03 August 2019

এবার গুজরাটে “জয় শ্রী রাম” না বলায় ৩ মাদ্রাসা ছাত্রকে হত্যাচেষ্টা, FIR নিতে অস্বীকার পুলিশের

ছবিঃ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩ আহত হাফিজ
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতের মুসলমানেরা এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে অতিবাহিত করছে তাদের দিন। কথিত সনাতনী বাক্য জয় শ্রী রাম এর কারনে গণপিটুনিতে হত্যা নামক নারকীয় ঘটনা যেন কোনক্রমেই থামতে চাইছে না। আর এধরণের বিকৃত, ঘৃণ্য মানসিকতা নিয়ে একের পর এক হত্যাযজ্ঞ ঘটে চললেও ভারতীয় শাসক দল সম্প্রতি প্রকাশিত মার্কিন রিপোর্টকে গুরুত্ব না দিয়ে বলছে দেশে সংখ্যালঘু(মুসলিম)রা সুরক্ষিত, তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা অক্ষত রয়েছে এই সরকারের আমলে। এই কথা যে সর্বৈব মিথ্যা তা বারবার প্রমাণিত হচ্ছে।

মালদার কালিয়াচকের আফরাজুল থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের পেহেলু খান, হরিয়ানায় জুনায়েদ, ঝাড়খণ্ডের তাবরেজ আনসারী সহ অনেক মুসলিম ও দলিতদের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এক শ্রেণীর অশিক্ষিত, বর্বর, উন্মাদ, ধর্মান্ধ উগ্রবাদী হিন্দুরা। প্রতি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে কিছু না কিছু অজুহাত খাড়া করা হচ্ছে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পরে। এসব হায়েনার দল শাসক দলের প্রচ্ছন্ন মদতে আইনের তোয়াক্কা না করেই আইনকে নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখালেও তাদের উপযুক্ত শাস্তি না পাওয়া এসব নীচ, হীন কার্যে লিপ্ত হতে যে প্রলুব্ধ করছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

দেশের এই অরাজক পরিস্থিতির ঘটনা প্রবাহের মাঝেই ফের একবার জয় শ্রীরামধ্বনি দিতে না চাওয়ায় নৃশংসভাবে তিন মুসলিম ছাত্রকে আক্রমন করা হয়েছে। এবার ঘটনাস্থল ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাটের কুখ্যাত জায়গা হিসাবে পরিচিত গোধরা। জানা যায় তিন মুসলিম ছাত্রকে (হাফেজ সামির, হাফেজ সোহেল, হাফেজ সালমান) ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাটের কুখ্যাত গোধরায় জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিতে অস্বীকার করায় পিটিয়ে ছুরি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে উগ্রবাদী ৬ হিন্দু যুবক। মাদ্রাসার তিন ছাত্র সন্ধ্যায় চা পান করতে গেলে দুষ্কৃতীরা জয় শ্রীরাম বলতে বলে বাধ্য করতে থাকে, ছাত্ররা অস্বীকার করলে মারধর শুরু করে, পরে স্থানীয়রা চলে এলে দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে চলে যায়। এই ঘটনা পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ এফ আই আর গ্রহণ করতে অস্বীকার করে উল্টো তাদের হিন্দু এলাকা দিয়ে যাওয়ার জন্য ভৎসনা করে। ঘটনায় রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়।

ইতিমধ্যেই গনপিটুনি রুখতে নতুন আইনের দাবি বিরোধীরা লোকসভা রাজ্যে করেছে। বাংলার ৪৯ বুদ্ধিজীবী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে আবেদন করেছেন, কিন্তু বদলে বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী মামলা পর্যন্ত করা হয়েছে।

জয় শ্রীরামনা বললে হত্যা করার প্রবণতা দেশে উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। কাদের ইন্ধনে হচ্ছে? আর কি ভাবে এই নারকীয় তাণ্ডব বন্ধ হবে? সেই প্রশ্নের উত্তর খুজছে দেশের মুসলিম সম্প্রদায়


শেয়ার করুন

0 facebook: