স্টাফ রিপোর্টার॥ ফতুল্লার ভুইগড়ে এক কওমি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আল আমিন নিজেই ১২ ছাত্রীকে ধর্ষনের কথা স্বীকার করেছে। আপনার ছেলে মেয়েকে কওমী মাদ্রাসায় পড়ানো থেকে বিরত থাকুন।
স্থানীয় সূত্র ও অপরাধীর জবানবন্দীতে জানা যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের স্কুল শিক্ষক কর্তৃক ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে ধ-র্ষণের ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার ১২ জনেরও অধিক ছাত্রীকে ধ-র্ষণের অভিযোগে এই মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
৪ জুন, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকার বাইতুল হুদা কওমী ক্যাডেট মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তার মোবাইল ও কম্পিউটার থেকে প্রচুর অশ্লী-ল ভিডিও উদ্ধার করে র্যাব-১১।
আটক অধ্যক্ষের নাম মাওলানা মুহম্মদ আল আমিন। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ভূঁইয়া পাড়া এলাকার রেনু মিয়ার ছেলে। আল আমিন বাইতুল হুদা কওমী ক্যাডেট মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। একই সঙ্গে তিনি ফতুল্লা এলাকার একটি মসজিদের ইমাম হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
র্যাব অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহম্মদ আলেপ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সিদ্ধিরগঞ্জে ২০ এর অধিক শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষণের ঘটনায় ২ শিক্ষককে গ্রেপ্তারের সংবাদটি টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও ও পত্রপত্রিকায় ছবি দেখে উক্ত মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণির এক ছাত্রী তার মাকে জানায় ‘আমাদের আল আমিন হুজুরও তো আমাদের সাথে এরকম করে’। এ সময় শিশুটি তার মায়ের কাছে বিস্তারিত ঘটনা জানায়।
পরে শিশুটির মা ঘটনাটি র্যাবকে জানালে ওই মেয়ের জবানবন্দি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে র্যাব। অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু ঐ শিক্ষার্থীই নয়, ২০১৮ সাল থেকে অর্থাৎ গত ১ বছর যাবৎ ঐ মাদ্রাসার ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অন্তত ১২ জন ছাত্রীকে ধ-র্ষণ করেছে অধ্যক্ষ। এ ছাড়া অনেক শিক্ষার্থীকে যৌ-ন হয়রা-নিও করেছে।
তিনি আরো জানান, আটক অধ্যক্ষ আল আমিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধ-র্ষণ, ধ-র্ষণ চেষ্টা ও যৌ-ন হয়রা-নির বিষয়টি স্বীকার করেছে। অধ্যক্ষ পরিবারসহ মাদ্রাসার ভেতরেই থাকত। বাসায় তার স্ত্রী না থাকলে এবং মাদ্রাসা ছুটি থাকলে সেই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে নানাভাবে শিক্ষার্থীদের কখনও ধ-র্ষণ, কখনও ধ-র্ষণের চেষ্টা ও যৌ-ন হয়রা-নি করত। তবে তার দাবি, তিনি আগে এমনটা ছিলেন না, ইবলিসের ছলনায় পড়ে তিনি এমনটা করেছেন। এ ঘটনায় তার বিরু-দ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে এ ঘটনা জানতে পেরে অধ্যক্ষের শাস্তির দাবি ও কওমী মাদ্রাসা বন্ধের দাবিতে বি-ক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
ঘটনার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন করেছেন র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল কাজী শামসের উদ্দিন, ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহম্মদ আসলাম ও পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল আজিজ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্ণেল কাজী শামসের উদ্দিন বলেন, এ সকল ঘটনার প্রমাণস্বরূপ আমরা তার (আল আমিন) মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার তল্লাশী করে প্রচুর প-র্নোগ্রাফি ভিডিও পেয়েছি। কিছু কিছু প-র্নোগ্রাফি সে নিজেও তৈরি করেছে। সে তার কাছ পড়তে আসা ছাত্রীদের ছবির অংশ প-র্নোগ্রাফি ভিডিওর সাথে সংযুক্ত করত। পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে ছাত্রীদের ব্লাকমেল করে একাধিকবার ধ-র্ষণ করত।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন বুধবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অক্সফোর্ড নামে একটি বেসরকারি স্কুলের ২০ জনেরও অধিক ছাত্রীকে ৪ বছর ধরে যৌ-ন হয়রা-নিসহ ধ-র্ষণের অভিযোগে সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলাম সরকার ওরফে আশরাফুল ও প্রধান শিক্ষক জুলফিকার ওরফে রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ
কওমী সমাচার
ঢাকা বিভাগ
ধর্ষণ
0 facebook: