স্টাফ রিপোর্টার।। কথিত বাল্যবিয়ের ওজুহাতে প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও বিয়ে ভেঙ্গে দেওয়ার খবর আসছে, যুক্তি হিসেবে যেসব বিষয় উত্থাপন করা হয় তার প্রথমেই থাকে অপ্ল বয়সে বিয়ে হলে নাকি গর্ভবতী মা ও সন্তানের জিবনের ঝুকি থাকে, এদিকে দেশের ৪০% প্রাপ্ত বয়স্কা যুবতী ও বিবাহিতা নারিদের সিজার ছাড়া বাচ্চাই হচ্ছেনা, অথচ প্রায় প্রতিদিনই শিশু ও কিশোরীদের ধর্ষণ ও তাদের গর্ভবতী হয়ে বাচ্চা প্রসবের ঘটনা দেশে এখন প্রায় পানি ভাতের মতো। এরকমই এক ঘটনা ঝালকাঠির সদর উপজেলার মহদীপুর গ্রামের ১৩ বছরের এক কিশোরীর সাথে ঘটেছে। গত বুধবার ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সে একটি সুস্থ পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। বর্তমানে সে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তবে দুঃখের বিষয় হলো তার গর্ভধারিণী মা এবং সৎ বাবা ওই কিশোরীকে বিভিন্ন জনের সঙ্গে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে। তাই এখন ওই সন্তানের বাবা কে সে-কথা জানে না ওই কিশোরী।
এর আগে ১০ সেপ্টেম্বর ঝালকাঠি থানায় শিশু আইনের ৭৮(১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করে ওই কিশোরী। পরে পুলিশ তার মা ও সৎ বাবাকে গ্রেফতার করেছে। এরা দু'জনই বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে,, ঝালকাঠি সদর উপজেলার মহদীপুর গ্রামে ওই কিশোরীর বাবার সঙ্গে তার মায়ের তালাক হয়। এরপর ২০১৪ সালে ওই কিশোরীর মা শহরের কালীবাড়ি সড়কের এক টেলিভিশন মেকানিককে বিয়ে করে। এরপর ওই কিশোরী তাদের সঙ্গেই থাকত।
মেয়েটি যখন ৫ম শ্রেণিতে পড়ে, তখন থেকেই তাকে জোর করে মা ও সৎ বাবা অন্য পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজে বাধ্য করত। বর্তমানে ওই কিশোরী ঝালকাঠি উদ্বোধন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এরপর ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
পরে খবর পেয়ে ১০ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি থানায় নিয়ে আসে। ওইরাতেই শহরের কালীবাড়ি সড়কে অভিযান চালিয়ে কিশোরীর মা ও সৎ বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ওই কিশোরী বলে, আমাকে জোর করে এ কাজে বাধ্য করা হয়েছে। আমার মা ও সৎ বাবা অন্য পুরুষ ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে পাহারা দিত। আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এ ধরনের কাজ করা হয়েছে। এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য আমাকে ভয়-ভীতি দেখানো হতো।
সে বলে, শুধু অন্য পুরুষ নয়, আমার সৎ বাবাও প্রায়ই আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতো।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নাজনিন বেগম বলেন, ওই কিশোরীর প্রসব বেদনা শুরু হলে বুধবার সকালে ঝালকাঠি হাসপাতালে আসে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই জরুরি বিভাগে সে স্বাভাবিকভাবে একটি পূত্র সন্তান প্রসব করে। এরপর তাকে গাইনি ওয়ার্ডে আনা হয়।
ঝালকাঠি থানার ওসি মুহম্মদ আবু তাহের বলেন, কিশোরির অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা মামলা নিয়ে তার মা ও সৎ বাবাকে গ্রেফতার করেছি। কিশোরির জন্ম দেয়া সন্তানের পিতৃপরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য নবজাতক এবং কিশোরীর সৎ বাবার শরীর থেকে নমুনা নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকা সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে।
0 facebook: