আদিল উমার॥ হিন্দুদের সংগঠন 'ইসকন' চট্টগ্রামে যা করেছে তার বিপরীতে প্রথম রিএকশানটা দেখানো উচিত ছিল অভিভাবকদের। যেসব স্কুলে তারা পূজার প্রসাদ খাইয়েছে এবং ছোট ছোট বাচ্চাদের হিন্দুদের ধর্মীয় স্লোগান দেওয়ানো হয়েছে এসব স্কুলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত ছিল অভিভাবকদের। এরকম কিছু চোখে পড়েনি। কারণ আমাদের অভিভাবকরা এসব নিয়ে আসলে মাথা ঘামায় না, তার উপর অনেকের কাছেই ইসকনের এই কাজটা নিতান্ত 'ভালো কাজ' বলে মনে হবে। আর এই সচেতনতার অভাবটা তৈরি করেছে আমাদের আলেমরা। আচ্ছা আজকে চট্টগ্রামের কয়টা মসজিদে এই ইশ্যুতে খুতবা দেওয়া হয়েছে? মানুষকে সচেতন করা হয়েছে? হেজাফত ইসলাম বিক্ষোভ মিছিল করেছে, কিন্তু এতে কি আসলে মানুষের মাঝে সচেতনতা এসেছে? মানুষ এ বিক্ষোভ মিছিলকে "হেফাজতের মিছিল" হিসেবে নিয়েছে, নিজেদের হিসেবে নেয়নি।
কিছু একটা হলেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, ৯০% মুসলিমের দেশে এরা এই সাহস কি করে পায়...? ইত্যাদি ইত্যাদি কিছু গৎবাঁধা রিএকশান দেখাতে আমরা অভ্যস্ত। এতে আমাদের গলা উঁচু হয়, কিন্তু যে মেসেজটা আসলে দেওয়া উচিত ছিল, সেটা মানুষের কাছে পৌঁছায় না। যেমন ইসকনের এই কাজটাতে আমাদের মুসলিমদের পক্ষ থেকে আপত্তিটা কি, সেটা ভালোভাবে উপস্থাপন করা জরুরী। এটা নিতান্তই খাবার বিতরণ ছিল না। তারা নিজেদের ধর্মীয় উৎসবের প্রসাদ মুসলিম ম্যাজরিটির মাঝে বিতরণ করছে, ছোট ছোট বাচ্চাদের এই প্রসাদ বিতরণের সময় ধর্মীয় স্লোগান দেওয়ানো হয়েছে, এই পয়েন্টগুলো স্পষ্ট করতে হবে।
স্থানীয় পরিচিত আলেমদের একটি দল হিন্দুদের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি, সংগঠনের সাথে বসতে পারত। তাদেরকে এই মেসেজটা বুঝিয়ে দিতে পারত, আমরা মুসলিমরা এই কাজের বিরোধীতা করছি, কেন করছি। আমরা যদি এখন কুরবানির মাংস নিয়ে তাঁদের মন্দিরে নিয়ে, কিংবা বিভিন্ন হিন্দু পাড়ায় ফ্রি খাওয়াই, 'আল্লাহু আকবর' বলতে বলি, তাদের তখন কেমন লাগবে? এটা কি উচিত হবে কি না?
একইভাবে স্কুল কতৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন যারা ইসকনকে এসব কাজের অনুমতি দিয়েছে, তাদের সাথেও বসা যায়। তাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া যে এধরণের কাজ সাম্প্রদায়িক উসকানি তৈরি করবে, কীভাবে করবে। মুসলিমরা যদি এখন স্কুলে স্কুলে এভাবে ফ্রি খাবার বিতরণ করে আর ইসলামি বিভিন্ন স্লোগান দেওয়ায়, সেটা স্কুল কতৃপক্ষ বা প্রশাসন অনুমতি দিবে কি না!
সচেতনতা তৈরি, দাওয়াতের বক্তব্য, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া এটা ইসলামের শিক্ষা। এতে ঘটনার প্রতিকার চাওয়ার আগে, মানুষ আগেই এর প্রতরোধ করতে শিখবে। মানুষের মাঝে যে বিষয়ের সচেতনতা তৈরি করা হয়নি, সে বিষয়ের বিক্ষোভ তারা সহজভাবে নেবে না, উল্টো ভুল বুঝবে। ইসলামের শত্রুরা এই সুযোগটাকেই ব্যবহার করে।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ
জাতীয়
হিন্দু সমাচার
0 facebook: