চক্ষু শিবিরে ২০ জন রোগীর চোখ হারানোর দায় এড়াতে পারেননা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিতে ২০ রোগীর চোখ হারানোর দায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার সংশ্লিষ্ট রিট শুনানিতে এ মন্তব্য করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। চিকিৎসা দেয়া হাসপাতাল ইম্প্যাক্ট মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম। চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে চোখ হারানো ২০ জনের প্রত্যেককে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রুলের জবাব না দেয়ায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জনকে গত ৩ জুলাই ব্যাখ্যা দিতে তলব করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।

একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামে গত ২৯ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে তিন দিনের চক্ষু শিবিরের দ্বিতীয় দিন (৫ মার্চ) ২৪ জন নারী-পুরুষের চোখের ছানি অপারেশন করা হয়। অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহীন। এদের মধ্যে চারজন রোগী নিজেদের উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় আসেন। পরে ইম্প্যাক্টের পক্ষ থেকে ১২ মার্চ একসঙ্গে ১৬ জন রোগীকে ঢাকায় নেয়া হয়। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। ওই অপারেশনের ফলে এদের চোখের এত ভয়াবহ ক্ষতি হয় যে, ১৯ জনের একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়।' ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গত ১ এপ্রিল রিট করেন। রিটের শুনানি নিয়ে চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার কেন চোখ হারানো ২০ জনের প্রত্যেককে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

স্বাস্থ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন, চুয়াডাঙ্গার ডিসি ও এসপি, ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার, ডা. মোহাম্মদ শাহীনসহ মোট ১০ জন বিবাদীকে এ রুলের জবাব নচার সপ্তাহের মধ্যে দিতে বলা হয়।

আদালত পৃথক এক রুলে চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে তিন দিনের চক্ষু শিবিরে চক্ষু চিকিৎসায় ২০ জনের চোখ অস্ত্রোপচারে কার্যকর, যথাযথ ও পর্যাপ্ত নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চান। একইসঙ্গে ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তারের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা কেন গ্রহণ করা হবে না, তাও জানতে চেয়েছিলেন আদালত।

খবর বিভাগঃ অপরাধ জাতীয়

শেয়ার করুন