05 January 2019

শীতে রাত কাটানোর ঠাঁই নেই, চুরি করে জেলে যাচ্ছে ওরা!


আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ তিহাড় জেলে অপরাধীদের জায়গা দিতে গিয়ে জেরবার কর্তৃপক্ষকারণ, সেখানে যত জনের থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে তার থেকে বেড়ে গিয়েছে বন্দির সংখ্যা!

গত সোমবারের পরিসংখ্যান বলছে, ওই দিন তিহাড় জেলে ১ হাজার ৬০০ জন বন্দি ছিলেনঅথচ সরকারি হিসাব অনুযায়ী সেখানে মোট ১ হাজার ২৭ জনের থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে! হঠাৎ করে কী ভাবে তিহাড়ে বন্দির সংখ্যা বেড়ে গেল?

জেল সূত্রে খবর, নতুন বন্দিদের মধ্যে এমন ৫০ জন রয়েছে, যারা বিচারাধীন অবস্থায় জামিন পেয়ে বাইরে ছিলকিন্তু সম্প্রতি সেই তারাই আবার নতুন করে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পুলিশের নজরে এসে গ্রেফতার হয়পরে আদালতের নির্দেশে জেলে ঠাঁই পেয়েছে

এর একটা কারণ পুলিশের তরফে বলা হয়েছেতাদের মতে, শীতের রাতে খোলা রাস্তায় অনেকেই থাকতে পারছেন নাবরং ঢের ভাল তিহাড় জেলজেলে থাকলে মাথার উপর ছাদ, বিনামূল্যে খাবার, কম্বল, দুধ সবই পান বন্দিরাএমনকি তিহাড় জেলে একটি হাসপাতালও রয়েছেসেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসাও করানো যায়শুধু তা-ই নয়, কেউ স্বেচ্ছায় কাজ করতে চাইলে তিহাড় জেলের ৩৬টি ফ্যাক্টরি ইউনিটের মধ্যে কাজও পেয়ে যেতে পারে৭৫ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য হিটারের ব্যবস্থাও রয়েছে ওই জেলেঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে জেলের ভিতরের নিরাপদ ওই আশ্রয় পেতে চাইছে তারাতাই অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে, যাতে জেলের ভিতরে পৌঁছনো যায়

গত এক দশকে এত ঠান্ডা দিল্লিতে আর পড়েনিগত মাসে টানা দশ দিন ধরে রাতের তাপমাত্রা ছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসএমনকি এক দিন তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও নেমে গিয়েছিল

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিহাড় জেলের এক অফিসারের কথায়, ‘‘কিছু বন্দির সঙ্গে আমরা কথা বলে দেখেছি যে, শীতকালটা জেলের ভিতরে থাকবেন বলেই তারা অপরাধ করেছেন’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারিশীতকালের এই তিন মাসে বন্দির সংখ্যা বাড়েএদের বেশির ভাগেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেইতাই জেলকেই ভরসা ঠাওরায়’’ ওই অফিসারের আরও দাবি, পাঁচ বছর আগে বন্দির সংখ্যা আরও বেশি ছিলশেল্টার হোমের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং ফুটপাতবাসীদের জন্য নানান সরকারি কর্মসূচির কারণেই সংখ্যাটা কমেছে

প্রায় ৩৫ বছর তিহাড় জেলের আইনি অফিসার ছিলেন সুনীল গুপ্ততাঁর কথায়, ‘‘শীতকালে সত্যিই অপরাধীর সংখ্যা বেড়ে যায়এই সময়টায় ফুটপাতবাসীদের পছন্দের জায়গা তিহাড় জেলকারণ জেলের অন্দরে অনেক সুব্যবস্থা আছেতাই সামান্য অপরাধ করে তারা জেলে আসতে চায়’’ দিল্লি যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন এক সভাপতি প্রায় ২৪ বছর তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেনতাঁর কথায়, ‘‘আমি বেশ কিছু বন্দির সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, ওদের আসলে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই’’

সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা


শেয়ার করুন

0 facebook: