![]() |
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ তিহাড় জেলে অপরাধীদের জায়গা দিতে গিয়ে জেরবার কর্তৃপক্ষ। কারণ, সেখানে যত জনের থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে তার থেকে বেড়ে গিয়েছে বন্দির সংখ্যা!
গত সোমবারের পরিসংখ্যান বলছে, ওই দিন তিহাড় জেলে ১ হাজার ৬০০ জন বন্দি ছিলেন। অথচ সরকারি হিসাব অনুযায়ী সেখানে মোট ১ হাজার ২৭ জনের থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে! হঠাৎ করে কী ভাবে তিহাড়ে বন্দির সংখ্যা বেড়ে গেল?
জেল সূত্রে খবর, নতুন বন্দিদের মধ্যে এমন ৫০ জন রয়েছে, যারা বিচারাধীন অবস্থায় জামিন পেয়ে বাইরে ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই তারাই আবার নতুন করে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পুলিশের নজরে এসে গ্রেফতার হয়। পরে আদালতের নির্দেশে জেলে ঠাঁই পেয়েছে।
এর একটা কারণ পুলিশের তরফে বলা হয়েছে। তাদের মতে, শীতের রাতে খোলা রাস্তায় অনেকেই থাকতে পারছেন না। বরং ঢের ভাল তিহাড় জেল। জেলে থাকলে মাথার উপর ছাদ, বিনামূল্যে খাবার, কম্বল, দুধ সবই পান বন্দিরা। এমনকি তিহাড় জেলে একটি হাসপাতালও রয়েছে। সেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসাও করানো যায়। শুধু তা-ই নয়, কেউ স্বেচ্ছায় কাজ করতে চাইলে তিহাড় জেলের ৩৬টি ফ্যাক্টরি ইউনিটের মধ্যে কাজও পেয়ে যেতে পারে। ৭৫ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য হিটারের ব্যবস্থাও রয়েছে ওই জেলে। ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে জেলের ভিতরের নিরাপদ ওই আশ্রয় পেতে চাইছে তারা। তাই অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে, যাতে জেলের ভিতরে পৌঁছনো যায়।
গত এক দশকে এত ঠান্ডা দিল্লিতে আর পড়েনি। গত মাসে টানা দশ দিন ধরে রাতের তাপমাত্রা ছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকি এক দিন তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও নেমে গিয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিহাড় জেলের এক অফিসারের কথায়, ‘‘কিছু বন্দির সঙ্গে আমরা কথা বলে দেখেছি যে, শীতকালটা জেলের ভিতরে থাকবেন বলেই তারা অপরাধ করেছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি— শীতকালের এই তিন মাসে বন্দির সংখ্যা বাড়ে। এদের বেশির ভাগেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। তাই জেলকেই ভরসা ঠাওরায়।’’ ওই অফিসারের আরও দাবি, পাঁচ বছর আগে বন্দির সংখ্যা আরও বেশি ছিল। শেল্টার হোমের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং ফুটপাতবাসীদের জন্য নানান সরকারি কর্মসূচির কারণেই সংখ্যাটা কমেছে।
প্রায় ৩৫ বছর তিহাড় জেলের আইনি অফিসার ছিলেন সুনীল গুপ্ত। তাঁর কথায়, ‘‘শীতকালে সত্যিই অপরাধীর সংখ্যা বেড়ে যায়। এই সময়টায় ফুটপাতবাসীদের পছন্দের জায়গা তিহাড় জেল। কারণ জেলের অন্দরে অনেক সুব্যবস্থা আছে। তাই সামান্য অপরাধ করে তারা জেলে আসতে চায়।’’ দিল্লি যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন এক সভাপতি প্রায় ২৪ বছর তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বেশ কিছু বন্দির সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, ওদের আসলে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।’’
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: