22 January 2018

বাংলাদেশীরা কেনো কমমূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট পাচ্ছেন না?

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গত ১০ বছরে ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথের মূল্য অনেক কমলেও জনসাধারণ এর সুফল পাচ্ছে না, কারন দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার দিনকেদিন বেড়েই চলেছে। 

২০০৯ সালে যেখানে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের মূল্য ছিল ২৭ হাজার টাকা, তা বর্তমানে ৬২৫ টাকায় নেমে এলেও গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের সেবার মানোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব পড়েনি গত বছর জুনে প্রকাশিত তথ্যানুসারে, সার্কভুক্ত দেশগুলোর জনসংখ্যার অনুপাতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ শীর্ষে অবস্থান করছেঅথচ সে অনুপাতে সেবার মান, আউটসোর্সিংসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে আমাদের আয় বৃদ্ধির কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি ইতিমধ্যে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের কার্যক্রম শুরু হয়েছেপ্রথমটির চেয়ে আটগুণ বেশি গতিসম্পন্ন ব্যান্ডউইথের পরও দেশে ইন্টারনেটের গতি বা সেবার মানবৃদ্ধির কোনো লক্ষণ নেই

এখনও নানা অজুহাতে ইন্টারনেটের মূল্য অপরিবর্তিত রাখার পক্ষেই কথা বলছেন ইন্টারনেট সেবাদাতারামোবাইল ফোন অপারেটরদের জন্য ফোর জি নীতিমালাও চূড়ান্ত হয়েছেতবুও ব্যবহারকারীদের আশ্বস্ত করার মতো কোনো সুসংবাদ নেই কিছুদিন আগে পত্রিকান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আমরা দেখেছি, প্রতি গিগাবাইট ইন্টারনেট ডাটা কিনতে সেলফোন অপারেটরদের ব্যয় গড়ে ২৬ পয়সা হলেও গ্রাহকের কাছে একই পরিমাণ ডাটা ২০০ টাকার বেশি দামে বিক্রি করছে অধিকাংশ অপারেটরতাছাড়া মেয়াদও বেঁধে দিচ্ছে তারাএটা স্পষ্টতই গ্রাহক ঠকানো ছাড়া কিছুই নয়এ ক্ষেত্রে অপারেটরের পাশাপাশি বিটিআরসির দায়ও কম নয়

আমরা ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে, এমনকি ভারতের তুলনায়ও এগিয়ে থাকার আত্মতুষ্টিতে ভুগছিঅথচ ভারত তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বছরে লাখ লাখ লোকের নতুন কর্মসংস্থান করছে কিন্তু আমাদের দেশে সবরকম সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আয় এখনও সন্তোষজনক নয়তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে আমাদের সরকারকিন্তু ডাটাভিত্তিক সেবা গ্রাহকদের জন্য ব্যয়সাশ্রয়ী যেমন নয়, তেমনি ধীরগতির কারণে সর্বোচ্চ সুফলও মিলছে নাএটা সার্বিকভাবে ডিজিটালাইজেশনের পথে অন্তরায় বলে আমরা মনে করি

এ পরিস্থিতিতে বছরের শুরুতে সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নতুন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বারদায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেছেন, ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি এবং মূল্যহ্রাসই তার প্রথম অগ্রাধিকারএটা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক আমরা দেখেছি, বেশ কয়েক বছর ধরেই তিনি ডাটাভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার অন্যায্য দাম নিয়ে মুখর ছিলেনদেশের গ্রামগঞ্জে ইন্টারনেটের যে করুণ অবস্থা, প্রতিনিয়ত সেটাও তুলে ধরেছেনএখন তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেনআমরা আশা করি, এবার পরিস্থিতি বদলাবে, আমরা কম মূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা পাব


শেয়ার করুন

0 facebook: