03 July 2019

গোপন রহস্য ফাঁস, এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ ও তার ছেলেকে রক্ষায় নয়নকে ক্রসফায়ার!


স্টাফ রিপোর্টার॥ বরগুনায় প্রকাশ্যে দিবালোকে রিফাতকে মারার ঘটনায় প্রধান অপরাধী নয়ন বন্ডকে কথিত ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে মেরেই ফেলল প্রশাসন। নয়নকে মারার মাধ্যমে মাটির নিচে চাপা পড়ে গেল বরগুনার আওয়ামী লীগ নেতাদের অপকর্মের সব ফিরিস্তি। দেশবাসী আর কখনো জানতে পারবে না কাদের আশ্রয়ে থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছিল নয়ন বন্ড।

নয়নকে ক্রস ফায়ারে দেয়ার আগে অ্যানালাইসিস বিডির একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, রিফাতকে মারার ঘটনায় নয়ন পুলিশের হেফাজতেই আছে। ঘটনার দিন রাতেই তাকে আটক করেছিল পুলিশ। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার অপরাধ ঢাকতে নয়নকে ক্রস ফায়ার দিয়ে মারতে পারে প্রশাসন। অ্যানালাইসি বিডির সেই প্রতিবেদনটি শতভাগ সত্য প্রমাণিত হয়েছে।

দেখা গেছে, নয়নকে কথিত ক্রস ফায়ারের নামে গুলি করে মারার পর বরগুনা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন একটি চমৎকার গল্প সাজিয়েছেন। তাদের কাছে খবর আসলো-নয়নরা নৌকা যোগে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরই নয়ন ও তার সঙ্গীরা পুলিশের ওপর গুলি করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি চালায়। তারপর একটি লাশ পাওয়া গেল। স্থানীয়রা বললেন-এটা নয়ন বন্ডের লাশ। পুলিশ সুপারের এই বক্তব্য দেশের কোনো মানুষ এখন পর্যন্ত বিশ্বাস করছে না।
ক্রসফায়ারে নিহত নয়ন বন্ড
পুলিশের পক্ষ থেকে ক্রস ফায়ারের কথা বলা হলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিফাতকে মারার পর থেকে স্থানীয় এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ সম্ভু ও তার ছেলে সুনম দেবনাথের গ্রুপের সঙ্গে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের গ্রুপের সম্পর্কের আরও অবনতি হচ্ছে। গত নির্বাচনের আগ থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ দুইভাগে বিভক্ত ছিল। একে অপরকে ফাঁসানোর জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে আসছিল। রিফাতকে মারার পর নয়নকে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের সদস্য বলে দাবি করেছিল।

এমপির ছেলে সুনম দেবনাথের দাবি-নয়ন বন্ড দেলোয়োর গ্রুপের সদস্য, আর দেলোয়ারের দাবি-নয়ন এমপিপুত্র সুনম দেবনাথ গ্রুপের সদস্য। আর স্থানীয়রাও বলছে-নয়ন বন্ড যুবলীগের কর্মী ছিল এবং এমপিপুত্র সুনম দেবনাথ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ছিলো। গত নির্বাচনের আগেও সে তার পিতার একাধিক নির্বাচনী প্রচার মিছিলে অংশ নিয়েছিল।

এছাড়া আরো অনেক সূত্রে জানা গেছে, নয়ন বন্ড এমপি পুত্র সুনম দেবনাথ গ্রুপের সদস্য ছিল। সুনমের আশ্রয়েই সে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে চুরি, ছিনতাইসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা করেনি। অপরাধের দায়ে মাঝে মধ্যে গ্রেফতার হলেও ক্ষমতাসীনদের তদবিরে জেল থেকে সহজেই বেরিয়ে আসতো।

এছাড়া, নয়ন পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতো বলেও স্থানীয়রা বলছেন। তবে পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করছে। তবে, স্থানীয়দের দাবি, নয়নের সঙ্গে পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ভাল সম্পর্ক ছিল।

জানা গেছে, নয়নের বিষয় নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের উভয় গ্রুপ কেন্দ্রে অভিযোগ করেছিল। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগও প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নয়নের সম্পর্ক ছিল। এখন উভয় গ্রুপকে রক্ষা করতে গিয়ে নয়নকে ক্রস ফায়ার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র

মূলঃ ‌‌‌অ্যানালাইসিস বিডি।


শেয়ার করুন

0 facebook: