26 August 2019

জামালপুরের সেই কিশোরী মেয়েদের বিয়ে বিরোধী ডিসির আরেক ভিডিও ভাইরাল (দেখুন)

জামালপুরের প্রাক্তন ডিসি। ফাইল ফটো
স্টাফ রিপোর্টার।। নারী অফিস সহকর্মীর সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ঘটনায় বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীর ছিলেন মাস্তিপ্রিয়। তিনি সময়-সুযোগ পেলেই গানের আসর বসাতেন। ওই আসরে খালি গলায় নিজেও গান গাইতেন। তার গানের এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

গত বৃহস্পতিবার নারী সহকর্মীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের পর রোববার আহমেদ কবীরের গানের ভিডিওটি ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, একটি বাসাবাড়িতে বসে ডিসি আহমেদ কবীর গান গাইছেন। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন তার গান শুনছেন। কেউ কেউ তা মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন।

৫ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে গান গাইতে থাকা ডিসি আহমেদ কবীরের পাশে খাটের ওপর বসা একজন সুন্দরী যুবতিকে দেখা যায়। পাশে আরও দুজন নারী-পুরুষ ছিলেন।

সম্প্রতি জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবীরের একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে তার অফিসের এক নারীকর্মীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। (ভিডিওটি এখানে দেখতে পারেন)

বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনাটি সাজানোবলে দাবি করেন ডিসি আহমেদ কবীর। ওই ঘটনায় জামালপুরসহ সারা দেশের মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় রোববার জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরকে ওএসডি করা হয়। তার বদলে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ পান পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হক। ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) মুশফিকুর রহমানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একজন প্রতিনিধি। কমিটিকে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

আদেশে কমিটিকে প্রকাশিত ভিডিওটির সঠিকতা যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কমিটি প্রয়োজনে সরেজমিন পরিদর্শন করবে এবং ভিডিওটি যাচাইয়ের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেবে। কমিটিতে প্রতিবেদনে সুস্পষ্ট মতামত দিতে হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে জামালপুরের ডিসি থেকে ওএসডি হওয়া আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে উদাহরণ সৃষ্টির মতোশাস্তির ব্যবস্থা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করার মতো পানিশমেন্ট হবে। আমাদের চাকরির বিধানে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়ে গেছে। সেটিই হবে।

আমরা খুব দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারব। সেখানে কী ঘটেছে, কতটুকু অনৈতিকতাসেখানে হয়েছে, সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করেই তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেবে। আর তার ভিত্তিতেই সরকারব্যবস্থা নেবে।

বিষয়টি অনেকের দৃষ্টিগোচরহয়েছে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি অনৈতিক কর্মকাণ্ড। একজন ডিসি হিসেবে তার যে দায়দায়িত্ব আছে, সেখান থেকে সরে গিয়ে যে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা আমরা দেখেছি।

এটি আমাদের কাছে লিখিত এসেছে এবং আমরা খুব ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমরা তাকে ওএসডি করেছি। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আমরা সেটি করেছি আপাতত।

ডিসির বিশ্রাম কক্ষে ক্যামেরা গেল কীভাবে- এ প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে সিসিটিভি থাকার কথা না কোনোভাবে। কিন্তু তার কর্মকাণ্ড তো এটা হওয়ার কথা নয়, এটিই বড় কথা। সে কী ধরনের কর্মকাণ্ড করবে, তাদের কোড অব ম্যানার্স আছে, এথিকস আছে। সে অনুযায়ী কিন্তু আমাদের সরকারি কর্মকর্তাদের চলতে হয়।অনেক কর্মকর্তার জন্য ব্যক্তিগত বিশ্রাম কক্ষ থাকবে কিনা- সে বিষয়েও এখন সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে বলে মনে করছেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা সত্যিই আমাদের ব্যুরোক্রেসিতে যথেষ্ট পরিমাণে অস্বস্তি এনেছে।



শেয়ার করুন

0 facebook: