এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের পাইকপাড়ার হযরত আলীর ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে একই এলাকার রেজাউল হকের মেয়ে জেসমিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুখেই ছিল তাদের সংসার। পরে তাদের ঘরে দুটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।
গত ৭ নভেম্বর আবারও কন্যাশিশুর জন্ম দেন জেসমিন। পরপর তিন কন্যাশিশু জন্ম দেওয়ায় জেসমিনকে তালাক দেন স্বামী রবিউল। পরে স্থানীয় মাতবররা মিলে ওই কন্যাশিশুকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন একই এলাকার ঈদগাহ পাড়ার আইয়ুব আলীর কাছে।
এদিকে শিশু ও স্বামীর সংসার হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেসমিন। জেসমিন বলেন, তিনটা বাচ্চা হওয়ায় আমাকে আমার স্বামী জোর করে স্থানীয়দের সহায়তায় তালাক দিয়েছে। সেই সঙ্গে আমার ৯ দিনের মেয়েকে স্থানীয় মন্ডলরা (মাতবর) বিক্রি করে দিয়েছেন। জেসমিনের বাবা রেজাউল হক বলেন, কিছুদিন আগে রবিউল আমার এক আত্মীয় এর ছেলের বৌকে নিয়ে গিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে। এরপর থেকেই আমার মেয়ের ওপর অত্যাচার করে আসছিল। আবার একটি মেয়ে হওয়ার পরে আমার মেয়েকে তালাক দেয়। গত ৩ দিন আগে স্থানীয় মেম্বার শরিফুল, মন্ডল, খলিসাকুন্ডি পুলিশ ক্যাম্পের দালাল শহিদুল ইসলাম, খলিসাকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান আসলাম তাদের সহযোগিতায় টাকার বিনিময়ে আমার মেয়েকে তালাক দেয়।
আমার শিশু নাতনিকে বেচে দেয়। আমার মেয়ে বাচ্চা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা জোর করে কেড়ে নিয়ে গেছে। পরে শুনেছি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তারা বিক্রি করে দিয়েছে। এদিকে রবিউল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামের কিছু অসাধু মন্ডল এ কাজ করেছেন। মাত্র ৯ দিনের বাচ্চাকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন।
ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি খোঁজখবর নিয়ে আপনাকে জানাব।
(ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে কারা বিচার করেছে বা কী হয়েছে সেটা জানি না। দৌলতপুর থানার (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিতভাবে অভিযোগ করলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ
জেলা সংবাদ
0 facebook: