সিলেট প্রতিনিধিঃ বালাগঞ্জে
৭ম শ্রেণির মাদরাসা ছাত্রীকে পাশবিক নির্যাতনকারী সকল অপরাধীর গ্রেফতার ও ফাঁসির
দাবি জানিয়েছেন শিশুটির বাবা-মা ও এলাকাবাসী। শনিবার বেলা ২টায় সিলেট জেলা
প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান তাঁরা।
নির্যাতনের শিকার
শিশুটির মা লিখিত বক্তব্যে বলেন,
‘তার ১৩ বছরের মেয়ে উপজেলার শিওরখাল মহিলা মাদরাসার ৭ম শ্রেণির
ছাত্রী। গত ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় বসতঘরের বারান্দা থেকে মুখে চেপে জোরপূর্বক তুলে
নিয়ে এলাকার চিহ্নিত অপরাধী আব্দুল আহাদ (২৫) ও আজই মিয়াসহ (৩২) আরও অন্তত ৪ জন
মিলে তাকে গণধর্ষণ করে। অনেক খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রক্তাক্ত শরীরে অজ্ঞান অবস্থায়
মেয়েকে উদ্ধার করেন তারা। মেয়ের জ্ঞান ফিরে আসলে তার ওপর নির্যাতনকারী আব্দুল আহাদ, আজই
মিয়ারকে চিনতে পারার কথা উপস্থিত লোকজনের কাছে প্রকাশ করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষায়
গণধর্ষণের বিষয়টি প্রতীয়মান হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ
ঘটনার পরদিন গত ২৩ নভেম্বর ধর্ষিত শিশুর বাবা বাদী হয়ে আব্দুল আহাদ ও আজই মিয়ার
নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করে বালাগঞ্জ থানায় মামলা (নং৮(১১)১৮) দায়ের
করেন। পরবর্তীতে পুলিশী অভিযানে গত ২৪ নভেম্বর আব্দুল আহাদ ও আজই মিয়াকে গ্রেপ্তার
করা হয়। কিন্তু ঘটনার প্রায় দুই মাস
অতিবাহিত হলেও জড়িত অন্য কোনো আসামীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি
বলেন, ‘এ
ঘটনায় ইতোমধ্যে বালাগঞ্জের মাদরাসা বাজার, মোরারবাজার, জনকল্যাণ
বাজার, আজিজপুর
বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ,
মানববন্ধন,
প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমনকি যুক্তরাজ্যেও প্রতিবাদ
সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসার
শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আইনজীবী, মানবাধিকার
কর্মী, সাংবাদিক, সুশীল
সমাজের প্রতিনিধি, স্থানীয়
আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ
করেন।’
ভিকটিমের মা আরো বলেন, ‘সিলেট-৩
আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী ন্যক্কারজনক এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভিকটিমকে দেখতে যান। তিনিও এ ঘটনায় জড়িত সকল অপরাধীদের
গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে আমাদের আশ্বাস প্রদান করেন।’
ভিকটিমের পরিবারের
অভিযোগ, ‘এতো
আন্দোলন ও বিভিন্ন মহলের দাবির পরও আসামীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না। মামলার দুই
আসামীকে গ্রেপ্তার করা হলেও জড়িত অন্য অপরাধীদের রহস্যজনক কারণে গ্রেপ্তার করা
হচ্ছে না। ফলে মামলার যথাযথ তদন্ত এবং ভিকটিমের ন্যায়বিচার পাওয়ার স্বার্থে সকল
মহলের সহযোগীতা প্রয়োজন।’
ভিকটিমের বাবা-মা বলেন, তারা
তাদের মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। সে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত
হয়ে পড়ায় পড়ালেখা বন্ধ রয়েছে। তাদের মেয়ের মতো আর কারো শিশুকন্যা যেন পাশবিকতার
শিকার না হয়, এ
জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন সকলের সহায়তায় অপরাধীদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি
ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিমের বাবা-মা ছাড়াও এলাকার
বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ
ধর্ষণ
সিলেট বিভাগ
0 facebook: