বিশ্বনেতাদের মধ্যাহ্নভোজে এরদোগানের জন্য
নির্দিষ্ট চেয়ার খালি(বাম দিকে) - ছবি : সংগৃহীত
|
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।। মিসরের সামরিক অভ্যুত্থানের হোতা স্বৈরশাসক আবদুল ফাতাহ সিসি উপস্থিত থাকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যাহ্ন ভোজের দাওয়াত প্রতাখ্যান করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান। নিউ ইয়র্কের জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে তুর্কি দৈনিক ডেইলি সাবাহ।
জাতিসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশন উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে সমবেত হয়েছেন বিশ্ব নেতারা। মঙ্গলবার দুপুরে অধিবেশনের ফাঁকে রাষ্ট্রনেতারা মধ্যাহ্ন ভোজে যান। এসময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে একই টেবিলে মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ ছিলো তুর্কি প্রেসিডেন্টের। কিন্তু ওই একই টেবিলে মিসরের সামরিক অভুত্থানের হোতা সিসি উপস্থিত থাকায় এরদোগান সেখানে বসেননি খাবার গ্রহণের জন্য।
সূত্র জানিয়েছে, সিসি উপস্থিত আছেন সেটি জানতে পেরে এরদোগান ও তার সঙ্গীরা ওই টেবিলে যাননি। তারা অন্যত্র মধ্যাহ্ন ভোজ সম্পন্ন করেন।
ওই টেবিলে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতিসঙ্ঘর মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেল, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ বেশ কয়েকজন বিশ্ব নেতা।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সিসির সুসম্পর্ক শুরু থেকেই। এর আগে এক বক্তৃতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প সিসিকে ‘প্রিয় স্বৈরশাসক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল যেটি শ্রোতদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছিল।
অন্যদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট শুরু থেকেই মিসরের সামরিক অভ্যুত্থান ও এরপর গণতন্ত্রপন্থী ওপর দমন পীড়নের প্রতিবাদ করে আসছেন। এর আগে তিনি জাতিসঙ্ঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন, মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহম্মদ মুরসির মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করতে।
মুরসির মৃত্যুর পর তুর্কি প্রেসিডেন্ট সিসি সরকারের সমালোচনা করে বলেছিলেন, দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট ২০ মিনিট অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলেও তারা এগিয়ে যায়নি। (মৃত্যুর পর) তার লাশ পরিবারের কাছে দেয়নি, এমনকি শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মুরসিকে নিজ শহরে দাফনও করতে দেয়নি।
এরদোগান বলেন, সিসি একজন অত্যাচারী, কোন গণতান্ত্রিক শাসক নয়। আমি আশাকরি জাতিসঙ্ঘ যেমন জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডে তুরস্কের শক্ত অবস্থানকে সঠিক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে একইভাবে তারা মুরসির রহস্যজনক মৃত্যুর বিষয়েও শক্ত অবস্থান নেবে। খাশোগির মৃত্যুর ঘটনাকে যেভাবে আমরা ছেড়ে দেইনি, তেমনিভাবে মুরসির মৃত্যুর ঘটনাও ছেড়ে দেয়া উচিত নয়।
২০১২ সালে মিসরে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হন মুহম্মদ মুরসি; কিন্তু এক বছর পর এক সামরিক অভ্যুত্থানে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে গদিতে বসে সেনাপ্রধান স্বৈরশাসক আবদুল ফাতাহ সিসি। এরপর প্রেসিডেন্ট মুরসিসহ ব্রাদারহুড নেতাকর্মীদের ওপর চলে দমন নিপীড়ন। বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় কয়েক শ’ কর্মীকে। এরপর শুরু হয় গ্রেফতার, গুম, নির্যাতন আর মামলায় সাজা দেয়া।
খোদ প্রেসিডেন্ট ও ক্ষমতাসীন দল ব্রাদারহুড প্রধানের বিরুদ্ধেও যেখানে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয় সেখানে অন্যদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি মামলায় ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতাকর্মীদের মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়েছে।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
তুরস্ক
0 facebook: