জেলা প্রতিনিধিঃ আজ দুপুরে নেত্রকোনায় প্রকাশ্য দিবালোকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন রক্তঝড়া এক শিশু সন্তানের কাটা মস্তক নিয়ে পালানোর সময় ক্ষিপ্ত জনতা অজ্ঞাত ঘাতক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
আজ ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে মেথরপট্টিতে ব্যাগ থেকে শিশুর কাটা মস্তক পড়ে যাবার পর ঘাতক যুবককে ধাওয়া করে শহরের নিউটাউন অনন্ত পুকুর পাড়ে পিটিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা।
এদিকে গত কিছুদিন ধরে শিশুধরা ও কাটা মস্তকের গুজব নিয়ে নারী-পুরুষের মাঝে নানান ধরনের আলোচনা সমালোচনার মাঝে অনাকাঙ্খিত এই লোমহর্ষক ঘটনায় সারা জেলায় ব্যাপক তোলপাড় ও সাধারনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার নেত্রকোনায় সংঘটিত অবিশ্বাস্য এই ঘটনা সিনেমার কল্প-কাহিনীকেও হার মানিয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।
জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবার দুপুরে কর্মচঞ্চল নেত্রকোনা শহর এলাকায় স্ব স্ব কাজে সকলেই যখন ব্যস্তায় সময় পার করছিলেন, দুপুর ঠিক ১২টার দিকে শহর এলাকার বারহাট্টা রোডস্থ শ্রমিক ইউনিয়ন সংলগ্ন মেথরপট্টিতে মদ্যপ অবস্থায় মাতলামি করার সময় অজ্ঞাত এক যুবকের ব্যাগ থেকে হঠাৎ একটি শিশুর সদ্য কাটা রক্তে রঞ্জিত মস্তক মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় সেখানে উপস্থিত লোকজন তা দেখে ভয়ে আঁতকে উঠেন।
এ সময় ঘাতক যুবক দৌঁড়ে পালানোর সময় নিকটবর্তী নিউটাউন অনন্ত পুকুর পাড়ে পৌঁছলে জনতাও পেছন পেছন ধাওয়া করে ঘিরে ফেলে। এ সময় চরম উত্তেজিত জনতা লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে অজ্ঞাত ওই ঘাতক যুবককে হত্যা করে।
এরপর সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মডেল থানা পুলিশ শিশুর কাটা মস্তক এবং অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
এই সংবাদ ঝড়ের গতিতে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র, শিক্ষক অভিভাবকসহ সকলের মাঝে চরম আতঙ্ক শুরু হয়। শিশুর গলাকাটা মস্তক ও ঘাতকের লাশ দেখার জন্য পুকুর পাড়ে প্রচন্ড ভিড় জমাতে থাকেন। এ সময় উৎসুক জনতাকে সামাল দিতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়।
এ সময় রইস উদ্দিন নামে স্থানীয় কাটলী এলাকার এক রিকসা চালক ফেসবুকে ছবি দেখার পর থানায় হাজির হয়ে গলা কাটা শিশুটি তার পুত্র সজিবের বলে দাবি করেন। শিশটির বয়স ৮ বছর বলেও জানান।
তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সজিব তার কাছে আইসক্রীম খাবার জন্য ৫টি টাকা চাইলে না থাকায় তিনি দিতে পারেননি। এই বলে তিনি হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন।
এরপর সংবাদ পেয়ে বিকেল চারটার দিকে কাটলী ব্রিজের দক্ষিণ পাশের তিনতলার অসমাপ্ত বাথরুম থেকে পুলিশ শিশু সজিবের মস্তক বিহীন লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি গুরুত্বসহ তদন্ত ও অনুসন্ধান চালিয়ে দ্রুত শিশু হত্যার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। অজ্ঞাত ওই যুবকের পরিচয় জানা যায়নি। তার পরিচয় উদ্ধারের জোর চেষ্টা চলছে।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ
জেলা সংবাদ
0 facebook: