স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ ভারতের
বিহার রাজ্যের বেগুসরাই জেলার যৌনপল্লী বখরি এলাকায় গিয়ে এক যুবক ২০০ রুপি তুলে দিয়েছিল
এক দালালের হাতে। তারপরেই সেই যুবকের 'পছন্দ' করা যৌনকর্মীর ঘরে যাওয়ার অনুমতি মিলেছিল। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই
যুবকটি বেরিয়ে আসে সেই ঘর থেকে।কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আবারও সে ফিরে এসেছিল সেই 'কোঠা'য়,
এবারে সঙ্গে পুলিশ।
যৌনকর্মীদের
মধ্যে থেকে যুবকের 'পছন্দ'
করা সেই মেয়েটি সামনে এগিয়ে এসেছিল। এই পর্যন্ত পড়ে কি
আপনাদের মনে হচ্ছে যে এটা কোনও চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য? একেবারেই নয়। এটা সম্পূর্ণ সত্যি ঘটনা। চমকের আরও বাকি আছে।
দিন
কয়েক আগে বেগুসরাইয়ের ওই যৌনপল্লীতে যে মেয়েটিকে 'পছন্দ'
করেছিল দালালের হাতে টাকা তুলে দেয়া যুবকটি, সে তারই বোন। বছর তিনেক আগে হারিয়ে যাওয়া বোনকে উদ্ধার করতেই ওই যুবক 'খদ্দের'
সেজে হাজির হয়েছিল ওই যৌনপল্লীতে।
বিহারের
পুলিশ সেদিন দুজন নারীকে দেহব্যবসা থেকে উদ্ধার করেছে। তাদেরই মধ্যে একজন বিহারেরই আরেক জেলা শিবহরের
বাসিন্দা প্রতিমা (নাম পরিবর্তিত)।
তিনি
নিজের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পরে ফোনে জানিয়েছেন, ‘বছর তিনেক আগে অশোক
খলিফা নামে এক ব্যক্তি সীতামাড়ি জেলা থেকে আমাকে ফুঁসলিয়ে বুখরিতে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই ওই কাজ
করাতে বাধ্য করেছিল সে।’ ছোট ছেলেকে নিয়ে তখন
থেকেই বখরির ওই যৌনপল্লীতে এক রকম বন্দি জীবন কাটাতেন ওই নারী। বাইরের জগতের সঙ্গে
কোনও যোগাযোগ রাখতে দেয়া হতো না।
‘সপ্তাহ দুয়েক আগে
আমার ঘরে এক ফেরিওয়ালা এসেছিল। আমি তাকে দেখেই চিনতে পেরেছিলাম- সে আমার বাপের বাড়ির এলাকার
লোক। সে বলেছিল যে আমাকে
চিনতে পেরেছে। আমি তার মোবাইল নম্বরটা নিয়ে রেখেছিলাম। মাঝে ফোনে কয়েকবার
আলোচনা করেছি তার সঙ্গে যে কীভাবে ওখান থেকে পালানো যায়, তা নিয়ে’-
জানাচ্ছিলেন ওই নারী।
গ্রামে
ফিরে এসে ওই নারীর আত্মীয়-স্বজনকে পুরো ঘটনা জানান ওই ফেরিওয়ালা। বাপের বাড়ির কয়েকজন
ওই নারীকে যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার করার জন্য বেগুসরাইতে হাজির হন।
প্রতিমার
ভাই মনোজ (নাম পরিবর্তিত) বলেন,
‘ফোনেই ওই ফেরিওয়ালা আমার বোনকে জানিয়ে রেখেছিল
যে আমি আসছি। সেই মতো আমি অশোক খলিফা
নামের ওই দালালের কাছে যাই খদ্দের সেজে। ২০০ রুপিতে রফা হওয়ার পরে আমার সামনে দুজনকে হাজির করা হয়েছিল। চোখের ইশারা করে দিয়েছিলাম
বোনকে। তার ঘরে গিয়ে বলে
আসি যে পুলিশ নিয়ে আসছি একটু পরে।’
প্রতিমার
বাবা আগেই বখরি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এরপরে ভাই থানায় গিয়ে পুলিশ দল নিয়ে ফিরে
আসেন। তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার
করা হয় প্রতিমা এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বাসিন্দা আরেক নারীকে।
বখরি
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরৎ কুমার জানিয়েছেন, ‘প্রতিমাকে উদ্ধার করার
পরের দিনই মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়ে আদালতে পেশ করা হয়। তারপরেই তার বাবা-মায়ের হেফাজতে তুলে দেয়া
হয়েছে।’
অভিযোগপত্রে
নাম থাকা নাসিমা খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে মূল অভিযুক্ত অশোক খলিফা এখনও ফেরার।
সূত্রঃ বিবিসি
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: