24 May 2018

নাবালিকা পাচার চলছে যৌনপল্লিতে

প্রতিকি ছবি
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বাংলাদেশ থেকে বছর চোদ্দোর কিশোরী রূপাকে (নাম পরিবর্তিত) অপহরণ করে এনে সোনাগাছির যৌনপল্লিতে তোলা হয়েছেবছর দুই আগে বড়তলা থানার কাছে এমনই একটি অভিযোগ জমা পড়েছিল খাস সোনাগাছি থেকেই

অভিযোগ, থানার টনক নড়েনিফলে টানা দুবছর ধরে ইচ্ছের বিরুদ্ধে যৌন ব্যবসায় কাজ করতে হয়েছে ওই নাবালিকাকেপরে খোদ রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরের ডিরেক্টরেটের অফিস থেকে লালবাজারের যুগ্ম কমিশনার (গোয়েন্দা)-কে বিষয়টি জানানো হলে লালবাজারের অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিট’ (এএইচটিইউ)-এর তৎপরতায় উদ্ধার করা হয় বাংলাদেশের ওই কিশোরীকেশুধু এক জন নয়৪ মে এবং ৯ মেদুদিনের অভিযানে মোট চার জন নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্রের খবরগ্রেফতার করা হয় দুজন দালালকেওতবে সূত্রের খবর, সোনাগাছিতে এখনও অনেক নাবালিকা রয়ে গিয়েছেতাদের পাচারকারী এবং কয়েক জন দালালও এখনও অধরাসোনাগাছির যৌনকর্মীদেরই একাংশের অভিযোগ, ওই পাচারকারী এবং দালালেরা এলাকায় ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না

গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা একটি ই-মেল পাঠায় এ রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরকেতাতে বলা হয়, ২০১৬ সালের ১৪ জুন থেকে শেরপুরের বাসিন্দা, বছর চোদ্দোর এক কিশোরী নিখোঁজগত দুবছর তার কোনও খোঁজ মেলেনিকিন্তু সম্প্রতি মেয়েটির বাবার কাছে বিভিন্ন নম্বর থেকে বারবার খবর আসছে যে, তাঁদের মেয়ে কলকাতার সোনাগাছিতে রয়েছে!

এর পরে সমাজকল্যাণ দফতর যাচাই করে দেখে, বাংলাদেশের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ই-মেলে যা লিখেছে, তা সত্যিএর পরেই দফতর লালবাজারের গোয়েন্দা-প্রধানকে চিঠি পাঠায়তার ভিত্তিতেই গত ৪ মে সোনাগাছিতে অভিযান চালায় লালবাজারের এএইচটিইউকিন্তু অভিযানের খবর আগেই পৌঁছে গিয়েছিল এলাকায়ফলে যে ঠিকানায় রূপাকে পাওয়া যেতে পারে বলে খবর ছিল, সেখানে তার খোঁজ মেলেনিসেখান থেকে অপর এক নাবালিকাকে উদ্ধার করে পুলিশ

পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে খোকা ওরফে আহিদ গাজি এবং নিশা নামে দুই দালাল ছজন যৌনকর্মীকে নিয়ে পালিয়ে যায় ভাঙড়ের দিকেকিন্তু ধরা পড়ে যায় ভাঙড় থানার হাতেনিশা তার বাবাকে ডেকে পরের দিনই জামিন পেয়ে যায়সমাজকল্যাণ দফতরের এক অফিসারের কথায়, ‘‘বড়রা জামিন পেলেও নাবালিকাদের অভিভাবক ছাড়া কারও হাতে তুলে দেওয়া যায় না’’ কিন্তু ভাঙড় থানা নাবালিকা চার জনকে কোনও পরিচয়পত্র যাচাই না করেই নিশার বাবার হাতে তুলে দেয়ফলে থানা থেকে ছাড়া পেয়েই ছজনকে নিয়ে খোকা ও নিশা ফের পালিয়ে যায়পরে এক ব্যক্তির সাহায্যে ৯ মে বাসন্তী থেকে লালবাজারের গোয়েন্দারা গিয়ে ওই ছজনকে উদ্ধার করেএদের মধ্যেই ছিল বাংলাদেশি রূপা-সহ তিন নাবালিকাবাকি তিন জন অবশ্য সাবালকফের গ্রেফতার করা হয় খোকা ও নিশাকে

রূপার পাচারকারী জরিনা এবং ইসমাইলকে অবশ্য এখনও ধরা যায়নিসোনাগাছি সূত্রের খবর, জরিনা, ইসমাইল ও খোকার মছলন্দপুরের তেঁতুলিয়াতেও ডেরা রয়েছেএরা যখন খুশি বাংলাদেশে যায় এবং এ পারে ফিরে আসেএরাই নাবালিকা পাচার করে সোনাগাছি এলাকায়অভিযোগ, বড়তলা থানার কাছে এ সব তথ্যই রয়েছেকিন্তু থানা কোনও কাজ করে না!


ব়ড়তলা থানার দাবি, এই মেয়েটি সম্পর্কে তাদের কাছে খবর ছিল নাবরং সোনাগাছিতে নজরদারি চালাতে দুজন অফিসার এবং চার জন করে সেপাই ২৪ ঘণ্টার জন্য নিযুক্ত রয়েছেননাবালিকা আনা হচ্ছে কি না, তা নিয়মিত দেখা হয়এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) প্রবীণ ত্রিপাঠীকে যোগাযোগের চেষ্টা হলে তিনি ফোন ধরেননিটেক্সট বার্তারও উত্তর দেননি


শেয়ার করুন

0 facebook: