17 January 2019

নিচু জাতের হিন্দু বলে মুখ ফেরালেন হিন্দু প্রতিবেশিরা,সাইকেলে মায়ের মরদেহ নিয়ে সত্কারে ছেলে


আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ অনেক ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছিলেন সরোজতার পর থেকে মাকে ঘিরেই তাঁর পৃথিবীমা জানকীর হঠাত্ মৃত্যুতে তাই সরোজের পৃথিবী এলোমেলো হয়ে গিয়েছিলএত বড় ধা্কা সামলাতে সময় লেগেছিল তাঁরবাস্তব মেনে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। 

চাষবাস করে দিন গুজরান করা সরোজের হাতে টাকা ছিল নামায়ের সত্কারের টাকাটুকুও ছিল না কৃষক ছেলের হাতেতাই হাত পেতেছিলেন প্রতিবেশিদের হাতে'টা টাকা হাতে পেলে মায়ের সত্কার করতে পারেনকিন্তু হাত পাতাই সার হল! একজন প্রতিবেশিও সরোজের এমন দুঃসময়ে এগিয়ে এলেন নাদুঃসময়ের লড়াই তাঁকে একাই লড়তে হল

মা জানকী সিংহানিয়া বহু বছর ধরে সংসার চালাতেনছেলেকে একা হাতেই মানুষ করছিলেন তিনিসরোজ ও জানকী, এই দুজনেই ছিল আস্ত সংসারএদিন সকালে কুয়োয় জল তুলতে গিয়ে আচমকা অচৈতন্য হয়ে যান জানকীদেবীঘটনাস্থলেই মৃত্যু। 

ওড়িশার সুন্দরগড়ের ঘটনাখবরটা শুনে প্রথমে দিশেহারা হয়ে যান সরোজপ্রতিবেশিদের কাছে সাহায্যের আশায় বেরোন নাবালক সরোজকিন্তু পাড়ার 'নিচু' জাতের ছেলেকে এমন সময় সাহায্য করত চাননি কোনও প্রতিবেশিবাধ্য হয়ে মায়ের মরদেহ সে তুলে নেয় সাইকেলেপ্রায় চার-পাঁচ কিলোমিটার দূরের জঙ্গলে জানকীদেবীকে এভাবেই নিয়ে যায় তাঁর ছেলে সরোজপ্রতিবেশিরা হা করে দেখেনকিন্তু কেউ এগিয়ে আসেননিপথে অবশ্য অনেকে কৌতুল ভরে তাঁকে অনেক প্রশ্ন করেছেকিন্তু সাহায্য কেউ করেনিচোখের জল মুছতে মুছতে মায়ের দেহ সাইকেলে চাপিয়ে শ্মশানের উদ্দেশে হাঁটতে থাকে সরোজ 

বছর দুয়েক আগে দানা মাঝি নামে এক চাষীর মর্মস্পর্শী ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিলমৃত স্ত্রীর দেহ তাঁরই কাপড়ে মুড়ে দশ কিমি রাস্তা হেঁটেছিলেন তিনিপিছনে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটছিল তাঁর মেয়েএবার সরোজধর্ম-বর্ণ-জাত-পাতের নাগপাশ ছাড়িয়ে দেশ যে এখনও বেরোতে পারেনি, আরও একবার তা প্রমাণ হয়ে গেল


শেয়ার করুন

0 facebook: