আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারত, তুরস্ক, চীনসহ আরো ছয়টি দেশকে ইরান থেকে তেল কেনার উপর সাময়িক ছাড় দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার এর নেপথ্যে নিজের অবস্থানের পক্ষে যুক্তি খাড়া করলেন তিনি। জানালেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কম রাখার কারণেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প দাবি করেছেন, ওই আটটি দেশের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য তাঁর কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল। তাই তিনি আপাতত ওই দেশগুলিকে ইরান থেকে তেল কেনার সাময়িক ছাড়পত্র দিয়েছেন। পাশাপাশি, তেলের দাম ব্যারেলপিছু ১০০ থেকে ১৫০ মার্কিন ডলারে নিয়ে যেতে তিনি নিজেও চান না বলেই জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
গত সোমবারই ইরানকে একঘরে করতে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। ইরান সরকারের ‘আচরণ’ বদলাতেই পাল্টা চাপের নীতি নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। নতুন এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইরানের ব্যাঙ্কিং এবং শক্তি ক্ষেত্রকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ইউরোপ, এশিয়াসহ বিশ্বের যে সব দেশ এবং সংস্থা ইরান থেকে তেল কেনে, তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। যদিও, এর মধ্যে ৮টি দেশ— ভারত, চীন, ইতালি, গ্রিস, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান এবং তুরস্ককে ইরান থেকে তেল কেনার সাময়িক ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়, পারস্য উপসাগরের তীরের ওই দেশটি থেকে এই ৮টি দেশ ‘উল্লেখযোগ্য হারে তেল আমদানি’ কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে বলেই উদারতা দেখিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এরপরই বুধবার হোয়াইট হাউসের এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘তেলের ইস্যুতে কয়েকটি দেশকে আমি ছাড় দিয়েছি। ওরা আমার কাছে সাহায্য চেয়েছিল বলেই এটা করেছি আমি।’ তার আরো সংযোজন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপিছু ১০০ থেকে ১৫০ ডলারে নিয়ে যেতে চাই না আমি। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি তেলের দাম কমানোর চেষ্টা করছি। আপনারা যদি গত কয়েক মাসের তথ্য ঘেঁটে দেখেন, তাহলে দেখবেন তেলের দাম ধারাবাহিকভাবে কমেছে।’
যত দিন যাবে, ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞার ফাঁস ততটাই শক্ত হবে বলে এদিনও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু, এর প্রভাব আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের উপর না পড়ে, সেই চেষ্টাই করছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের মুখপাত্র রবার্ট পালাডিনো জানান, আগামী ছ’মাসের মধ্যে ইরান থেকে বিশ্বের তেল আমদানির মোট পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে প্রশাসন। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকেও কড়া নজর রাখা হবে।
পালাডিনো বলেন, ‘আমাদের পর্যাপ্ত তেল সরবরাহের মার্কেট রয়েছে। কিন্তু, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়লে তা মার্কিন গ্রাহকদের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনই বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও খারাপ। এর ফলে পরোক্ষে অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যাবে ইরান।’ ২০১৯ সালের মধ্যে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি তেল উৎপাদন করা সম্ভব হবে। তেমনটা হলে বিশ্বের আর কোনো দেশের ইরান থেকে তেল কেনার প্রয়োজন হবে না বলে দাবি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: