06 April 2019

কাশ্মীরে স্বাধীনতাকামিদের চেয়ে বেশি নিহত হচ্ছে ভারতীয় সেনা

ছবিঃ সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সহিংসতা কবলিত কাশ্মীরে গত তিন দশক ধরে বিদ্রোহ চলছে। হাতে গোনা কয়েকশ বিদ্রোহীর হাত থেকে রেহাই পেতে কাশ্মীরে সাড়ে সাত লাখের বেশি ভারতীয় সেনা মোতায়েন করা আছে।

কিন্তু গত তিন দশকের সশস্ত্র বিদ্রোহে এই প্রথম বিচ্ছিন্নতাবাদীদের চেয়ে ভারতীয় জওয়ানরা বেশি সংখ্যায় নিহত হয়েছে। কাশ্মীরিরা স্বাধীনভাবেই থাকতে পছন্দ করেন। তবে তাদের কেউ কেউ পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হয়ে যাওয়ার কথাও বলছেন।

ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সাল থেকে অহিংস আন্দোলন করে আসছে কাশ্মীরবাসী। কিন্তু ১৯৮৮ সাল থেকে সেখানে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দাবিতে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়।

এখন পর্যন্ত ৮০ হাজার কাশ্মীরি হত্যার শিকার হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও আট হাজার। গ্রেফতার, নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বেশুমার। কাশ্মীরে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৮৩ জওয়ান নিহত হয়েছেন। এই তিন মাসে কাশ্মীরে সহিংসতায় সবমিলিয়ে ১৬২ জন নিহত হয়েছেন। একটি মানবাধিকার প্রতিবেদনের বরাতে বার্তা সংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়েছে।

কোয়ালিশন অব সিভিল সোসাইটি নামের ওই সংস্থাটি বলছে, নিহতদের মধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৮৩ জওয়ান, বিদ্রোহী ৫৮ ও ২১ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। এই নিহতের সংখ্যা গত বছরের প্রথম তিন মাসের সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। ওই সময়ে ১১৯জন নিহত হয়েছিলেন।

১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতের একটি আধাসামরিক বাহিনীর ওপর এক কাশ্মীরি তরুণের আত্মঘাতী হামলায় ৪৮ জওয়ান নিহত হয়েছেন। এছাড়াও সাত জওয়ান আত্মহত্যা এবং অন্তঃকোন্দলে আরও তিনজন নিহত হন।

বেসামরিক লোকদের মধ্যে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হামলায় সাতজন, সীমান্তে গোলাবিনিময়ে ছয় ও গ্রেনেড ও আইইডি বিস্ফোরণে আরও চারজন নিহত হন। ভূস্বর্গ বলে খ্যাত অখণ্ড কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করছে পরমাণু শক্তিধর ভারত-পাকিস্তান দুই দেশই। ছোট একটি অংশ অবশ্য চীনেরও দখলে।

১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর এ পর্যন্ত তিনটি যুদ্ধের মুখোমুখি হয় ভারত ও পাকিস্তান। এর মধ্যে ১৯৪৮ ও ১৯৬৫ সালের যুদ্ধ ছিল কাশ্মীর নিয়ে। ১৯৮৪ সাল থেকেই সিয়াচেন হিমবাহে ভারত-পাকিস্তানের সেনাবাহিনী থেমে থেমে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

ভারত থেকে স্বাধীন কিংবা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হতে বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ব্যাপক সংখ্যক কাশ্মীরি ভারতীয় সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।


শেয়ার করুন

0 facebook: