22 June 2018

ভারতে ভোট না দেওয়ায় ৭ টি মুসলিম পরিবারকে ঈদের নামাজ পড়তে দেওয়া হলোনা



আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ টানা এক মাস রোজা রাখার পর গতকাল শনিবার গোটা ভারতজুড়ে মুসলমানেরা ঈদের খুশিতে মেতে উঠেছিল। গোটা ভারতের মুসলিম সমাজ আনন্দের সাগরে ডুব দিলেও আলিপুরদুয়ারের এক বিরল ঘটনায় প্রশ্ন তুলেছে মানুষের বিবেক কোথায় পৌঁছেছে। শাসক দলকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট না দেওয়ার সন্দেহে ৭-টি মুসলিম পরিবারকে ঈদের নামাজ থেকে বঞ্চিত করে আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল অধীনে থাকা ভাটিবাড়ি এলাকার তৃণমূল সমর্থকরা। শুধু ঈদের নামাজ থেকে বঞ্চিত নয়, বরং সামাজিক দিক থেকেও বয়কট করার অভিযোগ উঠেছে।

আলিপুরদুয়ারের ভাটিবাড়ি পঞ্চায়েতের পূর্ব কুমারিজান এলাকার ১০/২৬২ নম্বর বুথের ভোটার ওই সাতটি পরিবারের সদস্যরা৷ গত ১৭ মে পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে৷ অভিযোগ, ফল ঘোষণার পরের দিন থেকে সামাজিক বয়কটের শিকার ওই সাতটি পরিবারের ২৬ জন সদস্যরা৷ তাঁদের মধ্যে ১০ জন আবার শিশু৷ কিন্তু, কেন?  শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের সন্দেহ, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দেননি তাঁরা৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ তেমনই৷ এদিকে সামাজিক বয়কটের মুখে পড়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ওই সাতটি মুসলিম পরিবার৷ জমির ফসল কাটতে পারছেন না৷ বাড়িতে থাকা ফসল বিক্রিও করতে পারছেন না৷ ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রোজগার৷ দোকান-বাজার-সহ সর্বত্রই ওই সাতটি পরিবারের সদস্যদের বয়কট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ৷ তাঁদের আরো অভিযোগ, পরিস্থিতি এমনই, যে শনিবার খুশির ঈদে বাড়ির পাশে মাঠে ওই সাতটি পরিবারের সদস্যরা নামাজও পড়তে পারেননি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।

পরিবারের সদস্য মোফাজ্জল হোসেনের বক্তব্য, ‘আমরা তৃণমূল কংগ্রেস করি। কিন্তু আমরা তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিইনি বলে সন্দেহ করেছে স্থানীয় তৃণমূলের নেতারা। আর সেই কারণে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরের দিন শাসকদলের স্থানীয় নেতারা বাড়িতে এসে সামাজিক বয়কটের কথা ঘোষণা করে যায়। বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য সালিশি সভাও বসেছিল৷ কিন্তু, সামাজিক বয়কট তোলা হয়নি৷

লোকাল সূত্রে জানা যায় যে, ঘটনাটি জানাজানি হতেই ভাটিবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মামণি দাস৷ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশও৷ যদিও ওই সাতটি সংখ্যালঘু পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কট করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা৷ তাঁদের দাবি, ওই সাতটি পরিবারের পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে মিশতে পারে না৷ এটা একান্তভাবেই তাঁদের সমস্যা৷ ওই বুথে তৃণমূল প্রার্থী ১৬৩ ভোটে হেরে গিয়েছেন৷ তাহলে তো ১৬৩ জনকে বয়কট করা হত৷ অন্যদিকে বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আলিরপুরদুয়ারের ভাটিবাড়ি তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি দীনেশ চন্দ্র দাস৷


শেয়ার করুন

0 facebook: