আন্তর্জাতিক ডেস্ক।। ভারত
নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকায় শ্রীনগরের ঐতিহাসিক জামিয়া মসজিদে
আজও জুমা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। এ নিয়ে একটানা ১২তম শুক্রবার সেখানে জুমা নামাজ হল না।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নেয়ার
পরে সেখান কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়।
গতকাল
(বৃহস্পতিবার) জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রীয় সরকার শাসিত প্রদেশে পরিণত হওয়ায় সেখানে নয়া
আইন কার্যকর হয়েছে। কেন্দ্রশাসিত নয়া প্রদেশে আজই ছিল প্রথম শুক্রবার। যদিও বিগত জুমাবারের
ন্যায় আজও প্রশাসন ঐতিহাসিক জামিয়া মসজিদে জুমা নামাজ আদায়ের অনুমতি দিতে পারেনি।
'কেন্দ্রীয়
সরকার কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে'
এ
প্রসঙ্গে আজ (শুক্রবার) ‘অল ইন্ডিয়া সুন্নাত অল জামায়াত’-এর সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল
মাতীন রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘কাশ্মীর পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় সরকার সম্পূর্ণ
ব্যর্থ হয়েছে। কাশ্মীরের বড় বড় জামে মসজিদগুলোতে পর পর ১২ সপ্তাহ বা বারোটা জুমা নামাজ
হয়নি। অথচ তারা (কেন্দ্রীয় সরকার) বলছে যে, কাশ্মীরে শান্তি ফিরছে! এটা অত্যন্ত ব্যর্থতা
তাদের। কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে। আগামী জুমায় যাতে সেখানকার
বড় বড় জামে মসজিদগুলোতে মুসুল্লিরা জুমা নামাজ পড়তে পারে কেন্দ্রীয় সরকার তার ব্যবস্থা
করুক।’
কাশ্মীর
থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করা প্রসঙ্গে মুফতি আব্দুল মাতীন বলেন, ‘৩৭০ ধারা যেটা তুলে দিয়েছে
সরকার, আমি বলব এটা কাশ্মীরের জনগণের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার ‘চরম বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে।
কিন্তু সে যা-ই করুক সেখানে শান্তি ফেরাবার দায়িত্ব তাঁদের। অবিলম্বে যাতে কাশ্মীরে
শান্তি ফেরে, সেখানকার মানুষ আজও মোবাইল-ইন্টারনেট পরিসেবা পাচ্ছে না। এ নিয়ে গোটা
বিশ্ব তাকিয়ে আছে। ভারতের গণতন্ত্র বিপন্ন। কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সুতরাং,
দেশ থেকে সেটাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখে দেওয়াটা ‘চরম অমানবিক’। সেখানকার মানুষের স্বাভাবিক
জীবনযাত্রা যাতে ফিরে আসে সেজন্য কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত সে ব্যাপারে চেষ্টা করা এবং
আগামী সপ্তাহে সেখানে বড় বড় মসজিদগুলোতে মুসুল্লিরা জুমা নামাজ পড়তে পারে সে ব্যাপারে
উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’
আজ
(শুক্রবার) সহিংস বিক্ষোভের আশঙ্কায় শ্রীনগরের ঐতিহাসিক জামিয়া মসজিদসহ অন্য বড় মসজিদে
নামাজ পড়তে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা
হয়। এর পাশাপাশি কাশ্মীর উপত্যকায় স্পর্শকাতর এলাকায় আংশিক বিধিনিষেধের মধ্যে অতিরিক্ত
নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
প্রশাসনের
পক্ষ থেকে লোকেদেরকে নিজ নিজ এলাকার মসজিদগুলোতে জুমা নামাজ আদায়ের আবেদন জানানো হয়।
কিন্তু শ্রীনগর ও এর আশেপাশে যেখানে জামিয়া মসজিদ রয়েছে সেই এলাকায় সহিংস বিক্ষোভের
আশঙ্কায় লোকেদের এক জায়গায় জড়ো হতে নিষেধ করা হয়।
সরকারি
সূত্রে প্রকাশ, কাশ্মীর উপত্যকার পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ আছে এবং বর্তমানে কোনও অপ্রীতিকর
ঘটনার কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এসময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দক্ষিণ কাশ্মীর ও উত্তর কাশ্মীরের
অনেক স্পর্শকাতর এলাকায় আংশিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আজ উপত্যকার সমস্ত দোকান,
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। রাস্তায় যানবাহন চলাচলও কম ছিল।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
ভারত
0 facebook: