরিদ্র পরিবার থেকে বিশ্ব দরবারে নাম উঠে আসায় খুশি ফিনাজের বাবা-মাবাবা মায়ের কথা আসতেই আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন ফিনাজএত কষ্টের মধ্যেই পড়াশোনা থেমে নেই তিন বোনেরফিনাজ নিজে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্যান্সার টিকাকরণ নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যাল থেকে বি এড করছেনদুই বোনের একজন বিএসসি দ্বিতীয় বর্ষে, অন্যজন প্রথমবর্ষে পড়াশোনা করছেসূত্রঃ টিডিএন


শেয়ার করুন

0 facebook: