আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মালয়েশিয়ায় মো. জামাল মিয়া (২৮) নামের এক বাংলাদেশি শ্রমিককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পিটিয়ে হত্যার সময় মোবাইলে ধারণকৃত একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবক রাস্তার পাশে পড়ে আছে এবং তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। ঘটনার পর তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে।
নিহত প্রবাসী জামাল কুমিল্লা সদর থানার মদিনানগর এলাকার মো. জলিল মিয়ার ছেলে। দেশে জামালের স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে। নিহত জামালের শ্যালক মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. লিটন মিয়া জানান, প্রতিদিনের মতো জামাল মিয়া সোমবার সকাল ৭টায় কাজের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে সানওয়ে মেনতারি কোর্ট এলাকায় যান। এসময় পরিকল্পিতভাবে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা ৪ জন মালয়েশিয়ান যুবক ও এক তরুণী প্রকাশ্যে তার মাথায় ও মুখে হকস্টিক দিয়ে বেদম মারধর করে। এতে জামালের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। ঘটনাটি স্থানীয় নিরাপত্তাকর্মী ও লোকজনের সামনে ঘটলেও তাকে বাচাঁতে কেউ এগিয়ে আসেনি। এক ঘণ্টা পর পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি হাসপাতালে মারা যান।
ইউনিভার্সিটি মালায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার জামাল মৃত্যুবরণ করেন। জামাল মালয়েশিয়ায় ৯ বছর ধরে অবস্থান করছিলেন এবং স্থানীয় গ্লোভটনিক্স ইলেকট্রনিক্স নামে একটি ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন।
এ ঘটনায় কোনও মামলা দায়ের হয়েছে কিনা জানতে চাইলে জামালের শ্যালক লিটন জানান, তার ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা রয়েছে। তদন্তের পর থানায় (বালাই) একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। এছাড়া ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে তার লাশ কয়েক দিনের মধ্যেই দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান লিটন।
কি কারণে তাকে এভাবে নির্মমভাবে পিটিয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানির সুপারভাইজার লক্ষীপুর জেলার মো. মুসলেহ হোসেন বলেন, জামাল আমার অধীনেই কাজ করতো। ঘটনার খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছিলাম তখন তার জ্ঞান ছিল। তার কাছে হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আমাকে জানান এই হামলার আগে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র তাকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক একটি মেয়ে দিয়ে আপত্তিকর অবস্থায় ভিডিও করে এবং তা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। তাদের চাহিদামত টাকা দিতে না পারায় পূর্বপরিকল্পিতভাবেই তার ওপর এই নির্মম নির্যাতন চালানো হয়।
এ ঘটনায় মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হলে শ্রম কাউন্সিলর মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনায় কারা জড়িত, কেনইবা তাকে হত্যা করা হয়েছে খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। হাইকমিশন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: